ইডেনে নাইট বনাম ডেয়ারডেভিলস যুদ্ধের বাকি এখনও আটচল্লিশ ঘণ্টা। কিন্তু তাতে কী? তার আগেই ‘অন্য’ যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল ইডেনে।
যার ভরকেন্দ্রে ইডেনের পিচ এবং প্র্যাক্টিস ব্যবস্থা। এবং যুযুধান দুই প্রতিপক্ষ দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ম্যানেজার আশিস কপূর ও ইডেনের পিচ কিউরেটর প্রবীর মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার যে দু’জনের মধ্যে তীব্র অশান্তি বেধে গেল দিল্লি প্র্যাক্টিসের সময়। কথা কাটাকাটি তো বটেই, ইডেন কিউরেটরকে গালিগালাজ করার অভিযোগও উঠল ভারতের প্রাক্তন স্পিনার আশিস কপূরের বিরুদ্ধে।
আর সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে, ইডেনের উইকেটকে ‘আন্ডার-প্রিপেয়ার্ড’ বলে দিল দিল্লি শিবির!
এ দিন প্র্যাক্টিসে ঢোকার পর থেকেই নানা রকম টালবাহানা চালু করে দেয় দিল্লি। ম্যানেজার আশিস কপূর বলতে থাকেন, “আমাদের ম্যাচ পিচে প্র্যাক্টিস করতে দিতে হবে।” সিএবি-র পক্ষ থেকে বলা হয়, সেটা সম্ভব নয়। পিচ দেখার পর বিতর্ক আরও চরমে ওঠে। দিল্লি ম্যানেজার চিৎকার করতে থাকেন, “উইকেট আন্ডারপ্রিপেয়ার্ড। অর্ধেক জায়গায় ঘাস উঠে গিয়েছে। ডাকুন আপনাদের কিউরেটরকে।” সঙ্গে কিউরেটরকে উদ্দেশ্য করে অশ্রাব্য গালিগালাজ। |
কিউরেটর আসার পর আরও একপ্রস্থ ঝামেলা বাঁধে। নেট থেকে বেরিয়ে তখন মাঠের মধ্যেই ছক্কা হাঁকানোর প্র্যাক্টিস করছিলেন মর্নি মর্কেল। যা ঢুকেই বন্ধ করে দেন প্রবীর। পরে বলছিলেন, “ওদের জন্য দু’টো প্র্যাক্টিস পিচ নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে। সেখানেই প্র্যাক্টিস করতে হবে।” আর এই যে ইডেন উইকেটকে ‘আন্ডারপ্রিপেয়ার্ড’ বলে দিলেন আশিস? এ বার কিউরেটরের ঝাঁঝালো উত্তর, “সেই কৈফিয়ত ম্যাচ রেফারি, আম্পায়ারদের দেব।” আর শুধু পিচ নয়। কেকেআরের মতো তাদেরও কেন ফ্লাডলাইটে প্র্যাক্টিসের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়েও বচসা বাধে। যা খবর, বুধবার প্র্যাক্টিসের সূচি বদলেছে দিল্লি। বিকেলের বদলে তারা মাঠে ঢুকবে সন্ধে নাগাদ। কেকেআরের মতো। ইডেন ছেড়ে বেরোনোর সময় দিল্লি ম্যানেজার বলে গেলেন, “গণ্ডগোল হয়েছে। কিন্তু কী হয়েছে বলা যাবে না।” তবে পিচ নিয়ে অল্পস্বল্প আতঙ্ক যে কেকেআর শিবিরেও নেই, এমন নয়। এ দিন সন্ধেয় তো সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার কাছে নাইট কর্তা ভেঙ্কি মাইসোর এবং কোচ ট্রেভর বেলিস এসে তদ্বির করে গেলেন পছন্দের পিচ দেওয়ার জন্য।
এক দিকে বাইশ গজের বাইরের যুদ্ধকে ঘিরে উত্তেজনা। অন্য দিকে বাইশ গজের ভিতরের যুদ্ধের আঁচও টের পাওয়া যাচ্ছে রীতিমতো। ইরফান পাঠানের কথাই ধরা যাক। বৃহস্পতিবার তিনি দিল্লির জার্সিতে থাকবেন। বড় ভাই ইউসুফ কেকেআরের। ইরফান বলছিলেন, “একেবারে শুরুতেই ওর মুখোমুখি পড়তে হবে ভাবিনি। গতকালই ওর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। বললাম, শেষ ওভারে তোমাদের দশ-পনেরো দরকার আর তোমাকে আমি বল করতে আসছি, এটা কখনওই চাই না। বল করতে গেলে তো আমি নার্ভাস হয়ে পড়ব।”
সব মিলিয়ে কী দাঁড়াল? বিতর্ক, রেষারেষি, বিশাল ছক্কায় মাঠ পার করে দেওয়া চরিত্রআইপিএল ফাইভের প্রথম বল পড়ার আগেই স-ও-ব মশলা মজুত ইডেনে। কিন্তু সে সব আর কতটা হৃদয় ছুঁতে পেরেছে কলকাতার? টিকিট তো মঙ্গলবার পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে মোটে ২৮ হাজার।
এই সংখ্যা দিয়ে আর কতগুলো চেয়ার ভরবে ইডেনের? হিসেবটা তো এক-তৃতীয়াংশের সামান্য যা বেশি! |