অবশেষে কল্যাণীতে ১০০ একর জমি হাতে পেল রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দফতর। সম্প্রতি ওই জমি তুলে দিয়েছে রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর।
কল্যাণীতে তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক গড়ার জন্য ২০০৭ সালেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর জমি দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু সবুজ সঙ্কেত দিলেও প্রশাসনিক জটে জমি হস্তান্তর পর্ব আটকে ছিল। দাম বাবদ এখন কোনও টাকা নিচ্ছে না ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। ভবিষ্যতে জমির বাণিজ্যিক ব্যবহারের উপর নির্ভর করে দাম নির্ধারিত হবে। তবে তাদের শর্ত, জমির বাণিজ্যিক ব্যবহারের আগে তথ্যপ্রযুক্তি দফতরকে অনুমতি নিতে হবে।
ওই ১০০ একর জমির মধ্যে ৫০ একর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইনফর্মেশন টেকনোলজি (আই আই আই টি) তৈরির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পের জন্য বিনামূল্যেই জমি দিচ্ছে রাজ্য। বাকি ৫০ একরে তৈরি হবে তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক। তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের আশা, আই আই আই টি-র দৌলতে এখানে বিনিয়োগ টানা সহজ হবে। এতদিন যা পরিকাঠামোর অভাবে সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাতের কাছে থাকলে দক্ষ মানবসম্পদের জোগান পাওয়া যাবে। আর এই বাড়তি সুবিধার জন্য এখানে লগ্নি করতে আগ্রহী হবে বিভিন্ন সংস্থা।
সড়ক ও সংশ্লিষ্ট পরিকাঠামোর নিচু মানই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কলকাতা থেকে মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দূরে কল্যাণী তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে লগ্নি টানার প্রক্রিয়ায়। এই কারণেই ২০০৮ সালে কল্যাণীর জমি বাতিল করেছিল ইনফোসিস ও উইপ্রো। সেই একই কারণে পরে এখানে জমি নিতে আপত্তি জানিয়েছেন চিত্র পরিচালক সুভাষ ঘাই ও এসার গোষ্ঠীর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা এইজিস। শাপুরজি পালোনজি, ইউনিটেক ও ডি এল এফ-এর মতো নির্মাণ সংস্থা পার্ক গড়তে আগ্রহ প্রকাশ করলেও পরে পিছিয়ে যায়।
রাজারহাট ও সল্টলেকের পরে পরবর্তী তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র হিসেবে শিলিগুড়ির পাশাপাশি কল্যাণীকে অবশ্য আগেই বেছে নিয়েছে রাজ্য। বিশেষজ্ঞ সংস্থা প্রাইসওয়াটারহাউস কুপার্স-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে এই দু’টি অঞ্চলে পি পি পি মডেলে তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয় বিগত সরকার। রাজারহাট ও সল্টলেকে জমির আকাশছোঁয়া দাম ও স্থানাভাবে নাজেহাল রাজ্য সরকারের আশা ছিল কল্যাণীতে আগ্রহী সংস্থাগুলিকে জমি দেওয়া যাবে সহজেই। শিলিগুড়িতে পরিকল্পনা অনেকাংশে বাস্তবায়িত হলেও কল্যাণী এখনও শুধুই খাতায় কলমেই থেকে গিয়েছিল। |