আমরি হাসপাতালের আরও দুই ডিরেক্টরকে সোমবার জামিন দিল আদালত। এ দিন রবি তোদি ও মণীশ গোয়েন্কা জামিন পাওয়ায় আমরির গ্রেফতার হওয়া নয় ডিরেক্টরের মধ্যে সাত জনই জামিন পেয়ে গেলেন। বাকি রইলেন শুধু শ্রবণ তোদি এবং দয়ানন্দ অগ্রবাল। দু’জনেই জেল হেফাজতে রয়েছেন। নিম্ন আদালত দু’জনেরই জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল। এ দিনও নিম্ন আদালতে দয়ানন্দ অগ্রবালের জামিনের আবেদন আরও এক বার খারিজ হয়ে গিয়েছে।
আমরির মোট ১৫ জন ডিরেক্টরের মধ্যে তিন জন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি। তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও এফআইআর করেনি। বাকি ১২ জনের মধ্যে তিন জন ফেরার। গ্রেফতার হওয়া ন’জনের মধ্যে হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মণি ছেত্রী এবং প্রণব দাশগুপ্ত জামিন পেয়েছেন নিম্ন আদালত থেকে। হাইকোর্ট জামিন দিয়েছে রাধেশ্যাম অগ্রবাল, রাধেশ্যাম গোয়েন্কা, প্রশাম্ত গোয়েন্কা, রবি তোদি এবং মণীশ গোয়েন্কাকে। রাজ্য সরকার রাধেশ্যাম অগ্রবালকে জামিন দেওয়ার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। শ্রবণ তোদির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানানো হয়েছে।
নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছেন হাসপাতালের দুই ভাইস প্রেসিডেন্টও। এক জন ভাইস প্রেসিডেন্ট সত্যব্রত উপাধ্যায় জামিন পেয়েছিলেন আগেই। সোমবার নিম্ন আদালত আর এক জন ভাইস প্রেসিডেন্ট পৃথা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জামিনও মঞ্জুর করল। আমরি কাণ্ডে ধৃত নাইট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সাজিদ হোসেনের জামিনের আবেদন এ দিনও খারিজ হয়ে গিয়েছে। আইনজীবী না আসায় ধৃত অন্য জেনারেল ম্যানেজার (রক্ষণাবেক্ষন) সঞ্জীব পালের জামিনের আবেদনের শুনানি হয়নি।
হাইকোর্টে বিচারপতি অসীম রায় এবং বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ রবি তোদি এবং মণীশ গোয়েন্কার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে জানিয়ে দেয়, এর আগে আমরি-র তিন কর্তাকে (রাধেশ্যাম অগ্রবাল, রাধেশ্যাম গোয়েন্কা, প্রশান্ত গোয়েন্কা) যে যুক্তিতে জামিন দেওয়া হয়েছে, সেই একই যুক্তিতে এ দিন দু’জনের জামিনের আর্জি মঞ্জুর করা হল। হাইকোর্টের বক্তব্য ছিল, আমরি-র দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনার জন্য গঠিত ম্যানেজিং কমিটির তিন সদস্য চিকিৎসক মণি ছেত্রী, চিকিৎসক প্রণব দাশগুপ্ত এবং হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট (রক্ষণাবেক্ষণ) সত্যব্রত উপাধ্যায় নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। চার সদস্যের ওই কমিটির তিন জন জামিন পাওয়ার পর পরিচালন বোর্ড সদস্যদের আটকে রাখা যুক্তিহীন।
আলিপুরের জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক অনিন্দ্য ভট্টাচার্যের এজলাসে এ দিন পৃথাদেবীর জামিনের আবেদনের শুনানি হয়। পৃথাদেবীর আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, “আমরি-কাণ্ডের কয়েক জন অভিযুক্তকে এ ভাবে আটকে রাখা প্রতিহিংসা ছাড়া কী হতে পারে?” সরকারি আইনজীবী শক্তি ভট্টাচার্য এর বিরোধিতা করেন। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর শর্তসাপেক্ষে পৃথাদেবীর জামিন মঞ্জুর করা হয়। বিচারক জানান, আদালতের অনুমতি ছাড়া কলকাতার বাইরে যেতে পারবেন না ওই আমরি-কর্তা। তাঁর পাসপোর্ট মামলার তদন্তকারীর কাছে জমা রাখতে হবে। সোমবার আলিপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আমরি-কর্তা দয়ানন্দ অগ্রবাল ও সাজিদ হুসেনের জামিনের আবেদন খারিজ হয়। তাঁদের ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। |