|
|
|
|
ছুটি দিয়ে বিতর্কে জামবনির হাইস্কুল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
এক সহ-শিক্ষিকার ছেলের অন্নপ্রাশনের নিমন্ত্রণ রক্ষার জন্য স্কুল বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের জামবনি ব্লকের ‘জামবনি বাণী বিদ্যাপীঠ’ হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অভিভাবক ও পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, কোনও কারণ ছাড়াই মঙ্গলবার স্কুলটি বন্ধ রাখা হয়। এ ব্যাপারে ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক)-এর কাছে অভিযোগও করেছেন অভিভাবকদের একাংশ।
জামবনির ওই মাধ্যমিক স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় পাঁচশো। শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন ১০ জন। এর মধ্যে ভূগোলের এক সহ-শিক্ষিকা অবশ্য এখন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। স্কুলেরই একটি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ওই শিক্ষিকার ছেলের অন্নপ্রাশন ছিল। এ দিন ঝাড়গ্রামে অন্নপ্রাশনের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যাওয়ার জন্যই স্কুল বন্ধ রাখা হয় বলে অভিযোগ। এ জন্য সোমবার স্কুলের প্রতিটি ক্লাসে নোটিস জারি করে ছাত্রছাত্রীদের জানানো হয়, মঙ্গলবার ‘অনিবার্য কারণবশত’ স্কুল ছুটি থাকবে। এ ভাবে স্কুল ছুটি দেওয়ার নৈতিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবক-ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। স্কুলটির পরিচালন কমিটি সিপিএম প্রভাবিত হওয়ায় আসরে নেমে পড়েছে তৃণমূলও। জামবনি ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সমীর ধল বলেন, “শিক্ষকেরা এমন অনৈতিক কাজ করলে তাঁদের কাছ থেকে পড়ুয়ারা কী শিখবে?” সমীরবাবুর দাবি, “এ দিন স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক শিবনাথ মিশ্র আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন, শিক্ষিকার ছেলের অন্নপ্রাশনে শিক্ষকেরা যাবেন বলেই স্কুলটি বন্ধ রাখা হয়েছে।”
তবে শিবনাথবাবুর বক্তব্য, “স্কুল ছুটি দিয়ে কে কোথায় যাবেন তা আমি কী করে জানব!” শিবনাথবাবুর দাবি, “এ দিন স্কুল ছুটি দেওয়ার ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক সোমবার আমার কাছে অনুমতি চান। আমি বলি আইন মেনে ছুটি নেওয়ার বিধান থাকলে নিতে পারেন। তখন প্রধান শিক্ষক আমাকে জানান, বাসন্তী-পুজো উপলক্ষে মঙ্গলবার স্কুল ছুটি রাখা হবে।” তবে মঙ্গলবারই যে ওই শিক্ষিকার ছেলের মুখেভাতের অনুষ্ঠান ছিল, তা স্বীকার করেছেন শিবনাথবাবু।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতাভ পাহাড়ির দাবি, “জামবনির ঘুটিয়ায় বাসন্তী-পুজো উপলক্ষে মেলা চলছে। সেই কারণেই মঙ্গলবার সংরক্ষিত ছুটি (রিজার্ভ হলিডে) দেওয়া হয়েছে।”
তা হলে নোটিসে কেন ‘অনিবার্য কারণে ছুটি’র কথা বলা হয়েছে? সদুত্তর দেননি প্রধান শিক্ষক ও স্কুল সম্পাদক।
অভিভাবক ও পড়ুয়াদের একাংশের বক্তব্য, জামবনি গ্রামে বাসন্তী-পুজো হয় না। ফলে, স্থানীয় অন্য স্কুলগুলিতে বাসন্তী-পুজো উপলক্ষে ছুটিও দেওয়া হয়নি (পুজোও আবার সোমবারই শেষ হয়ে গিয়েছে)। ঘুটিয়ায় যেখানে মেলা চলছে ওই এলাকাটি জামবনি থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে। ফলে মেলা উপলক্ষে ছুটির ‘যুক্তি’ও ধোপে টিকছে না।
ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শুকলাল হাঁসদা বলেন, “এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।” |
|
|
|
|
|