নিজস্ব সংবাদদাতা • জয়পুর |
পিচ উঠে গিয়েছে আগেই। ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তার বেশিরভাগ অংশেই তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। আর দু-এক পশলা বৃষ্টি হলে সেটি রাস্তা না পুকুর, বোঝা দুষ্কর।
হাওড়া-জয়পুর থেকে মুকুন্দদিঘি পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে ১২ কিলোমিটার রাস্তার এমনই হাল। দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। জখম হন যাত্রীরা। দুর্ঘটনায় মৃত্যুও হয়েছে। কিন্তু টনক নড়েনি প্রশাসনের। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানোর পরে মাঝেমধ্যে কিছু সংস্কার হয়েছে। তা ছাড়া, এ পর্যন্ত পাকাপাকি ভাবে কোনও মেরামতিই হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
অথচ এই রাস্তা দিয়েই যেতে হয় জয়পুর পঞ্চানন রায় কলেজ, জয়পুর অমরাবাড়ি বিভূতিভূষণ গ্রামীণ হাসপাতাল, বিডিও অফিস, থানায়। এ ছাড়া, খালনা এলাকায় প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে যেতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। বেহাল রাস্তা দিয়েই বিপজ্জনক ভাবে চলে বাগনান-জয়পুর বাস, অটো, গাড়ি, মোটরবাইক, সাইকেল, ভ্যানরিকশা, লরি। |
জয়পুর ঘনশ্যামচকে বাড়ি বাবু হকের। তাঁর কথায়, “রাস্তাটি দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল। জয়পুর ব্যাসস্ট্যান্ড থেকে মুকুন্দদিঘি পর্যন্ত রাস্তাটি বহু জায়গায় ভেঙে গিয়েছে। বিশেষ করে জয়পুর বাসস্ট্যান্ড, কলসডিহি, খালনা, মোষগলির কাছে রাস্তা প্রচণ্ড খারাপ। এর ফলে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত যন্ত্রণাদায়ক হয়ে পড়েছে। প্রসূতিদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যা হয়।”
রাস্তার বাঁকগুলিও চওড়া করা হয়নি। রাস্তার যা অবস্থা তাতে বাস চালানো দুষ্কর। এক-এক জায়গায় রাস্তা বেশ সরু। ছোটখাট দুর্ঘটনা তো হচ্ছেই। কয়েক বার বাস উল্টে নয়ানজুলিতে পড়ে যাত্রীরা আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় মৃত্যুও হয়েছিল কয়েক জনের। বাগনান-জয়পুর রুটের বাস চালক সজল মল্লিক বলেন, “ওই রাস্তা দিয়ে খুব আস্তে, সাবধানে বাস চালাতে হয়। এ দিকে, একটু জোরে না চালালে যাত্রীরা ক্ষুদ্ধ হন। কিন্তু এই রাস্তায় স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চালানোর উপায় নেই। আস্তে চালানোয় নির্দিষ্ট সময়ে বাস নিয়ে পৌঁছনো যায় না। সমস্যায় পড়ি আমরা।” |
বাসমালিকদের অভিযোগ, রাস্তা খারাপ হওয়ায় বাসের যন্ত্রাংশ তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মালিকদের পক্ষে শঙ্কর সামন্ত বলেন, “রাস্তা মেরামতির জন্য বিডিও, পিডব্লুডি, স্থানীয় বিধায়কের কাছে আবেদন জানিয়ে কোনও কাজ হয়নি। বাসের যন্ত্রাংশ খারাপ হলে আমাদের ক্ষতি। দুর্ঘটনা হলে বাস ভাঙচুর, বাসকর্মীদের মারধর। এ ভাবে বাস চালানো সম্ভব নয়। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলেই রাস্তা মেরামতির দাবিতে বাস বন্ধ করে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” বিধায়ক অসিত মিত্র বলেন, “জয়পুর থেকে মুকুন্দদিঘি পর্যন্ত রাস্তাটি খুবই খারাপ। রাস্তা চওড়া করা জরুরি। গত বছরই বাস দুর্ঘটনায় কয়েক জন যাত্রী আহত হয়েছিলেন।” তাঁর আশ্বাস, “রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে পূর্ত দফতর (সড়ক)-এর সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শুরু হয়ে যাবে।”
|