মার্কিন স্কুলে ছাত্রের গুলি, ভারতীয়-সহ নিহত সাত
সোমবার সকাল দশটা তেত্রিশ। থানায় ফোন ধরলেন কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার। ওপাশ থেকে ভেসে এল এক মহিলার আর্তনাদ। ওইকোস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ধর্মীয় কলেজে এক আততায়ীর এলোপাথাড়ি গুলিতে আহত হয়েছেন ওই মহিলা এবং তখনও সেই আততায়ী চালিয়ে যাচ্ছে গুলি। প্রাণ বাঁচাতে থানায় ফোন করেছেন ওই মহিলা। পুলিশ কলেজ চত্বরে পৌঁছনোর আগেই আততায়ীর গুলিতে মারা যান পাঁচ জন। পরে আরও দু’ জনের মৃত্যু হয়।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন সিকিমের বাসিন্দা শেরিং রিনজিং ভুটিয়া(৩৮) নামে এক যুবক। তিনি ওই কলেজটিতে নার্সিং নিয়ে পড়াশুনা করছিলেন। আহতদের মধ্যেও রয়েছেন এক ভারতীয়। দাবিন্দার কৌর নামে সেই মহিলা এক বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন। কনুইয়ে গুলি লাগায় আপাতত তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওইকোসে হত্যাকাণ্ডের পরে দেহ সরাচ্ছে পুলিশ। ছবি: এপি।
টানা কয়েক মিনিট গুলি চালিয়ে ফেরার হয়ে যায় আততায়ী। শেষে, প্রায় এক ঘণ্টা পরে তাকে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরের একটি সুপারমার্কেট থেকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আততায়ীটির নাম ওয়ান গোহ(৪৩)। সে ওই কলেজেরই ছাত্র। দিন কয়েক আগেই কলেজ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। পুলিশ আরও জানিয়েছে, কলেজের একটি একতলা বাড়িতে ঢুকে প্রথমে এক জন রিসেপশনিস্টকে বন্দি বানায় সে। তার পর কলেজের প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা এক মহিলা অফিসারকে পাগলের মত খুঁজতে শুরু করে। এ সময়েই একটি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়ে পড়ুয়াদের ওপর গুলি ছুঁড়তে শুরু করে গোহ। আশপাশের বেশ কয়েকটি শ্রেণিকক্ষেও গুলি চালায় সে। পালানোর চেষ্টা করতে থাকে পড়ুয়ারা। আহতদের মধ্যে পরে দু’জন মারা যান। ঘটনার পরে এক আহতের গাড়িতেই পালানোর চেষ্টা করে গোহ।
ওকল্যান্ড পুলিশ প্রধান হাওয়ার্ড জর্ডান জানিয়েছেন,“গোটা ব্যাপারটাই ঘটেছে খুব অল্প সময়ে। তবে পরিকল্পনা করে, ঠাণ্ডা মাথায় এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে।” বুধবার, গোহের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেবে ওকল্যান্ড পুলিশ।
কোরিয়ান-আমেরিকান খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য তৈরি ওই কলেজটিতে প্রধানত থিয়োলজি, মিউজিক, নার্সিং এবং এশিয়ান মেডিসিন পড়ানো হয়। আদতে কোরিয়ার বাসিন্দা গোহ, নিজেও নার্সিংয়ের ছাত্র ছিল বলে জানিয়েছেন আহত ভারতীয় দাবিন্দার কৌর। তবে মাস খানেক ধরেই সে কলেজে আসত না। তার পর হঠাৎ সোমবারে কলেজে এসে এই হামলা চালায় সে।
তবে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে পড়ুয়াদের ওপর। তাদের জন্য মনোবিদেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর তথা ওকল্যান্ডের প্রাক্তন মেয়র, জেরি ব্রাউন এ দিন নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। এই ধরনের ঘটনা মার্কিন মুলুকে প্রথম নয়। ২০০২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত, ওহায়ো, অ্যালাবামা, ইলিনয়, ভার্জিনিয়ানানান জায়গায় বারবার এই ধরনের হত্যালীলা ঘটেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.