মত মেদিনীপুরের পক্ষেও
শিলদা নয়, লালগড়ে দাবি ঝাড়গ্রাম মহকুমারই পক্ষে
তুন ঝাড়গ্রাম জেলায় সম্ভাব্য লালগড়-ব্লককে শিলদা মহকুমার অধীনে রাখার প্রস্তাব দিয়েছে ঝাড়গ্রাম মহকুমা প্রশাসন। একই প্রস্তাব ঝাড়গ্রাম পুলিশেরও। প্রশাসনের একাংশ আবার শিলদা মহকুমার সদরটি বিনপুরে করার পক্ষপাতী। কিন্তু এলাকাবাসীর একাংশ চান, ‘নিকটবর্তী’ ঝাড়গ্রাম সদর মহকুমার অধীনেই লালগড় ব্লককে রাখা হোক। সম্ভাব্য লালগড় ব্লকের (এই ব্লকের অধীনে বৈতা, ধরমপুর, লালগড়, কাঁটাপাহাড়ি ও রামগড় এই ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে রাখার প্রস্তাব দিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন) এলাকাটি ঝাড়গ্রাম বিধানসভার অন্তর্গত। পক্ষান্তরে, ‘দূরবর্তী’ শিলদা এলাকাটি বিনপুর বিধানসভার মধ্যে রয়েছে। এলাকাবাসীর কেউ কেউ বলছেন, কংসাবতীতে প্রস্তাবিত সেতু না-চালু করে লালগড়ের মানুষকে শিলদা মহকুমা-সদরে যেতে বলা অযৌক্তিক। শুরুতে প্রশাসনের তরফে ঝাড়গ্রাম জেলায় দু’টি মহকুমার প্রস্তাব ছিল। পরে বামেরা তৃতীয় একটি মহকুমাশিলদা গঠনের প্রস্তাব দেয়। সিপিএম লালগড় ব্লককে শিলদা মহকুমায় রাখার কথা বললেও সিপিআই অবশ্য এই প্রশ্নে ঝাড়গ্রাম মহকুমারই পক্ষপাতী। পরে ঝাড়গ্রাম মহকুমা প্রশাসনও শিলদা মহকুমার প্রস্তাব দিয়েছে। আর তাতে লালগড়কে শিলদায় অন্তর্ভুক্ত করা নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
লালগড় থেকে ঝাড়গ্রামের মধ্যে মূল বিভাজিকা হল কংসাবতী নদী। লালগড়ের বাঘাকুলি-আমকলা ঘাটে কংসাবতী নদীর উপর স্থায়ী সেতু তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত (সেতু নির্মাণের টাকা বরাদ্দ হয়েছে, সমীক্ষার কাজ চলছে। এখনও টেন্ডার হয়নি) ঝাড়গ্রাম ও বিনপুরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ, বিশেষত বর্ষায় খুবই সমস্যা। আমকলা ঘাটে ফেয়ার-ওয়েদার সেতুটি প্রতি বর্ষায় ধুয়ে যায়। ওই পথে লালগড় থেকে আমকলা ঘাট দিয়ে দহিজুড়ি হয়ে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব ২০ কিমি। আর আমকলা দিয়ে বিনপুর হয়ে শিলদার দূরত্ব অপেক্ষাকৃত বেশি, ২৮ কিলোমিটার। অন্য দিকে, লালগড় থেকে ঘুরপথে ধেড়ুয়া হয়ে (ধেড়ুয়ায় কংসাবতীর উপর স্থায়ী সেতু আছে) ঝাড়গ্রামের দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। আর ঝাড়গ্রাম থেকে শিলদার দূরত্ব আরও ৩০ কিলোমিটার। ফলে, লালগড়-ঝাড়গ্রামের মধ্যে কংসাবতীর উপর স্থায়ী সেতু তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত বর্ষায় লালগড় থেকে ধেড়ুয়া-ঝাড়গ্রাম হয়ে শিলদা যেতে হলে ৬০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হবে। ফলে লালগড়ের মহকুমা-সদর ঝাড়গ্রামে হওয়াটাই বাঞ্ছনীয় বলে মনে করছেন সিংহভাগ এলাকাবাসী। সোমবার মেদিনীপুরে জেলা-গঠন নিয়ে সর্বদল সভাতেও শাসক কংগ্রেস-তৃণমূল নেতৃত্ব কোনও অবস্থাতেই শিলদা মহকুমার মধ্যে লালগড়কে অন্তর্ভুক্ত না-করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা লালগড়ের জন্য ঝাড়গ্রাম মহকুমার পক্ষেই সওয়াল করেছেন।
লালগড়ের বস্ত্র ব্যবসায়ী জিতেন মাহাতো বলেন, “লালগড় থেকে শিলদার তুলনায় ঝাড়গ্রামের দূরত্ব অনেকটাই কম। ফলে লালগড়ের মহকুমা-সদরটি ঝাড়গ্রামেই হওয়া উচিত।” মাধ্যমিক-পরীক্ষার্থী অসীমা চৌধুরীর বক্তব্য, “লালগড়কে কোন মহকুমায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে তা স্থানীয় জনমতের ভিত্তিতে ঠিক করা হোক।” লালগড় থেকে প্রকাশিত ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘সুস্বন’-এর সম্পাদক পঙ্কজকুমার মণ্ডল বলেন, “যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না-ঘটিয়ে লালগড়কে প্রস্তাবিত শিলদা বা বিনপুর মহকুমার সঙ্গে যুক্ত করাটা আদৌও সমীচীন নয়।”
এলাকাবাসীর অনেকে ঝাড়গ্রাম জেলার পরিবর্তে প্রস্তাবিত লালগড় ব্লককে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অধীনে রাখার ব্যাপারেও সওয়াল করেছেন। কারণ, লালগড়ের সঙ্গে মেদিনীপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল। লালগড় থানাটি এখনও পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ জেলারই অন্তর্গত (যদিও লালগড় থানাকেও ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার অধীনে আনারও প্রস্তাব রয়েছে)। লালগড়ের স্কুলগুলির মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিও সদর মহকুমায় করা হয়। উল্লেখ্য, লালগড় থেকে ঝিটকা হয়ে মেদিনীপুরের দূরত্ব ৪২ কিলোমিটার। তাই কাঁটাপাহাড়ির একটি স্কুলের শিক্ষক গুরুদাস চক্রবর্তীর মতো কারও কারও বক্তব্য, “প্রস্তাবিত লালগড় ব্লককে মেদিনীপুর সদর মহকুমার অন্তর্ভুক্ত করলেই বরং এলাকার মানুষের বেশি সুবিধা হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.