উৎপাদন শিল্পে দু’টি প্রকল্প মিলিয়ে প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা লগ্নি পেতে চলেছে রাজ্য। সরকারি সূত্রে খবর, চলতি মাসেই প্রস্তাবিত লগ্নিতে পাকা শিলমোহর পড়তে চলেছে।
এর মধ্যে প্রায় ২৫০০ কোটি টাকার লগ্নি আসছে রিষড়ার হিন্দুস্থান ন্যাশনাল গ্লাসের হাত ধরে। বাকি ৫০০ কোটি টাকা লগ্নির প্রস্তাব এসেছে অনিল অম্বানী গোষ্ঠীর রিলায়্যান্স সিমেন্টের কাছ থেকে। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুুরে কারখানা গড়ে উঠলে সেখানে বছরে ৩ কোটি টন সিমেন্ট উৎপাদন করতে চায় তারা।
হিন্দুস্তান ন্যাশনাল গ্লাসের শিকড় এ রাজ্যেই। ১৯৫২ সালে রিষড়াতে তৈরি হয় কাচ তৈরির জন্য দেশের প্রথম সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় এই কারখানা। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, চলতি মাসেই সংস্থার সঙ্গে চুক্তি সই করবে সরকার। তাঁর দাবি, উৎপাদন শিল্পে লগ্নির অর্থ কর্মসংস্থান। যা এই মূহূর্তে শিল্পোন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের প্রধান লক্ষ্য।
বিভিন্ন ধরনের কাচ তৈরির বাজারের ৫৫% হিন্দুস্থান ন্যাশনাল গ্লাসের দখলে রয়েছে। ২০১১-’১২ আর্থিক বছরে মোট উৎপাদন এক কোটি দু’ লক্ষ টন। এই উৎপাদন বাড়াতে আগামী পাঁচ বছরে ৫০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থার। এর মধ্যে রাজস্থানের নিমরানায় কারখানা সম্প্রসারণ খাতে ২৫০০ কোটি টাকা ঢালছে তারা। পর্যায়ক্রমে এই লগ্নি করবে সংস্থা। ৫০০ একর জমি জুড়ে এই প্রকল্পের ধাঁচেই এ রাজ্যের কারখানাটি গড়তে আগ্রহী তারা। বাকি ২৫০০ কোটি টাকা সংস্থা সেই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। তবে সংস্থার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মুখ খোলেননি কেউ।
বর্তমানে রিষড়া ছাড়াও হরিয়ানার বাহাদুরগড়, উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশ, রাজস্থানের নিমরানা ও মহারাষ্ট্রের নাসিকে সংস্থার কারখানা রয়েছে। এ ছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশে একটি কারখানা তৈরি হচ্ছে।
স্থানীয় সংস্থার পাশাপাশি লগ্নির প্রস্তাব দিয়েছে অনিল অম্বানি গোষ্ঠীর সংস্থা রিলায়্যান্স সিমেন্ট। ২০০৭ সালে তৈরি এই সংস্থার লক্ষ্য পাঁচ বছরে দেশের প্রথম চার সিমেন্ট সংস্থার অন্যতম হয়ে ওঠা। সেই সূত্রেই পূর্বাঞ্চলের দিকে নজর দিচ্ছে তারা। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে কারখানা তৈরির প্রস্তাব গত বছরের শেষেই রাজ্যকে দিয়েছে তারা। প্রস্তাবিত কারখানায় বার্ষিক ৩ কোটি টন সিমেন্ট উৎপাদন করতে চায় সংস্থা। লগ্নির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা।
বর্তমানে সংস্থার দু’টি কারখানা তৈরি হচ্ছে। একটি মহারাষ্ট্রে। অন্যটি মধ্যপ্রদেশে। এই দু’টি প্রকল্প মিলিয়ে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বছরে এক কোটি টন সিমেন্ট। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রের প্রকল্প আংশিক ভাবে চলতি বছরেই চালু হয়ে যাবে। ভবিষ্যতে সংস্থার লক্ষ্য বছরে ৫০ কোটি টন সিমেন্ট উৎপাদন করা। |