নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তারাও আক্রান্ত হয়। ইটের আঘাতে আহত হন লিলুয়া থানার ওসি অনুপ ঘোষ-সহ কয়েক জন পুলিশকর্মী। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে বালি, মালিপাঁচঘড়া থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও জনতার ছোড়া ইটের সামনে বারবার পিছিয়ে আসতে হয় তাদের। পুলিশের সামনেই এক এক করে প্রায় ৪০টি অস্থায়ী গুমটি দোকান ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ঘাতক লরিটিতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কোনা মোড়ে বালি-জগাছা বিডিও অফিসের ছাদেও আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা।
এর মধ্যে আরও পুলিশ নিয়ে কোনা মোড়ে পৌঁছন হাওড়া সিটি পুলিশের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (উত্তর) রশিদমুনির খান। খবর যায় দমকলে। কিন্তু দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এলেও সেগুলিকে ঢুকতে বাধা দেয় জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি চালায় পুলিশ। নামানো হয় র্যাফ। ঘটনাস্থলে আসেন হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) অখিলেশ চতুর্বেদী। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। দমকলের চারটি ইঞ্জিন বিডিও অফিস ও দোকানগুলির আগুন আয়ত্তে আনে। ঘটনার পরে গভীর রাত পর্যন্ত এলাকায় পুলিশি টহল ছিল। অখিলেশবাবু বলেন, “কয়েক জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। কারা এই ঘটনা ঘটাল, তা দেখা হচ্ছে।” ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় বিধায়ক, তৃণমূলের রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও চামরাইলের পঞ্চায়েত প্রধান সুভাষ রায়।
দুর্ঘটনা ও ভাঙচুরের জেরে এ দিন অনেক রাত পর্যন্ত মুম্বই রোডে যান চলাচল ব্যাহত হয়। গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। অনেক গাড়িকে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ। রাস্তার পাশে দাউদাউ করে জ্বলছে গুমটি। রাস্তা জুড়ে গাড়ির ভাঙা কাচ। যানজটে আটকে থাকা বাস থেকে নেমে পড়েছেন যাত্রীরা। তাঁরা দু’হাত উপরে তুলে হাঁটাচলা করছেন। দোকানপাটও বন্ধ। গোটা এলাকা অন্ধকার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূলকর্মীরা জড়িত। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে রাজীববাবু বলেন, “তৃণমূলের কেউ এই ঘটনায় জড়িত নয়। স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতী এই কাজ করেছে তৃণমূলকে বদনাম করার জন্য।” |