চেঙ্গাইলে হুগলি নদীর ধারে ‘নেপালি ঘাট’ নামে পরিচিত খেয়াঘাটটিতে কোনও জেটি নেই। ফলে নৌকায় করে যাঁরা এখান থেকে হুগলি নদী পারাপার করেন তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন। ঘাটটি বেশ পুরনো। এখান থেকে দিনে হাজার দ’শেক মানুষ নৌকায় পারাপার করে উল্টো দিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পূজালিতে যাতায়াত করেন।
নেপালি ঘাটের ঠিক উল্টো দিকেই সিইএসসি-র পূজালি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। এখানে বহু মানুষ প্রতিদিন উলুবেড়িয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকরি করতে আসেন। এ ছাড়া, পূজালি খেয়াঘাট পার হয়েই আসা যায় বজবজ রেল স্টেশনে। এই স্টেশন থেকে অনেকে ট্রেন ধরে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করেন। কিন্তু নেপালি ঘাটের কাছে গঙ্গার পাড়ের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে যন্ত্রচালিত নৌকায় ওঠানামা করতে গিয়ে যাত্রীরা সমস্যায় পড়েন। |
উলুবেড়িয়া ছাড়াও বাউড়িয়া, পাঁচলা প্রভৃতি এলাকার বহু মানুষও খেয়াঘাট থেকে নদী পারাপার করেন। এই ঘাটটিতে একসময়ে স্থায়ী এবং ভাসমান দু’ধরনেরই জেটি ছিল। জোয়ার-ভাটার সময়ে নৌকায় উঠতে যাত্রীদের কোনও অসুবিধা হত না। কিন্তু পরবর্তীকালে স্থায়ী জেটিটি ভেঙে যায়। নষ্ট হয়ে গিয়েছে ভাসমান জেটিও। ফলে জোয়ারের সময়ে খুব একটা অসুবিধা না-হলেও ভাটার সময়ে যাত্রীদের প্রাণান্তকর অবস্থা হয়। কাদা ভেঙে ওঠানামা করেন মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা অনাথবন্ধু মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রায় চল্লিশ বছর ধরে এই ঘাট দিয়ে যাতায়াত করছি। আগে জেটি থাকায় নৌকায় করে নদী পার হওয়া বেশ আরামের ছিল। কিন্তু এখন কী ভাবে যে যাতায়াত করতে হয়, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।” অহনা বসু নামে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বলেন, “নদী পার হয়ে বজবজ স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত আমার পক্ষে বেশ সুবিধাজনক। জোয়ারের সময়ে অসুবিধা না-হলেও ভাটার সময়ে বিপাকে পড়ি। বেশির ভাগ দিনেই নদীপথে যাতায়াত করতে পারি না।”
এলাকাটি উলুবেড়িয়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড-এর অন্তর্গত। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পূর্ত দফতরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পারিষদ শেখ সেলিম বলেন, “একটি জেটি ঘাট এবং উদ্যান করার জন্য আমি চেয়ারম্যানের কাছে প্রস্তাব দিয়েছি।” তবে এখনই যে এ বিষয়ে কিছু করা যাবে না সেই বিষয়টি জানিয়ে চেয়ারম্যান দেবদাস ঘোষ বলেন, “উলুবেড়িয়ায় একটি জেটিঘাট নির্মাণ করা হবে। সেটিই অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। তারপরে নেপালি ঘাটের বিষয়ে চিন্তাভাবনা হবে।” |