অচলাবস্থা কবে কাটবে, সিদ্ধান্ত হল না এখনও |
ট্যাক্সিতে প্রিন্টার ও ডিজিটাল মিটার বসানো নিয়ে মঙ্গলবারও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারল না রাজ্য সরকার। যে সব ট্যাক্সি-মালিক এখনও ডিজিটাল মিটারের আবেদন করেননি, কবে থেকে কোন শর্তে তাঁরা আবেদন করতে পারবেন, এ দিন সরকারের তা জানানোর কথা ছিল। এ দিকে, ট্যাক্সির ব্যাপারে রাজ্য সরকারের ‘সার্বিক ভূমিকা’র প্রতিবাদে আগামী ১৯ এপ্রিল ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে ট্যাক্সি-মালিকদের সংগঠন।
৩১ মার্চের মধ্যে প্রিন্টার ও ডিজিটাল মিটারের আবেদন না করায় বসে গিয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ট্যাক্সি। রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে সময়সীমা বাড়ানোর যে আবেদন করেছিল, সোমবার তা খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র ওই দিন জানিয়েছিলেন, সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।
সরকার এ ব্যাপারে কোনও ঘোষণা করে উঠতে পারল না কেন? মঙ্গলবার পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “বিভিন্ন স্তরে আলোচনা হয়েছে। যাঁরা প্রিন্টার ও ডিজিটাল মিটারের আবেদন করেননি, কী ভাবে তাঁরা করবেন, এক-দু’দিনের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে।” এ দিন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্রের সঙ্গে পরিবহণসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকা এবং সরকারি আইনজীবী পন্টু দেবরায় এ বিষয়ে কথা বলেন। পরিবহণ দফতরের এক অফিসার জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে জরিমানা নিয়ে ফের প্রিন্টার ও ডিজিটাল মিটারের আবেদন নেওয়া হবে।
এ দিকে, ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’ এবং ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যাক্সি ড্রাইভার্স ওয়েলফেয়ার ইউনিয়ন’ এই দুই সংগঠনের কর্তা বিমল গুহ ১৯ এপ্রিল ধর্মঘট ডাকার কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, “ধর্মঘট এখনও ডাকা যেত। কিন্তু পয়লা বৈশাখ আর পরীক্ষার কথা ভেবে ক’দিন বাদে ডাকা হচ্ছে। সরকার কথা না শুনলে ১৫ দিন বাদে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘট করা হবে। তাতেও কাজ না-হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্যাক্সি তুলে নেব।” তিনি জানান, তাঁদের সমস্যা নিয়ে রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী এবং পরিবহণমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হবে। বিমলবাবুর অভিযোগ, চালক-মালিকদের সমস্যা মেটাতে পরিবহণমন্ত্রী কিছুই করছেন না। মন্ত্রী ফেব্রুয়ারি মাসে বলেছিলেন, ট্যাক্সিতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার সরকারি অনুমতি দেওয়া হবে। কমানো হবে ‘পুলিশি জুলুম’। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।
ট্যাক্সির চালক-মালিকদের অভিযোগ, পুনর্নবীকরণের ক্ষেত্রে ডাকযোগে লাইসেন্স পাঠানো হচ্ছে বলে অধিকাংশ চালকই সময় মতো লাইসেন্স হাতে পাচ্ছেন না। তাঁদের অনেকেরই লাইসেন্সে দেশের বাড়ির ঠিকানা রয়েছে। অনেকের আবার ঠিকানা নেই, তাঁরা ট্যাক্সিতেই ঘুমোন। লাইসেন্স হাতে না-থাকায় তাঁদের দেড়-দু’হাজার টাকা জরিমানা দিতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে চালক-মালিকেরা ভাড়া বাড়ানোর জন্য আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন। প্রথমে ৩০ টাকা করে, পরে প্রতি ২০০ মিটারে আড়াই টাকা করে ভাড়া বাড়ানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা। পুলিশি জুলুমের অভিযোগ প্রসঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের এক পদস্থ অফিসার বলেন, পথ-বিধি ভাঙা ছাড়াও ট্যাক্সিতে রিসোল টায়ার ব্যবহার, চার জনের বেশি যাত্রী নেওয়া প্রভৃতি কারণে অনেককে জরিমানা করা হচ্ছে। |