হেরম্বচন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত |
নির্দেশ অমান্য করে ভোটের বিজ্ঞপ্তি, তলব অধ্যক্ষকে |
শিক্ষা ক্ষেত্রে লাগাতার হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের ভোট পরিচালনার দায়িত্ব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারকে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশ সত্ত্বেও ছাত্রভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করায় হেরম্বচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষকে হাইকোর্টে তলব করা হয়েছে। একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আগেই ওই কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন এক দফা স্থগিত করে দিয়েছিল। অধ্যক্ষকে তলবের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলবার হেরম্বচন্দ্রে ছাত্রভোট অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত রাখারও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
কাল, বৃহস্পতিবার হেরম্বচন্দ্র কলেজে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। বিচারপতি তপেন সেন এ দিনের নির্দেশে বলেছেন, আদালতে হাজির হয়ে ওই কলেজের অধ্যক্ষকে জানাতে হবে, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে তিনি কেন ছাত্রভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন। আদালত অবমাননার দায়ে কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে তা-ও জানাতে হবে অধ্যক্ষকে। মুখ্য নির্বাচনী অফিসারকে ছাত্রভোট পরিচালনার ভার দিয়েছিলেন বিচারপতি সেনই।
এসএফআই-সমর্থকদের হেরম্বচন্দ্র কলেজে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে আগেই হাইকোর্টে একটি মামলা করা হয়েছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে ওই কলেজের নির্বাচন স্থগিত রাখার রায় দিয়েছিল আদালত। সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কলেজের এক দল ছাত্র। এ দিন সেই আবেদনেরই শুনানি ছিল। শুনানির শুরুতেই আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, বিচারপতি তপেন সেন গত ৭ মার্চ রায় দিয়ে জানিয়েছিলেন, কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের তত্ত্বাবধানেই করতে হবে। অথচ সেই রায় ‘অগ্রাহ্য’ করে ১০ মার্চ হেরম্বচন্দ্র কলেজে নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এ ভাবে বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে আদালত অবমাননা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সুব্রতবাবু।
এর পরেই বিচারপতি জানিয়ে দেন, ওই কলেজের নির্বাচন অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করা হল। আগামী ১৭ এপ্রিল কলেজের অধ্যক্ষ প্রশান্ত শর্মাকে আদালতে হাজির হয়ে জানাতে হবে, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন। তিনি যে আদালত অবমাননা করেননি, সেই প্রমাণও দিতে হবে অধ্যক্ষকে।
অধ্যক্ষ পরে বলেন, “বিভিন্ন সূত্র থেকে হাইকোর্টের এ দিনের নির্দেশের কথা জানতে পেরেছি। তবে রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাইনি। তাই এই বিষয়ে মন্তব্য করব না।” কলেজ সূত্রের খবর, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অন্যান্য কর্তা, কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম এবং রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে ভোটের দিন স্থির করা হয়েছিল। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে ভোট করার খবর সংবাদমাধ্যমে দেখলেও বিশ্ববিদ্যালয় এ ব্যাপারে কোনও নির্দেশ না-দেওয়ায় তাঁরা নির্বাচন স্থগিত রাখেননি বলে কলেজ-কর্তৃপক্ষ এ দিন জানান। |