শেষ পর্যন্ত বিজয় মাল্যের শর্তেই রাজি হয়ে গেলেন কর্মীরা। সেই শর্ত অনুযায়ী, আজ বুধবার রাতের মধ্যে কিংফিশার কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পড়ে যাবে বকেয়া এক মাসের বেতন। কর্মীদের দাবি ছিল, দু’মাসের বেতন। কিন্তু, শুধুমাত্র ডিসেম্বরের বকেয়া বেতনই দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন মাল্য। পাইলট এবং ইঞ্জিনিয়াররা সেই বেতন পাবেন ১০ এপ্রিলের মধ্যে।
দিন দুয়েক আগে এ কথাই ই-মেল করে কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছিলেন মাল্য। কিন্তু, কর্মীরা বেঁকে বসেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এর আগেও এ রকম আশ্বাস দিয়ে কথা রাখেননি মাল্য। তাই, মঙ্গলবার রাত আটটার মধ্যে দু’মাসের বকেয়া বেতন না পেলে ধর্মঘটে নামবেন তাঁরা। প্রমাদ গোনেন সংস্থাটির কর্তারা। এমনিতেই কিংফিশারের উপরে কড়া নজর রেখেছে বিমান মন্ত্রক। দেশের মধ্যে দৈনিক উড়ান ৪০০ থেকে কমে ১০০তে ঠেকেছে। এর মধ্যে কর্মীরা ধর্মঘটে গেলে কিংফিশারের লাইসেন্স সাময়িক ভাবে বাতিল হওয়ারও সম্ভাবনা ছিল। এ কথা অনুধাবন করে সোমবার রাতেই মুম্বইয়ে নিজের বাড়িতে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মাল্য।
সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার ভোর চারটে পর্যন্ত কর্মীদের আট প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক চলে। চলে চাপান-উতোরও। লাইসেন্স বাতিল হওয়ার কথা কর্মীদেরও জানান মাল্য। জানতে চান, এত দিন ধরে যে কর্মীরা লড়াই চালালেন, তাঁরা কেন আর কয়েক দিন অপেক্ষা করতে পারছেন না?
দীর্ঘ টানাপোড়েনের শেষে মাল্যর অনুরোধ মেনে নেন কর্মী প্রতিনিধিরা। সংস্থা সূত্রে খবর, সারা দেশে কিংফিশারের প্রায় ৫০০০ কর্মী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পাইলটের সংখ্যা ৩৫০, ইঞ্জিনিয়ার প্রায় ৫০০। এই দুই বিভাগের কর্মীরাই সব চেয়ে বেশি বেতন পান। তাই, পাইলট-ইঞ্জিনিয়ারদের বকেয়া বেতন দিতে কিছুটা সময় চেয়ে নেন মাল্য। তিনি বৈঠকে প্রতিশ্রুতি দেন, জানুয়ারির বকেয়া বেতনও এপ্রিলের শেষ দিকে মিটিয়ে দেওয়া হবে।
কর্মীদের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি বিজয় মাল্যর হাতে নতুন করে টাকা এসেছে?
ই-মেল-এ মাল্য লিখেছিলেন, অর্থ মন্ত্রক যে ৪০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে রেখেছিল, ৬৪ কোটি টাকা দিয়ে তিনি সেগুলি আবার খুলিয়েছেন। কর্মীদের একাংশের মতে, সবাইকে এক মাসের বেতন দেওয়ার মতো টাকা সেই অ্যাকাউন্টে থাকার কথা নয়। সে ক্ষেত্রে নিজেরই অন্য ব্যবসা থেকে মাল্য কিংফিশারে টাকা ঢালছেন বলে কর্মীদের একাংশের ধারণা। আজ, বুধবার থেকে আইপিএল শুরু হচ্ছে। তাঁর দল ‘বেঙ্গালুরু চ্যালেঞ্জার্স’-ও খেলছে সেখানে। এ জন্য দেশের নানা শহর ঘুরে বেড়াতে হবে মাল্যকে। প্রতিটি বিমানবন্দরেই থাকবেন বেতন না পাওয়া কিংফিশারের কর্মীরা। তাঁদের কাছে মুখরক্ষার তাগিদেই ঠিক আইপিএল শুরুর আগে বকেয়া এক মাসের বেতন তিনি মিটিয়ে দিচ্ছেন বলে মনে করেছেন অনেকে। |