|
|
|
|
‘৫ মে-র ম্যাচটা হল ভারত-পাকিস্তান’ |
মায়ের অসুস্থতার জন্য আসতে পারছিলেন না। কেকেআর শিবিরে সোমবারই যোগ দিলেন
তাদের বোলিং পরামর্শদাতা।
ইডেনে প্রথম দিনের প্র্যাক্টিসের পর ওয়াসিম আক্রম
একান্ত
সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজারকে। |
সুমিত ঘোষ • কলকাতা |
প্রশ্ন: কলকাতা পৌঁছে নিশ্চয়ই শুনেছেন সবথেকে বেশি আলোচনা ৫ মে-র ম্যাচ নিয়ে। ইডেনে সৌরভের পুণে ওয়ারিয়র্স বনাম কেকেআর...
আক্রম: ইয়েস। সৌরভ আমার বন্ধু। ওকে একটা কথাই বলব। চলো বন্ধু, ম্যাচটা উপভোগ করি। এই প্রথম ইডেনে সৌরভ আসছে অন্য টিমের হয়ে খেলতে। কলকাতার এক নম্বর স্পোর্টসম্যান কলকাতায় খেলবে অন্য টিমের হয়ে! চাপ থাকবে, উত্তেজনা থাকবে কিন্তু মজাও তো থাকবে। আমার কাছে ৫ মে-র ম্যাচটা হল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের মতো। আমি যত বার ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ খেলেছি, চেষ্টা করেছি পরিবেশটাকে উপভোগ করার। এখানেও সেটাই বলব। মাঠের বাইরে আমাদের বন্ধুত্ব নিশ্চয়ই থাকবে। মাঠে দোস্তি নেই। সেখানে তো পেশাদারদের লড়াই।
প্রশ্ন: কাল ধোনিদের বিশ্বকাপ জয়ের বর্ষপূর্তি ছিল। চারদিকে প্রচুর উৎসব হচ্ছে। আপনিও তো প্রাক্তন বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন। আপনাদের কাপ জেতার অ্যানিভার্সারি হয় না?
আক্রম: আজ পর্যন্ত তো হতে দেখিনি। এই তো আমাদের কাপ জেতার কুড়ি বছর হল। কোনও সেলিব্রেশন হয়নি।
প্রশ্ন: খারাপ লাগে নিশ্চয়ই?
আক্রম: একেবারেই লাগে না। আরে, খতম হো গয়া ওয়ার্ল্ড কাপ ভিকট্রি। আগে দেখো না ভাই। যখন জিতবে তখন সেলিব্রেশন করো ঠিক আছে। দু’বছরের মধ্যে আর একটা বিশ্বকাপ আসছে সেটা খেয়াল আছে কি? সেটার জন্য তৈরি হও।
প্রশ্ন: এটা কি ধোনিদের বলছেন?
আক্রম: পুরনো জয় নিয়ে যারা বেশি মাতামাতি করবে সকলকেই বলা যায়। আপাতত ধোনিদের বলছি। এক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডে হারছ, সেটার পোর্স্টমর্টেম করো। ভাল বোলার তৈরি করো। উমেশ যাদব এত ভাল বল করল। দুম করে ওকে বসিয়ে দিচ্ছে। আমরা পাকিস্তান টিমে পাঁচ বছর ধরে সাকলিন মুস্তাককে তৈরি করেছিলাম। খারাপ করলেও খেলিয়ে যেতাম ওকে। বার বার পজিটিভ কথা বলতাম। বোলার কো বাঁচানা হ্যায়, মারনা নহি।
প্রশ্ন: মনোজ তিওয়ারিরও একই অবস্থা। সেঞ্চুরি করেও চান্স নেই!
আক্রম: সেঞ্চুরি করেও ম্যাচ পাচ্ছে না। ভাবুন এক বার। অস্ট্রেলিয়াতে ওকে একটা ম্যাচও খেলালো না। তবে মনোজ খুব জেদি ছেলে। ও সহজে দুমড়ে যাবে না। |
|
লি-কে পরামর্শ আক্রমের। সোমবার ইডেনে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
প্রশ্ন: প্রথম দিন কেকেআর ক্যাম্পে যোগ দিয়ে কী দেখলেন?
আক্রম: দেখলাম ক্যাপ্টেন ভীষণ খাটছে। নতুন কোচ এসেছে এ বার। ট্রেভর বেলিসের সঙ্গে আজই আমার সে ভাবে কথা হল। এর আগে সিডনিতে এক বার দেখা হয়েছিল। ভীষণ সিম্পল মানুষ। মাত্র কয়েক ঘণ্টা কথা বলেই মনে হচ্ছে যেন গত চার-পাঁচ বছর ধরে আমাদের সম্পর্ক।
প্রশ্ন: নেটে তো দেখলাম নিজেও বোলিং করছেন।
আক্রম: অব মেরেকো স্ট্রেচার মে হোটেল জানা পড়েগা। হাঃ হাঃ হাঃ! কিন্তু আমি খুব এনজয় করছি।
প্রশ্ন: বোলারদের কী বলবেন?
আক্রম: বলব, মানসিক দিকটার দিকে বেশি নজর দিতে। এই কারণে আমার মনে হয় রুডি ওয়েবস্টারের আসাটা দারুণ ব্যাপার। দারুণ মজার মজার সব ক্রিকেট গল্প বলেন রুডি। সে জন্যই ওঁকে ভাল লাগবে।
প্রশ্ন: আপনার বিশ্বকাপজয়ী ক্যাপ্টেনকে নিয়ে এক ব্রিটিশ সংবাদপত্রের লেখা পড়ছিলাম সে দিন। ‘ইমরান খান ইজ গেইনিং মোমেন্টাম ইন পাকিস্তান’। কী মনে হচ্ছে, ইমরান নির্বাচন জিতবেন?
আক্রম: অবশ্যই জিততে পারে। পাকিস্তানের মানুষকে দেখে মনে হচ্ছে, তারা পরিবর্তন চাইছে। ষাট-পঁয়ষট্টি বছর ধরে একই রকম চলছে। ইলেকট্রিসিটি নেই। রাস্তাঘাটের অবস্থা শোচনীয়। করাচি জ্বলছে। ইমরানের পিছনে বিশাল জনসমর্থন রয়েছে এ বার। যেখানে যাচ্ছে জনসমুদ্র!
প্রশ্ন: আপনার সঙ্গে দেখা হয়েছে এর মধ্যে?
আক্রম: দু’দিন আগেই হয়েছে। ইসলামাবাদে। ভীষণ পজিটিভ দেখাল ইমরানকে। আর আমি ইমরানকে চিনি। ও যখন মাথার মধ্যে কিছু একটা ঢোকাবে সেটা করেই ছাড়বে। গত দশ বছর ধরে ও এই যুদ্ধটা লড়ছে। আমি জানি ইমরান কিছু চাওয়া মানে সেটা করেই ছাড়বে।
প্রশ্ন: সচিনের শততম সেঞ্চুরি নিয়ে কী বলবেন?
আক্রম: নিশ্চয়ই খুব হাল্কা অনুভব করছে। ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয়েছিল, সচিন ওয়ান ডে ক্রিকেট ছেড়ে দেবে। দেখেশুনে মনে হচ্ছে ও চালিয়ে যেতে চায়। আমার মনে হয় শুধু টেস্ট ক্রিকেট খেললেই ঠিক ছিল। একটা জুনিয়র প্লেয়ার হয়তো ওয়ান ডে-তে সুযোগ পেত। তবে এটা একান্তই আমার মত।
প্রশ্ন: সইদ আজমলের বোলিং অ্যাকশন বিতর্ক নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
আক্রম: ছেলেমানুষি হচ্ছে। আমার কথা হচ্ছে, যখন আইসিসি একটা বোলারকে খেলার অধিকার দিয়েছে তখন তোমাদের এত আপত্তি তোলার কী আছে। দশ বছর ধরে আজমল খেলছে। এখন খেয়াল করলে যে ওর অ্যাকশন ঠিক নেই? নাকি এখন খেলতে সমস্যা হচ্ছে তাই ঘ্যানঘ্যান করে যাচ্ছো! |
|
|
|
|
|