আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানালেন বর্ধমানে আলোকচিত্রী ও সাংবাদিকদের মারধরে অভিযুক্ত দুই জুনিয়র ডাক্তার। সোমবার দুই আইনজীবী তাঁদের হয়ে বর্ধমান জেলা জজ আদালতে ওই আর্জি জানান। শুনানি হওয়ার কথা ১৯ এপ্রিল।
গত ২৮ মার্চ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খবর সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিক ও আলোকচিত্রীদের উপরে চড়াও হয়েছিলেন বেশ কিছু জুনিয়র ডাক্তার। বেশ কয়েক জন জখম হন। দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। ছ’টি ক্যামেরাও লুঠ হয় বলে অভিযোগ। রাতে অভিনব সিংহ ও শৌভিক বাগ নামে দু’জনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করেন সাংবাদিকেরা।
এর পরেও কিন্তু কোনও জুনিয়র ডাক্তারকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। বরং এমন চার জনকে ধরা হয়, যাঁরা আক্রান্তদের সাহায্য করেছিলেন বলে সাংবাদিকদের একাংশের দাবি। এ দিন বর্ধমান শহরে মিছিল করার পরে ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদক আভাস রায়চৌধুরী অভিযোগ করেন, “এত দিন তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বামপন্থী নেতা ও ছাত্র-শিক্ষকদের আক্রমণ করছিল। এখন সাংবাদিকদেরও বাদ দিচ্ছে না। তৃণমূলের মদতে ওই হামলা চালানো হয়। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে না।” |
জুনিয়র ডাক্তারদের হাতে আলোকচিত্রী ও সাংবাদিকদের প্রহৃত হওয়ার
ছবির প্রদর্শনী। বর্ধমান শহরের কার্জনগেটে। নিজস্ব চিত্র |
বর্ধমানের জেলাশাসক মারফত এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানায় সাংবাদিকদের একটি রাজ্য সংগঠন। রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের কাছে এক সংখ্যালঘু সংগঠনও একই দাবি জানিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনের তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকেও। বর্ধমান শহরে প্রতিদিন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সাংবাদিকেরা।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তার অভিনব সিংহের স্থায়ী ঠিকানা উত্তরপ্রদেশের আজমগড় জেলায় কোবা এলাকার ঢাকা গ্রামে। অপর জন, শৌভিকের বাড়ি হুগলির চুঁচুড়ায় চ্যাটার্জিবাগানে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬, ৩৪১, ৩৭৯, ৪২৭, ৫০৬ ও ৩৪ নম্বর ধারায় এঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। এর মধ্যে ৩০৭ (খুনের চেষ্টা), ৩২৬ (মারাত্মক অস্ত্র দিয়ে আঘাত) এবং ৩৭৯ (চুরি) জামিন-অযোগ্য।
ইতিমধ্যেই সাংবাদিকদের তরফে সিজেএম আদালতে পিটিশন দিয়ে বলা হয়েছে, গ্রেফতার হওয়া চার জন হামলায় জড়িত ছিলেন না। তাঁরা বরং আক্রান্তদের বাঁচাতেই সাহায্য করেন। এ দিন বর্ধমান পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার হাতে ঘটনার কিছু ছবি এবং ভিডিও ফুটেজ তুলে দিয়ে কয়েক জন সাংবাদিক ফের দাবি করেন, ধৃতেরা নির্দোষ। পুলিশ সুপার বলেন, “ধৃতদের শনাক্তকরণের জন্য ‘টিআই প্যারেড’ করাব। সাংবাদিক বা আলোকচিত্রীরা যদি অপরাধী বলে যদি চিহ্নিত না করেন, ওঁদের ছেড়ে দেওয়া হবে।” |