|
|
|
|
কুপ্রস্তাবের প্রতিবাদ করায় মার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
অশালীন ইঙ্গিতের প্রতিবাদ করায় বাড়িতে ঢুকে এক গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটে প্রধাননগর থানার গুরুঙ্গ বস্তিতে। পুলিশ জানায়, ওই গৃহবধূর নাম পুনম সা। বর্তমানে তিনি শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, প্রতিবেশী এক যুবক ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। অভিযুক্ত তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গৃহবধূর বাড়িতে হামলা চালান। ঘটনার পর তাঁরা থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি। থানার এক পুলিশ কর্মী বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এমনকী থানার আইসির সঙ্গেও গৃহবধূর পরিবারকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। পরে রাত ১২টা নাগাদ পুলিশ অভিযোগ নেয়। সোমবার ঘটনাটি জানার পর শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি প্রধাননগর থানার আইসি রাজীব ভট্টাচার্যকে এফআইআর করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “ঘটনাটি আমার জানা ছিল না। থানার আইসির সঙ্গে কথা বলেছি। এফআইআর করে ওই ঘটনার তদন্ত করা হবে। ওই ঘটনায় যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি যে পুলিশ কর্মী অভিযোগ নিতে চাননি এবং ওই গৃহবধূকে আইসির সঙ্গে দেখা করতে দেননি বিভাগীয় তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এদিন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে পুনম জানান, গত ২২ মার্চ তিনি বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সময় প্রতিবেশী ওই যুবক তাঁকে উদ্দেশ্য করে অশালীন ইঙ্গিত করেন। বিষয়টি বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে গেলে তিনি প্রতিবাদ করেন। তাঁর বাবা সরবন সাকে সমস্ত ঘটনা জানান পুনম। সরবনবাবু ওই যুবকের অভিভাবকের কাছে ঘটনা তুলে ধরে নালিশ জানাতে গেলে অভিযুক্তরা হামলা করে বলে অভিযোগ। সেই সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। তার পর থেকেই ওই যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে মারধরের হুমকি চলতে থাকে। গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ প্রায় ১০ জন মিলে পুনমদের বাড়িতে হামলা করে। সেই সময় বাড়িতে পুনম, তাঁর এক বোন এবং ছোট ভাই ছিল। তাদের ৩ জনকে মারধর করে অভিযুক্তরা। পুনমকে কিল, চড়, ঘুঁষি মারা হয়। তাঁর মাথার চুল ধরে ইটের পাঁচিলে ধাক্কা দেওয়া হয়। তাঁর হাতের কয়েক জায়গায় কেটে গিয়েছে। মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত রয়েছে। তিনি বলেন, “আচমকা হামলা করে মারধর করা হয় আমাকে। ভাই ও বোনকেও মারে ওরা। আমি ৬ জনকে চিনতে পেরেছি। তাদের কথা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ প্রথমে সব মিটিয়ে নিতে বলেছিল। পরে অবশ্য অভিযোগ নিয়েছে।” সরবনবাবু জানান, ওই দিন তিনি ব্যক্তিগত কাজে বাইরে ছিলেন। পুনমের বাজারে গিয়েছিলেন। ওই সুযোগেই অভিযুক্তরা হামলা চালায়। তিনি বলেন, “মেয়ে অশালীন ইঙ্গিতের প্রতিবাদ করায় তারা মারধর করেছে। যেদিন আমি প্রতিবেশীর বাড়িতে অভিযোগ জানাতে যাই সেদিন আমাদের উপর হামলা করা হয়। তার পর থেকে প্রতিদিন হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।” পুনমের মা অনিতা দেবী বলেন, “মেয়ের বিয়ে হয়েছে বিহারে। হোলির সময় বাড়িতে এসেছে। কয়েকদিনের মধ্যে ফিরে যাওয়ার কথা। তাঁর উপর অত্যচার করা হয়েছে। এখনও ভয় দেখাচ্ছে ওই পরিবারের লোকজন। বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসেছে তারা। পুলিশ কিছু করুক এটা আমরা চাই। না হলে আমরা কোথায় যাব।” অভিযুক্তদের পক্ষ থেকেও একটি পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। |
|
|
|
|
|