বিভ্রাটের কারণ নিয়ে দ্বিমত
অনুষ্ঠানের মধ্যেই আলো নিভল নেতাজি ইন্ডোরে
ঞ্চে বসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে রেলমন্ত্রী মুকুল রায়, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বক্তৃতা করছিলেন উত্তর দিনাজপুরের এক ইমাম। হঠাৎই ঝুপ করে অন্ধকার হয়ে গেল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম।
মঙ্গলবার বিকেল তখন সাড়ে চারটে। ইমামদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এক সরকারি অনুষ্ঠানে স্টেডিয়ামের দর্শকাসন কানায় কানায় ভর্তি। স্টেডিয়ামের মেঝেতেও অসংখ্য লোক। সেই অবস্থাতেই মিনিট খানেক বিদ্যুৎহীন ঘুটঘুটে অন্ধকারে কাটাল নেতাজি ইন্ডোর।
সম্মেলনে উপস্থিত আলোকচিত্রীরা ক্যামেরার ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে কিছুটা আলো আনার চেষ্টা করছিলেন। কেউ কেউ মোবাইল ফোনের আলো জ্বালিয়ে দেন। মিনিট খানেক পরে প্রেক্ষাগৃহের মাঝখানের ছ’টি ইমার্জেন্সি আলো জ্বলে ওঠে। তাতেই খানিক ‘স্বস্তি’ ফিরে আসে মঞ্চের মন্ত্রী-আমলাদের। এর পরেই আলো জ্বলে ওঠে গ্যালারির সিঁড়িতে। মাইক্রোফোন ‘সচল’ থাকায় আবার বলতে শুরু করেন ওই ইমাম। মিনিট দশেকের মধ্যে স্টেডিয়ামের সব আলো ফিরে আসে।
কেন এই বিদ্যুৎ বিভ্রাট?
সিইএসসির তরফে ইন্ডোরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটেনি বলে জানানো হয়েছে। সিইএসসির এক কর্তার বক্তব্য, ইন্ডোরের অভ্যন্তরীণ কোনও ত্রুটির কারণে ওই বিভ্রাট হতে পারে। যদিও ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রর বক্তব্য একেবারেই বিপরীত। তাঁর বক্তব্য, “বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য স্টেডিয়ামের পূর্ত দফতরের প্রাথমিক ভাবে কোনও গাফিলতি নেই। তবুও এই ব্যাপারে আমি পূর্ত দফতরকে পূর্ণাঙ্গ রির্পোট দিতে বলেছি। জরুরি আলোর ব্যবস্থা থাকায় স্টেডিয়ামে এক মিনিটও অন্ধকার ছিল না।”
অনুষ্ঠান চলাকালীন বিদ্যুৎ বিভ্রাট। প্রায় অন্ধকার মঞ্চে অন্য মন্ত্রীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। — নিজস্ব চিত্র
যখন স্টেডিয়ামে আলো নিভে গিয়েছিল, মদনবাবু তখন ছিলেন ইন্ডোরে তাঁর দফতরে। আলো নেভার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি স্টেডিয়ামের দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (ইলেকট্রিক্যাল) অরুণ কুমার ভদ্রকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ জানতে মদনবাবুকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী (তাঁর অনুষ্ঠান চলাকালীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের জন্য ঘনিষ্ঠ মহলে মুখ্যমন্ত্রী ‘বিরক্তি’ প্রকাশ করেছেন) এবং মুকুলবাবু। কারণটা বুঝতে না পেরে মদনবাবু রওনা দেন সিইএসসির সদর দফতর ভিক্টোরিয়া হাউসের পথে। মাঝপথে (ততক্ষণে ইন্ডোরে আলো ফিরে এসেছে) তাঁকে পূর্ত দফতরের সচিব অজিতরঞ্জন বর্ধন জানান, শুধু ইন্ডোর নয়, মহাকরণ, নব মহাকরণ সর্বত্রই একই সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছে। মদনবাবু তখন দ্রুত স্টেডিয়ামে ফিরে আসেন।
ইন্ডোর ছাড়াও অন্যত্র একই সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়ে থাকলে সিইএসসির দেওয়া ব্যাখ্যা যে ‘সঠিক’ কি না, তা নিয়ে ‘গুঞ্জন’ শুরু হয় ইন্ডোরে উপস্থিত বিভিন্ন মন্ত্রীদের মধ্যে। পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনার পরে ইন্ডোরে নিজের দফতরে বসে মদনবাবুও বলেন, “সিইএসসি-র ট্রান্সমিশন লাইনে ‘ট্রিপ’ হয়েছে বলে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন।’’
দ্রুত আলোর ব্যবস্থা করতে গিয়ে ছুটোছুটিতে লোহার রেলিংয়ে ধাক্কা লেগে ক্রীড়ামন্ত্রীর পায়ে আঘাত লাগে। মদনবাবুর পাশে বসেই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও খোঁজ নিয়ে বলেন, “মাঝেরহাট ও বজবজের মাঝখানে এক জায়গায় সিইএসসির ট্রান্সমিশন লাইন ট্রিপ করেছে বলে শুনছি।” ইন্ডোরে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট হলে জরুরি পরিস্থিতিতে আলোর ব্যবস্থা যে রাখা রয়েছে, তার উল্লেখ করতে গিয়ে মদনবাবু বলেন, “স্টেডিয়ামের ছ’টি বড় মেটাল আলো ঠান্ডা করে রাখা ছিল। এ ছাড়া, নেজাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সিঁড়িতে ইমার্জেন্সির সংযোগ ছিল। তাই সঙ্গে সঙ্গেই আলো জ্বালানো গিয়েছে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.