মহকুমার বিভিন্ন রুটের বাস ও মিনিবাস চালকদের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ আসানসোলের বাস মালিকেরা। তাঁদের অভিযোগ, মহকুমাশাসকের কাছে সমস্যা সমাধানের আবেদন জানিয়েও ফল হয়নি।
আন্দোলনে নেমেছে পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। মহকুমাশাসক অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল মহকুমায় প্রায় সাড়ে চারশো মিনিবাস ও আড়াইশো বড় বাস চলাচল করে। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন দু’হাজারেরও বেশি চালক। অভিযোগ, তাঁদের অনেকেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ হচ্ছে না। আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় জানান, ড্রাইভিং লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ না হওয়ায় শুধু চালকেরাই নন, বাস মালিক ও যাত্রীরাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ না হলে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লাইসেন্স না থাকলে বাস চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হবেন চালক। সেই ভয়ে চালকেরা বাস চালাতে অস্বীকার করলে পরিষেবা বিঘ্নিত হবে। যদি কোনও ভাবে বাস দুর্ঘটনায় পড়ে তা হলে বাস মালিক ও যাত্রীরা দুর্ঘটনা জনিত বিমার টাকা পাবেন না। আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, “আমরা মহকুমাশাসকের কাছে বহুবার এই সমস্যা সমাধানের আবেদন করেছি। কিন্তু প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই।”
বাস চালকেরা আরও অভিযোগ করেন, পরিবহণ দফতর তাঁদের জানিয়েছে, ড্রাইভিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে উপযুক্ত শংসাপত্র জমা দিলেই তাঁদের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করা হবে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক সংগঠনগুলি। আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত পরিবহণ কর্মী ইউনিয়নের সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়া বলেন, “বহু দিন ধরে এই সমস্যায় রয়েছেন চালকেরা। লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ না হওয়ায় অনেকে বাস চালাতে ভয় পাচ্ছেন। ফলে তাঁরাও অর্থ সঙ্কটে পড়ছেন।” সোমবার তাঁদের সংগঠনের তরফে মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
আইএনটিইউসি অনুমোদিত পরিবহণ কর্মী সংগঠনের সম্পাদক সঞ্জয় সেনগুপ্তের অভিযোগ, “আমরা পরিবহণ দফতরের আধিকারিককে চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু কোনও ফল হচ্ছে না।” সিটুর তরফে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রীকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে জানান সিটু অনুমোদিত পরিবহণ কর্মী সংগঠনের নেতা সত্যপ্রকাশ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সাত দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে আমরা অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করব।”
বাস চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ না হওয়ায় যে সমস্যা হচ্ছে, তা স্বীকার করেছেন মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্ত। তিনি বলেন, “মাঝে কিছু কারিগরি সমস্যা হওয়ায় ড্রাইভিং লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের কাজ থমকে ছিল। কিন্তু এত দিনে তা মিটে যাওয়ার কথা।” তাঁর আশ্বাস, সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের ডেকে এ নিয়ে খোঁজখবর করা হবে। |
