এপ্রিলের ১০ তারিখের মধ্যে কর্মীদের বকেয়া বেতন মেটানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন কিংফিশার বিমানসংস্থার কর্ণধার বিজয় মাল্য। কিন্তু রবিবার রাতে মালিকের সেই ই-মেল পেয়ে কর্মীদের তরফে পাল্টা জানিয়ে দেওয়া হল, আজ মঙ্গলবার রাত আটটার মধ্যে বকেয়া বেতন হাতে না-পেলে কেউ কাজ করবেন না। কর্মীদের একাংশের মতে, এই প্রতিশ্রুতিও মাল্য রাখতে পারবেন না। অতীতেও যেমন কথা দিয়ে কথা রাখতে পারেননি তিনি।
তা হলে কেন এমন আশ্বাস? কর্মীমহলের ব্যাখ্যা: বেতন না-পাওয়া কর্মচারীরা যে এ বার ‘চরমপত্র’ দিতে চলেছেন, মাল্য তা আঁচ করেই এই চাল চেলেছেন। চলতি সপ্তাহেই শুরু হচ্ছে আইপিএল, যেখানে অন্যতম দল হিসেবে খেলবে বিজয় মাল্যের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। কিংফিশারের কর্মীদের একাংশের বক্তব্য: টুর্নামেন্ট উদ্বোধনের মুখে তাঁরই বিমানসংস্থার কর্মীদের ক্ষোভ তাঁকে যারপরনাই অস্বস্তিতে ফেলবে বুঝেই মাল্যের এই পদক্ষেপ। উল্লেখ্য, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সকে সরাসরি চিঠি দিয়ে আইপিএল বয়কটের আবেদনও জানিয়ে রেখেছেন বিক্ষুব্ধ কর্মীরা।
এই পরিস্থিতিতে ‘চাপে পড়ে যাওয়া’ কিংফিশার-কর্ণধার এখন সমস্যার সুরাহা খুঁজতে মরিয়া। মাল্যের ঘনিষ্ঠেরা সোমবার রাতেই মুম্বইয়ে কর্মী-প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চালাচ্ছেন, যদিও রাত পর্যন্ত সে চেষ্টা ফলপ্রসূ হওয়ার ঈঙ্গিত নেই। রবিবার রাতে মাল্য কর্মীদের লিখেছিলেন, “বিমানসংস্থার সঙ্গে আমার আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। গত ক’মাস ধরে একের পর এক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে আপনারাই ব্যক্তিগত স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে মাথা উঁচু করে সংস্থার জন্য লড়াই করেছেন। আমার অনুরোধ, আমার পাশে আরও একটু থেকে আমার হাত শক্ত করুন।” কিন্তু সে অনুরোধে যে চিঁড়ে ভেজেনি, এ দিনের ‘চরমপত্র’ থেকে তা স্পষ্ট। কারণ, গত জানুয়ারি ইস্তক তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না। কর্মীদের দাবি: মঙ্গলবারের মধ্যে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি-র বেতন হোক।
এ সবের মাঝেই উঠছে নানান প্রশ্ন। এত অর্থসঙ্কট হলে মাল্যের দল আইপিএলে খেলতে নামছে কী করে? কর্মীদের দাবি, এর সন্তোষজনক ব্যাখ্যা নেই। এবং ব্যাখ্য না-পেয়ে তাঁদের অসন্তোষ এ দিন এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে, দিল্লি-মুম্বইয়ে সংস্থার অনেক কর্মীরা কাজে যোগ দেননি। ফলে এই দু’শহর থেকে কিংফিশারের পাঁচটি উড়ান বাতিল করতে হয়েছে। |