নিজস্ব সংবাদদাতা • বৈদ্যবাটি |
ব্যবসার নাম করে দীর্ঘদিন ধরে নানা ‘অনৈতিক’ কাজ চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। তদন্তে তা প্রমাণিত হওয়ায় বৈদ্যবাটির একটি বিলাসবহুল হোটেল বন্ধের নির্দেশ দিল হুগলি জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুরে জেলাশাসকের ওই লিখিত নির্দেশ হোটেল কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছে দেয় পুলিশ। শুধু নৈতিকতার প্রশ্নেই নয়, প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে লাইসেন্স নবীকরণ না করেই হোটেলটি চালানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ। কোনও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ওই হোটেল চালানোর পিছনে কারা কারা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈদ্যবাটির দীর্ঘাঙ্গি মোড়ের কাছে দিল্লি রোডের ধারে বেশ কয়েক বছর ধরে রমরমিয়ে চলছিল হোটেলটি। একই সঙ্গে চলত বার। অভিযোগ, খানাপিনার আড়ালে হোটেলের দোতলার ঘরে নানা কুকর্ম চলত। বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং অন্ধকার জগতের লোকজনের আনাগোনা ছিল ওই হোটেলে। |
সেই কারণে ওই হোটেল কর্তৃপক্ষকে ঘাঁটাতে কেউ সাহস করতেন না। মাস কয়েক আগে একটি নির্দিষ্ট সূত্রে খবর পেয়ে শ্রীরামপুর থানার আই সি তথাগত পাণ্ডে দলবল নিয়ে ওই হোটেলে হানা দেন। দোতলার ঘর থেকে আপত্তিজনক অবস্থায় তিন মহিলা-সমেত কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে হোটেল মালিকের ভাইও ছিলেন।
জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও হোটেল কর্তৃপক্ষ সতর্ক হওয়া তো দূরের কথা, তারপরেও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এই বিষয়টি পুলিশের তরফে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়। এর পরেই এ দিন জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন হোটেলটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। লিখিত নির্দেশে জেলাশাসক স্পষ্টই জানান, আইন না মেনেই সেখানে ব্যবসা চালানো হচ্ছিল। এই বিষয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে হলে তাঁরা জানান, প্রশাসন কেন এই চিঠি দিয়েছে, তা তাঁরা জানেন না। প্রশাসনের অন্য একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু ওই হোটিলটিই নয়, দিল্লি রোড, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ও জিটি রোডের উপর যে সমস্ত হোটেল এবং বার রয়েছে, তারা সরকারি নিয়মনীতি আদৌ মানছে কি না তা প্রশাসন খতিয়ে দেখছে। সেই সঙ্গে হোটেলগুলির লাইসেন্স আছে কি না, থাকলেও তা নবীকরণ করা হয়েছে কি না, সেই ব্যাপারে পুলিশ-প্রশাসনের তরফ থেকে কড়া নজরদারি রাখা হবে। সম্প্রতি কলকাতায় পার্ক স্ট্রিট এবং রাজ্যের অন্যান্য কয়েকটি জায়গায় মহিলাদের উপর অপরাধ যে মাত্রায় বেড়েছে, তার প্রেক্ষিতে হুগলিতে যাতে ওই ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে চাইছে প্রশাসন। |