|
|
|
|
সচিনই ‘বস’, আমি তো নামেই অধিনায়ক: হরভজন |
মুম্বইয়ের নেতৃত্ব ছাড়লেন তেন্ডুলকর |
সব্যসাচী সরকার • চেন্নাই |
অমিতাভ বচ্চনের কবিতা পাঠের সঙ্গে সচিন তেন্ডুলকরের আইপিএলে মু্ম্বই অধিনায়কত্ব ছাড়ার কী সম্পর্ক?
প্রথমটা ঘটবে চব্বিশ ঘণ্টা পরে, যা নিয়ে উত্তেজিত ‘বিগ বি’ টুইট করে বলছেন, “অল গিয়ারড আপ টেকনিক্যালি...টাইম ফর দ্য বাটারফ্লাইজ ইন দ্য স্টম্যাক টু টেক ফ্লাইট!” আর দ্বিতীয়টা ঘটে গেল চিপকে, সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ। যখন হরভজন সিংহ এসে প্রচারমাধ্যমকে নাটকীয় ভাবে জানালেন, এ বারে আইপিএলে সচিন তেন্ডুলকর আর মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের নেতা থাকছেন না। হঠাৎ কী হল? হরভজনের মুখে শুনুন, “দু’দিন আগে সচিন আমাকে ফোন করেছিল। তখনই আমাকে বলে, এ বার আর ও নেতা থাকতে চায় না। আমাকে বলে, গত এক বছর ধরে প্রচুর চাপ গিয়েছে মনের উপর দিয়ে। এ বার খোলা মনে খেলতে চাই। তুমি দায়িত্ব নাও, তাতেই টিমের ভাল হবে।”
সঙ্গে সঙ্গে অবধারিত প্রশ্ন, সচিন খেলছেন তো? “নিশ্চয়ই খেলবে, প্রতিটা ম্যাচে খেলবে। মু্ম্বই ইন্ডিয়ান্সের তো ও-ই বস। আমি নামেই ক্যাপ্টেন। মনে নেই, গতবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে না খেললেও ও কী ভাবে আমাদের টিমের সঙ্গে ছিল? বাইশ বছর ধরে দেশকে ও দিয়ে চলেছে, এ বার আমাদের কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার পালা,” আশ্বাস দিচ্ছেন হরভজন। বোর্ডের দেওয়া রাহুল দ্রাবিড়ের সংবর্ধনার দিন দেশে না থাকলে কী হবে, ডাক্তার দেখিয়ে ফিরেই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্র্যাক্টিসে। কোনও কামাই নেই সচিনের। হরভজন আনন্দবাজারকে বলেও দিলেন, “খোলা মনের সচিন কী জিনিস, এ বার আইপিএল দেখবে, মিলিয়ে নেবেন!” |
|
চাপমুক্তির হাসি। এখন শুধুই প্লেয়ার। টিম মালকিনের
সঙ্গে সচিন। চেন্নাইয়ে সোমবার। ছবি: পিটিআই |
এটা যদি ক্রিকেটীয় ‘সচ’ হয়, বলিউডি সচ-ও থাকছে। গত তিন দিন ধরে বলিউডের ‘বিগ বি’-র ঠিকানা চেন্নাইয়ের পাঁচতারা হোটেল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকছে তাঁর চিরবন্দিত কন্ঠ, সঙ্গে মঞ্চে থাকছে আকর্ষণীয় কোরিওগ্রাফি। অমিতাভ এতটাই সিরিয়াস যে রবিবার প্রায় মাঝরাতে শহরে কেন্দ্রস্থলে নন্দনমের ওয়াইএমসিএ মাঠে মহড়া সেরেছেন বাকি শিল্পীদের সঙ্গে। কিন্তু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ ঘুরে দেখতে গিয়ে হতাশই হতে হল। আম্মার দেশে সলমান খান আছেন, কিন্তু ‘বিগ বি’ নেই!
মাঠটায় ঢুকলেই চোখে পড়বে সবুজ কাপের্ট, লাল রঙের চেয়ার পাতা। চলছে শেষ মুহূর্তের তুলির টান, যুদ্ধকালীন তৎপরতা চারপাশে। তার মধ্যে সলমান খানের বিশাল কাটআউট। লাল রঙের ঝলমলে জ্যাকেট, কালো জিন্স পরে ‘বডিগার্ড’ হাসছেন! যেমন ভাবে মোড়ে মোড়ে বড় কাটআউটে হাসছেন জয়ললিতাও।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কাল আইপিএল ফাইভ মানে ক্রিকেট বিনোদনের দশকর্ম ভাণ্ডারে ঢুকে পড়ছেন বলে খবর নেই। রজনীকান্তের শহর যে খুব বেশি বলিউড ভক্ত, এমনও অভিযোগ কেউ তুলতে পারবে না। কিন্তু এ বারের ক্রিকেটযজ্ঞের উদ্বোধনে সিংহভাগ জুড়ে শুধুই বলিউড। আরব সাগর তীরের নাচা-গানার সঙ্গে মার্কিন লাস্যময়ী পপ গায়িকার মিশেল। অমিতাভের কবিতা পাঠ অবশ্যই ‘ইউএসপি’। সঙ্গে বলিউডের বাজি সলমান খান, করিনা কপূর, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া এবং লেসলি লুইসের গান। স্থানীয় তারকা বলতে প্রভু দেবা। আর বিদেশি চমক পপ গায়িকা কেটি পেরি। যাঁর ‘ফায়ারওয়ার্কস’ নাকি দুলিয়ে দেবে গোটা স্টেডিয়ামকে, ‘আই কিস্ড আ গার্ল’ শুনে নাকি ভারতের নব্যপ্রজন্ম টপাটপ নতুন করে প্রেমিকার প্রেমে পড়বে। এমনটাই দাবি করেছেন কেটি। আজ মাঝরাতেই দলবল সহ এসে পড়ার কথা তাঁর।
কাল উদ্বোধন, তারপরই ৫৪ দিন ব্যাপী ধামাকাদার দে-দনা-দন ক্রিকেট। এখানে বিদেশে গিয়ে ক্রমাগত শর্ট পিচের সামনে কেঁদেকেটে একশা হওয়া নেই, টানা আটটা টেস্টে হার নেই, র্যাঙ্কিং চলে যাওয়া নিয়ে হাহুতাশ ভ্যানিশ, এশিয়া সেরা হওয়ার জন্য কোনও চাপ নেই। মাঠে নামো আর খেলে যাও ‘লাগে তুক, তো না লাগে তাক’ ক্রিকেট। ঝিনচ্যাক বাজনা আর চিয়ারকন্যাদের কোমরের ছন্দে শরীর দোলানো খাও-পিও ক্রিকেট।
চিপক চেন্নাই সুপার কিংসের পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে। চারধারে ধোনি, রায়না, অশ্বিন। গত দু’বারের চ্যাম্পিয়নদের এ বারের মন্ত্র, “রেইজ ইয়োর হ্যান্ডস” আর ‘হুইসল পোডু’। বাংলা মানে বলতে ‘হাত তুলুন’ আর ‘হুইসল পড়ার অপেক্ষা’।
হুইসল ওই পড়ল বলে। আর মাত্র চবিবশ ঘণ্টা। স্বাগত আইপিএল ফাইভ। |
|
|
|
|
|