নগদ ২০০ টাকা আর নতুন জামা। মদ ছাড়ার অঙ্গীকার করে এই পুরস্কার পেলেন বসিরহাটের রাজেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের আন্দুলপোতা গ্রামের রাজকুমার মণ্ডল, রাধাপদ সিংহ, বিশ্বনাথ বাড়ুইয়ের মতো ২০ জন। রবিবার গ্রামের রহমানিয়া মাদ্রাসা মারকাজ কর্তৃপক্ষ বিডিও (বসিরহাট-২) তাপস বিশ্বাসের হাত দিয়ে ওই পুরস্কার তুলে দেন। |
গ্রামবাসীরা অধিকাংশ দিনমজুর। দিনের শেষে গ্রামের নানা ঠেকে চোলাই বা হাঁড়িয়া খাওয়ার রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে নানা বাড়িতে অশান্তি লেগে রয়েছে। অভাবের সংসারে মদের পিছনে বাড়ির পুরুষেরা যে ভাবে টাকা ওড়ান, তা মানতে পারেন না মহিলারা। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা চালাতে তাঁরা বিপাকে পড়েন। কিন্তু সমস্যার সুরাহা হচ্ছিল না। এই পরিস্থিতিতেই এগিয়ে এসেছেন ওই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। গত কয়েক দিন ধরে তাঁরা মদের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছেন গ্রামে। তার ফলেই এ দিন এগিয়ে এলেন ২০ জন। মাদ্রাসা চত্বরেই একটি শিক্ষামূলক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে আসা কয়েকশো মানুষ ও পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকরা।
সকলের সামনেই মদ ছাড়ার অঙ্গীকার করেন রাজকুমার মণ্ডল, রাধাপদ সিংহেরা। তবে, পুরস্কারের আশায় তাঁরা এ কাজ করেননি বলেই দাবি তাঁদের। রাজকুমার বলেন, “অনেক বার ভাবলেও মদ ছাড়তে পারছিলাম না। রাত হলেই নেশা পেয়ে বসত। অনেক টাকা নষ্ট করেছি। আর নয়। মাদ্রাসার প্রচারের সময়েই ঠিক করি, এ বার মদ ছাড়ব। পুরস্কারের জন্য ছাড়িনি।” বিশ্বনাথ বলেন, “সংসারের অনেক ক্ষতি করেছি। আর নয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আমাদের চোখ খুলে দিয়েছেন।” গ্রামে মদের বিরুদ্ধে প্রচারে নামারও প্রতিশ্রুতি দেন তাঁরা। মাদ্রাসার সম্পাদক আসমত আলি বলেন, “প্রচারে সাড়া দিয়ে প্রথম দফায় ২০ জন গ্রামবাসী এগিয়ে এসেছেন, এটাই অনেক। গ্রাম থেকে মদের নেশা পুরোপুরি দূর করতে হবে। আগামী দিনেও যাঁরা এ ভাবে এগিয়ে আসবেন, তাঁদেরই পুরস্কৃত করা হবে।” মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের প্রশংসা করেন বিডিও। |