|
|
|
|
৫ মাস ধরে পেনশনহীন নিগমকর্মীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
নভেম্বর থেকে পেনশন মিলছে না। অসহায় ভাবে ঘুরে বেড়াতে হয়েছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের প্রায় আড়াই হাজার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে। তাঁরা আন্দোলন করেছেন। পেনশনের দাবিতে বারবার সংস্থার কর্তৃপক্ষের আলোচনায় বসেছেন। অবশেষে যদিও তা মিলেছে কিন্তু পুরো নয়। তিন মাসের অর্ধেক টাকা। ওই ঘটনায় অবসরপ্রাপ্ত কর্মী মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, মূল্য বৃদ্ধির বাজারে পেনশনের অর্ধেক টাকা দিয়ে কেমন করে বাঁচবেন! দ্রুত মাসের পেনশন পুরো না দেওয়া হলে আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছে নিগমের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের সংগঠন রিটায়ার্ড স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন এবং পেনশনার্স অ্যাসোসিয়েশন। যদিও সংস্থার কর্তারা ওই বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানাননি। নিগমের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বরাদ্দ টাকা পেয়ে বকেয়া পেনশনের ৩ মাসের পাওনার অর্ধেক অবসরপ্রাপ্তদের ব্যাঙ্ক আকাউন্টে জমা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকে তা পেয়েছেন। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের কাগজপত্রে কিছু অসঙ্গতি থাকায় সেগুলি পরীক্ষার কাজ চলছে। ওই কাজ সম্পূর্ণ হলে বাকি অর্ধেক টাকা মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সি মুরুগণ বলেন, “তিন মাসের পেনশনের প্রথম দফার অর্ধেক টাকা চলতি সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যেকে পেয়ে যাবেন।” অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা প্রশ্ন তুলেছেন, যে টাকা দেওয়া হচ্ছে এই বাজারে তা দিয়ে কোনও মানুষ বাঁচতে পারে! এক কর্মীর কথায়, “গত পাঁচ মাস থেকে পেনশন মিলছে না। ধারদেনা করে কোনও মতে দু’বেলা খেতে হয়েছে। দোকানদারদের বলেছি পেনশন মিলতেই টাকা মিটিয়ে দেব। অর্ধেক টাকা কোথায় দেব বুঝতে পারছি না।” নিগমের বাম প্রভাবিত পেনশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মোহনবাঁশী বর্মন বলেন, “মোট ৫ মাসের বকেয়ার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র দেড় মাসের টাকা। ওই টাকায় দোকানের বকেয়া শোধ করাও সম্ভব হবে না। বামফ্রন্টের সময় এমনটা হয়নি। বাধ্য হয়ে আন্দোলনের কথা ভাবতে হচ্ছে।” অবসরপ্রাপ্ত কর্মী সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থায় অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। তাঁদের পেনশনের জন্য মাসে গড়ে ২ কোটি টাকা প্রয়োজন। বামফ্রন্টের সময় থেকে অনিয়মিত পেনশনের জন্য তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নিগম কর্তারা জানান, পরিবহণ দফতর সম্প্রতি পেনশন খাতে ৩ কোটি ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। নভেম্বর মাস থেকে সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন বকেয়া রয়েছে। মার্চ পর্যন্ত ওই বকেয়া মেটানো হয়নি। পরিবহণ দফতরের বরাদ্দ টাকা দিয়ে পাঁচ মাসের বকেয়ার মধ্যে নভেম্বর, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাসের পেনশনের অর্ধেক টাকা মেটানো সম্ভব হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে পেনশনের অর্ধেক টাকা দিতে শুরু করায় আতঙ্কিত নিগমের রিটায়ার্ড স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গুণেন মিত্র। তিনি বলেন, “বাম আমলেও নিয়মিত পেনশন পাইনি। তবে বকেয়া মেটানোর সময় পুরো মাসের টাকা দেওয়া হয়েছে। কোনও মাসের অর্ধেক পেনশন এই বারই প্রথম পেলাম। যা পরিস্থিতি তাতে এখন ভয় হচ্ছে এটাই ভবিষ্যতে নিয়ম হয়ে না-দাঁড়ায়।” |
|
|
|
|
|