আগেও বহুবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রাণহানিও হয়েছে। কিন্তু টনক নড়েনি কারও। সোমবার কোনা মোড়ে পথ-দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যুর পরে গোটা এলাকা যে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল, তা দেখে এ বার হুঁশ ফিরল পুলিশের।
সোমবারের ঘটনার পরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের কোনা মোড়ে দুর্ঘটনা রুখতে একাধিক ছোট বাম্প বা ‘র্যাম্বল স্ট্রিপ’ তৈরির জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি ভিত্তিতে আবেদন জানাল হাওড়া সিটি পুলিশ। মঙ্গলবার ডিসি (ট্রাফিক) অখিলেশ চর্তুবেদী বলেন, “কোনা মোড়ে অনেকগুলি রাস্তা মেলায় ওই জায়গায় সিগন্যাল ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। তাই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে ছোট বাম্প তৈরির জন্য আবেদন করা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, হাওড়ার দিকে নামার সময়ে বিদ্যাসাগর সেতুতে একাধিক ছোট বাম্প তৈরির পরে দুর্ঘটনা কমেছে। এ ক্ষেত্রেও কমবে বলে আশা করা যায়।
মুম্বই হাইওয়ে সম্প্রসারিত হওয়ার পরে বেনারস রোড ও কোনা মোড়ে দুর্ঘটনা কার্যত নিত্যদিনের ব্যাপার। তাই স্থানীয়েরা দীর্ঘ দিন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও জেলা পুলিশের কাছে দুর্ঘটনা রুখতে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। স্থানীয় চামরাইল পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকেও সিগন্যাল ও পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশের দাবিতে জেলা প্রশাসনের কাছে দরবার করা হয়। |
কোনা মোড়ে এ ভাবেই পুড়ে গিয়েছে দোকানপাট। মঙ্গলবার ছবিটি তুলেছেন রণজিৎ নন্দী। |
এ দিন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান সুভাষ রায় বলেন, “আমরা ওই মোড়ে পথচারীদের নিরাপত্তার দাবিতে বহু বার মিছিল করে বিডিও-কে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত সিগন্যাল চালু হয়নি।”
সুভাষবাবু এই দাবি করলেও ডিসি (ট্রাফিক) বলেন, “কোনা মোড়ে প্রচুর গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। অনেকগুলি সমান্তরাল রাস্তা মিশেছে। প্রযুক্তিগত কারণেই সিগন্যাল চালু সম্ভব নয়। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ করলেই সমস্যা মিটবে।” জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “ডানকুনি থেকে খড়্গপুর পর্যন্ত জাতীয় সড়ক ছয় লেন তৈরি শুরু হয়েছে। তা করছে এক বেসরকারি সংস্থা। এ জন্য বিভিন্ন জায়গায় আন্ডারপাস ও সার্ভিস লেন হবে। হাওড়া পুলিশের প্রস্তাব পেলে ওই সংস্থার সঙ্গে কথা বলে কোনা মোড়ে র্যাম্বল স্ট্রিপ তৈরি করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।”
এ দিকে, সোমবার রাতে ঘাতক ট্রাক ও দোকানে আগুন ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার পরের দিন কোনা মোড় ও বেনারস রোড সংলগ্ন এলাকার পরিস্থিতি ছিল থমথমে। ওই ঘটনায় ধৃত ২৩ জনকে এ দিন হাওড়া আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের বেশির ভাগই দলের সক্রিয় কর্মী হওয়ায় তৃণমূলের দাবি, পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে দলের নিরীহ লোকেদের ধরে হয়রানি করছে। এ দিন ময়না-তদন্তের পরে দুর্ঘটনায় মৃত তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জয় ঘোষ ও তৃণমূলকর্মী রঞ্জন লস্করের মৃতদেহ তাঁদের বাড়ি হয়ে স্থানীয় খালিয়া মোড়ে আনা হয়। |