|
কমলা দেবনাথ
প্রধান শিক্ষিকা |
|
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অন্যতম প্রাচীন জনপদ আড়বেলিয়া। ১৯৪৮ সালের ২৪ জানুয়ারি স্থানীয় কিছু শিক্ষানুরাগীর উদ্যোগ এবং স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছিল আড়বালিয়া বালিকা বিদ্যালয়। প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে পথ চলা শুরু হয়েছিল। ক্রমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জুনিয়র হাইস্কুল ও পরে হাইস্কুলে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে যেখানে বিদ্যালয়টি রয়েছে তার পুরনো ভবনটি দান করেছিলেন প্রয়াত কিশোরীমোহন ভট্টাচার্য। পরে তাঁর উৎসাহে বিদ্যালয়ের জন্য জমি দান করতে এগিয়ে আসেন অম্বা বসু ও দক্ষিণারঞ্জন মিত্র। প্রয়াত বঙ্কিম নাগ চৌধুরী ও সুশীলকুমার নাগচৌধুরী যথাক্রমে সম্পাদক ও সভাপতি হিসাবে বিদ্যালয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন। তাঁদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই বিদ্যালয় মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়। ১৯৯৮ সালে বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান পালন করা হয়। ২০০৮ সালে উদযাপিত হয় হীরকজয়ন্তী বর্ষ। বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বেশিরভাগই অত্যন্ত দরিদ্র এবং সংখ্যালঘু পরিবারের। শুধু লেখাপড়া নয়, ছাত্রীদের চারিত্রিক গঠন, মূল্যবোধ গড়ে তোলার উপরেও নজর থাকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। স্কুলে বেশ কিছু প্রতিবন্ধী ছাত্রীও রয়েছে। পড়াশোনার ক্ষেত্রে তারা যাতে কোনও অসুবিধায় না পড়েন সেদিকে সর্বদাই সচেষ্ট থাকেন শিক্ষিকারা। বিদ্যালয়ের কিছু সমস্যা অবশ্যই রয়েছে। যেমন মিড ডে মিল ছালু হলেও তার জন্য কোনও রান্নাঘর নেই বিদ্যালয়ে। ফলে ক্লাসঘরকেই সেই কাজে ব্যবহার করতে হয়। এতে সমস্যা হয় পড়ুয়াদের। বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটির আশু সংস্কার প্রয়োজন। ছাত্রীদের পড়াশোনার সুবিধার্থে আজও বিদ্যালয়ে কোনও লাইব্রেরির ব্যবস্থা করা যায়নি। নেই লাইব্রেরিয়ান। ছাত্রীদের প্রয়োজনের কথা ভেবে বিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষা চালু করার জন্য সর্বশিক্ষা দফতরের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিও মিলেছে। পুথিগত বিদ্যার পাশাপাশি পড়ুয়াদের মৌলিক চিন্তার বিকাশে বিদ্যালয়ের তরপে সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ (কোরক) করা হয়। এ ছাড়া শিক্ষমূলক ভ্রমণেও নিয়ে যাওয়া হয় পড়ুয়াদের। স্কুলের ছাত্রীরা যাতে একজন পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে উঠতে পারে সে জন্য বিদ্যায়ের শিক্ষিকারা সর্বদাই সচেষ্ট।
|
আমার চোখে
সাবানা হোসেন
ক্লাস টেন-এর ফার্স্ট গার্ল। |
|
|
শিক্ষা মানুষকে জগৎ ও জীবন সম্পর্কে বাস্তব দৃষ্টি দান করে ও বুদ্ধিকে প্রখর করে কর্মজীবনের উপযোগী করে তোলে। এই কাজে শিক্ষক-শিক্ষিকারাই আমাদের পত প্রদর্শক। এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সেই সহযোগিতা প্রথম থেকেই পেয়েছি আমি। তাঁদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ এবং সস্নেহ শাসনে আমরা প্রত্যেকে নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে পেরেছি। পড়াশোনা শিখে শুধু একজন চাকুরিজীবী নন, তাঁরা আমাদের পরিপূর্ণ মানুষ হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলতে সর্বদাই পরামর্শ দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন। স্কুলের অনেক সমস্যা রয়েছে, যেমন কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা এখনও চালু হয়নি। ছাত্রীদের জন্য নেই লাইব্রেরি। তবে সব সমস্যাকে সরিয়ে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শিক্ষাও পেয়েছি দিদিমণিদের কাছ থেকেই।
|