বকেয়া না-মেলায় ক্ষুব্ধ হিমুল কর্মীরা
দুধের উৎপাদন বেড়েছে। এতটাই যে বাজারে বেসরকারি সংস্থাগুলির দুধের জোগান কমাতে হয়েছে। নতুন করে শুরু হয়েছে পনির, ঘি, লস্যি, তৈরি। ভেঙে পড়া সমবায় সমিতিগুলি নতুন করে পুনর্গঠন শুরু হয়েছে। অথচ যাঁদের হাত ধরে হিমুলের এই উত্থান শুরু হয়েছে সেই কর্মীরাই মার্চের প্রাপ্য ‘ইনক্রিমেন্ট’ পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকী, গত ডিসেম্বর মাসে ৫ কর্মী অবসর নিলেও প্রাপ্য পাননি বলে অভিযোগ। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কর্মী মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুব্ধ হিমুলের সিটু, আইএনটিইউসি এবং আইএনটিটিইউসি ইউনিয়নের কর্মীরাও। হিমুলের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক রজত সাইনিও সে কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি বলেন, “একটি রুগ্ণ সংস্থাকে নিজের পায়ে দাঁড় করাতে গেলে কর্মীদের এটুকু ধৈর্য্য দেখাতেই হবে। যত দ্রুত সম্ভব কর্মীদের প্রাপ্য বকেয়া মেটানো হবে। তার আগে হিমুলকে বাঁচানো জরুরি।”
১৯৭৬ সালে তৈরি এই দুগ্ধ উৎপাদন সমবায় সংস্থাটি নানা ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়েই চলছে। একসময়ে দার্জিলিং পাহাড় থেকে দুধ সংগ্রহ করে চলত সংস্থাটি। কিন্তু সরকারি এই সংস্থাটির দুধের গুণমানের কারণেই দ্রুত এটি শিলিগুড়ির বাসিন্দাদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পরে পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে হিমূলেও নানা সমস্যা তৈরি হয়। কর্মীদের বেতন বকেয়া হয়ে যায়। দুধ সরবরাহকারী সমবায়গুলি বকেয়া না-পেয়ে সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। কখনও বিহার, কখনও নদিয়া থেকে গুঁড়ো দুধ সংগ্রহ করে হিমুলকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা হয়। দুধ বিক্রি করে কর্মীদের বেতন মেটাতে গিয়ে বাজারে নতুন করে বকেয়া হয়ে যায়। হিমুলকে বাঁচাতে রাজ্য সরকার বেশ কিছু কর্মীকে সরিয়ে নেন। বন্ধ হয়ে যায় হিমুলের গোখাদ্য তৈরির কারখানা। হিমুলের এই পরিস্থিতির জন্য কর্মী এবং আধিকারিকদের একাংশ পরস্পরকে দায়ী করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার প্রায় ৮ কোটি টাকা ঢেলে হিমুলকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলাশাসক রজত সাইনিকে ডিসেম্বর মাসে হিমুলের অতিরিক্ত মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক পদে নিয়োগ করা হয়। তিন মাসেই হিমুলের চেহারা অনেকটাই বদলে গিয়েছে। এখন হিমুলে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৭ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে। তার বাইরে প্রতি দিন ২৫০ কেজি পনির, এক হাজার লিটার লস্যি, ১০০ কেজি করে ঘি তৈরি হচ্ছে। পেট্রোল চালিত বয়লারে দুধ তৈরির ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ধানের তুষে চলবে এমন নতুন একটি বয়লার বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। এর ফলে প্রতি লিটার দুধের উৎপদন ব্যয় ৬০ পয়সা থেকে ৮ পয়সায় নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য দুধের উৎপাদন ৫০ হাজার লিটারে পৌঁছে দেওয়া। এ জন্য পাহাড়ের সমস্ত সমবায়গুলিকে চাঙা করার চেষ্টা হচ্ছে। পাশাপাশি, টেট্রা প্যাক তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। তাতে শিলিগুড়ি লাগোয়া এলাকার বাজার ধরতে সুবিধা হবে।”
কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সমস্ত ইউনিয়নই। পাশাপাশি, কর্মীদের দাবি-দাওয়া নিয়েও ভাবা হোক বলে জানিয়েছেন তাঁরা। সিটুর ডেয়ারি মজদুর ইউনিয়নের সম্পাদক বিজয় প্রধান বলেন, “হিমুল না-বাঁচলে আমরা বাঁচব না। কিন্তু আমরা না-বাঁচলে কী হিমুল বাঁচবে। কর্তৃপক্ষের সেটাও বোঝা উচিত।” আইএনটিটিইউসি’র হিমুল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সহকারী সম্পাদক পূর্ণ দর্জি বলেন, “আমরা কর্তৃপক্ষের উপরে ভরসা রাখতে চাই। তবে কর্মীদের ইনক্রিমেন্ট এবং অবসর নেওয়া কর্মীদের বকেয়া মেটানো হোক, এই দাবি জানিয়েছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.