দিনদুপুরে গুলি করে খুনের ঘটনা ঘটল আদ্রার ডিআরএমের কার্যালয়ের সামনে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম লক্ষণ প্রসাদ (৩৭)। বাড়ি আদ্রারই জ্যোতিমোড় এলাকায়। সোমবার দুপুর ২টো নাগাদ এই খুনের পরে তদন্তে আসেন পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সি সুধাকর। তিনি বলেন, “লক্ষণ প্রসাদ নামে এক যুবককে গুলি করে খুন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।” তবে তাঁকে কেন খুন করা হল তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে ডিআরএমের কার্যালয়ের সামনে নিজের মোটরবাইকের উপরে বসে ছিলেন লক্ষণবাবু। সেই সময় দুষ্কৃৃতীরা তাঁকে সামনে থেকে গুলি করে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কার্যালয়ের মূল গেট থেকে একশো মিটারেরও কম দূরত্বে আদ্রা স্টেশনের লাগোয়া এলাকায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে দেহটি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দু’টি বাইকে কয়েক জন ব্যক্তি এসে ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলছিল। আচমকাই গুলির শব্দ শোনা যায়। তার পরেই দেখেন দুষ্কৃতীরা বাইকে করে পুরুলিয়ার কাশীপুরের দিকে চলে যায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, প্রাণে বাঁচতে বাইক থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন ওই যুবক। কারণ তাঁর চটি, চাবি বাইকের কাছেই পড়েছিল। কিন্তু দুষ্কৃতীরা ধাওয়া করে এবং বাইক থেকে দশ মিটারেরও কম দূরত্বে তাঁকে ধরে ফেলে। খুব কাছ থেকে মাথায়, কপাল ও বুকে তিনটি গুলি করা হয়। দেহের পাশ থেকেও আরও ছ’টি গুলির খোল উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, দুষ্কৃতীরা আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে।
প্রসঙ্গত, ডিআরএমের কার্যালয়ের সামনে রেলের ঠিকাদারী কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের খুনের ঘটনা নতুন নয়। এদিনের ঘটনাকে নিয়ে গত আড়াই বছরে আদ্রায় খুন হয়েছেন তিনজন। এ দিকে, লক্ষণবাবুর পেশা নিয়ে ধন্দ থাকলেও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, রেলের ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে ওই যুবক জড়িত ছিলেন। ফলে ব্যক্তিগত শত্রুতা না এলাকায় গড়ে ওঠা ‘সিন্ডিকেটের’ মধ্যে বিবাদের জেরে এই খুন কি না, তা পরিষ্কার নয়। রঘুনাথপুরের এসডিপিও দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখছি।” তবে এই খুনের ঘটনা নিয়ে কোনও কিছুই জানাতে চাননি ওই যুবকের পরিবার। তাঁদের পক্ষ থেকে থানায় কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগও জানানো হয়নি।
তবে দিনদুপুরে ডিআরএমের কার্যালয়ের সামনে ফের খুনের ঘটনা ঘটায় আতঙ্কিত রেলকর্মীরা। ঘটনা হল ডিআরএমের কার্যালয়ের চত্বরেই রয়েছে আরপিএফের কন্ট্রোল রুম। যেখান থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব মাত্র প্রায় একশো মিটার। তার পরেও দিবালোকে দুষ্কৃতীরা খুন করে পালাচ্ছে।
ডিআরএম অমিতকুমার হালদার বলেন, “ওই খুনের সঙ্গে রেলের কোন প্রত্যক্ষ যোগাযোগ নেই। কারণ ওই যুবক রেলের কর্মী বা ঠিকাদার নন। এসডিপিও-র সঙ্গে কথা হয়েছে। ওই এলাকায় পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর জন্যও বলা হয়েছে।” |