হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইন লোকালে এক যুবককে মাদকে বেঁহুশ করে যথাসর্বস্ব লুঠ করেছিল তিন দুষ্কৃতী। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। পরের দিন, মঙ্গলবার আপ মোকামা প্যাসেঞ্জার থেকে এর মধ্যে দু’জনকে ধরে ফেলল বর্ধমান রেলপুলিশ।
রেলপুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, ধৃতদের নাম যথাক্রমে নুরুজ্জামান হালদার ও মইদুল হালদার। দু’জনেরই বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তি থানার ঘোলা নোয়াপাড়ায়। তাদের কাছ থেকে যুবকের খোয়া যাওয়া টাকা, মানিব্যাগ, জামাকাপড় এবং প্রচুর মাদক ট্যাবলেট পাওয়া গিয়েছে। রেলপুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরার মুখে অপরাধ কবুল করেছে। দীর্ঘ দিন ধরেই ট্রেনে মাদক খাইয়ে লুঠপাট তারা যুক্ত। এর আগে ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বরেও তারা বর্ধমান রেলপুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল। বর্ধমানগামী লোকাল ছাড়াও খড়গপুর, মোকামা, মিথিলা, গয়া যাওয়ার বহু ট্রেনেই তারা কারবার চালায়। |
এ বার ঘটনার সূত্রপাত সোমবার ভোরে। হাওড়া স্টেশন থেকে দিনের প্রথম বর্ধমান-হাওড়া আপ লোকাল ধরেছিলেন মগরার সুকান্তপল্লির বাসিন্দা সুশীল হাওলাদার। বাবুঘাটে নৌকা মেরামতের কাজ করেন তিনি। তাঁর সঙ্গেই ট্রেনের কামরায় ওঠে তিন জন। নিত্যযাত্রী সেজে সুশীলের সঙ্গে ভাবও জমিয়ে ফেলে।
রেলপুলিশকে সুশীল জানান, ট্রেন ব্যান্ডেল স্টেশন পেরোনোর পরে ওই তিন জন এক হকারের থেকে চা কিনে খায়, তাঁকেও খাওয়ায়। তাতে যে মাদক রয়েছে, তা বুঝতে পারেননি তিনি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে যান। ট্রেন বর্ধমান স্টেশনে পৌঁছলে রেলপুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ জ্ঞান ফিরলে তিনি রেলপুলিশকে জানান, তিন জনের মধ্যে দু’জন তাঁকে নাম বলেছিল। ওই দু’টি নাম ও তিন জনের চেহারার বর্ণনা শুনে স্টেশনের বিভিন্ন প্লাটফর্মে তারা দুষ্কৃতীদের খোঁজে নজরদারি শুরু করে।
বর্ধমান রেলপুলিশের ওসি আশিস মজুমদার জানান, সোমবার রাতে দেখা যায় আপ মোকামা প্যাসেঞ্জারে তিন যাত্রীর দেখা মেলে, যাদের সঙ্গে সুশীলের বর্ণনার প্রচুর মিল। তাঁরা দু’জনকে হাতেনাতে ধরে ফেললেও তৃতীয় জন পালায়। তার খোঁজ চলছে। ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। |