সারান্ডার পর লাতেহার
মাওবাদী-গ্রামবাসী সম্পর্ক ছিন্ন করতে হাতিয়ার ‘উন্নয়ন’
বিপথগামীদের সমাজের মূল-স্রোতে ফেরাতে উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞেই ভরসা রাখছে ঝাড়খণ্ড প্রশাসন। সে কারণেই সারান্ডার পর কেন্দ্রীয় সহযোগিতায় রাজ্যে মাওবাদীদের আর এক আঁতুরঘর, লাতেহারকে এ বার আনা হচ্ছে ‘গুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্প’-এর আওতায়।
প্রশাসনিক কর্তাদের মতে, এই গুচ্ছ প্রকল্প বহুমুখী উদ্দেশ্যসাধক কর্মসূচি। উন্নয়নে গ্রামের সার্বিক ছবির পরিবর্তন ঘটবে। যার সুফল পৌঁছবে সর্বস্তরের মানুষের কাছে। প্রকল্প রূপায়ণের মধ্য দিয়ে বাড়বে গ্রামের মানুষের কর্ম সংস্থানের সুযোগও। একই সঙ্গে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থায় মিলবে দারিদ্র দূরীকরণের দিশা। পাশাপাশি অনুন্নয়ন আর বঞ্চনার স্লোগান তুলে সমাজের মূলস্রোত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা বন্ধ হবে বলেও মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা। ঝাড়খণ্ডের উগ্রপন্থী রাজনীতির অন্যতম আঁতুরঘর লাতেহার জেলা। এখানকার মাওবাদী প্রভাবিত অনেক গ্রামে উন্নয়নমূলক কাজ জঙ্গি হামলার কারণে মাঝ পথে বন্ধ করে দিতে হয়েছে বলে প্রশাসনের আক্ষেপ। তাঁদের বক্তব্য, এখনও লাতেহারের বেশ কিছু এলাকা মাওবাদীদের মুক্তাঞ্চল।
সম্প্রতি লাতেহার জেলার ১২ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬৫ টি গ্রামকে নিয়ে একটি সার্বিক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। জেলার ডেপুটি কমিশনার রাহুলকুমার পুরওয়ার জানিয়েছেন, জেলার পিছিয়ে থাকা গ্রাম সরযুর নামের সঙ্গে মিলিয়ে ওই উন্নয়ন কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সরযু ডেভেলপমেন্ট অ্যাকশন প্ল্যান’ (এসডিএপি)। ডেপুটি কমিশনার জানিয়েছেন, প্রথম দফায় এই উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে জেলার ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে। ওই ১২ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্ভুক্ত সমস্ত এলাকা জুড়ে চলবে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম। এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য প্রকল্প তৈরির কাজও হাতে নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, জেলায় কৃষির অগ্রগতি ঘটাতে হাতে নেওয়া হয়েছে একাধিক সেচপ্রকল্পও। গ্রামোন্নয়নের ক্ষেত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। জেলা সদরের সঙ্গে প্রতিটি ব্লক, এমনকী গ্রাম পঞ্চায়েতের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার রূপরেখাও প্রস্তুত বলে ডিসি জানান। এখন শুধু কাজ শুরুর অপেক্ষা।
লাতেহারের ‘সরযু ডেভেলপমেন্ট অ্যাকশন প্ল্যান’-এর মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক কমর্সূচিও। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, মাতৃসদনের সুবিধা এবং উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা-সহ স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। তৈরি হবে স্কুলভবন। গরিব পরিবারের জন্য ইন্দিরা আবাস যোজনায় সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি গৃহ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে লাতেহারে। সরকারি সূত্রের খবর, মাওবাদী প্রভাবিত লাতেহারের এই গুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব বেসরকারি কোনও ঠিকাদারের হাতে একক ভাবে ছাড়া হবে না। উন্নয়ন প্রকল্পের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং এলাকার সর্বস্তরের মানুষকে সক্রিয় ভাবে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.