কোথাও দেওয়ালের পলেস্তরা খুলে পড়ছে। কোথাও আগাছার শেকড় বেরিয়ে রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে আবার জল ঢুকে ভেসে যাচ্ছে মেঝের একাংশ। শব্দ নিয়ে হ্যাপাও বিস্তর রয়েছে। সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় কোচবিহার শহরের রবীন্দ্র ভবনের বেহাল হয়ে পড়া দশা ঘোচাতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। এ জন্য ২০১০-১১ আর্থিক বছরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের বরাদ্দ ১৪ লক্ষ টাকা খরচ করে কাজও শুরু হয়েছে। বাংলা নববর্ষের আগে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহের আগেই পুরো কাজ সম্পূর্ণ করার তোড়জোড় চলছে। কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে থাকা ওই ভবনটির চেহারা অনেকটা বদলে যাবে। পাশাপাশি সেটি অনেকবেশি ব্যবহার যোগ্য হয়ে উঠবে। |
জেলা পরিষদের সভাধিপতি দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “সংস্কারের অভাবে ভবনটি বেহাল হয়ে পড়েছিল। সেটির হাল ফেরাতে নানা মহলে দরবার করে গত আর্থিক বছরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ থেকে যা বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছে তা দিয়ে প্রাথমিক সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। যতটা সম্ভব ভবনের হাল ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে।জেলা প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, শহরের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা সভা আয়োজনের অন্যতম ভরসা ওই ভবন। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সেটির দেওয়াল জুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে পলেস্তরা খসে পড়ছে। বেশ কিছু অংশের লোহার রড বেরিয়েও রয়েছে। ভেতরে বসবার বহু চেয়ার ভেঙে যাওয়ায় দর্শকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। বৃষ্টির সময় ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ায় ওই ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। বসবার আসনের সামনের দিকের সারির নিচে জল থইথই চেহারা নেয়। দরজা, জানালা, অ্যাসবেস্টস শেড, প্রতিধ্বনি নিরোধক ব্যবস্থাও বেহাল হয়ে রয়েছে। অনুষ্ঠান করতে উদ্যোক্তাদেরও ভোগান্তি পোহাতে হয়। সমস্যা মেটাতে গত আর্থিক বছরে বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাব পাঠান জেলা প্রশাসনের কর্তারা। বরাদ্দ ১৪ লক্ষ টাকা খরচ করে সংস্কারের পাশাপাশি ভবনের প্রবেশ গেটের সামনের দিকের সীমানা পাঁচিল নতুন ভাবে সাজিে তোলার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। সংস্কারের দায়িত্বে থাকা কোচবিহার জেলা পরিষদের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “ভবনের ৮০টি অ্যাসবেস্টস শিট ইতিমধ্যে পাল্টানো হয়েছে। মেরামত করা হয়েছে ভাঙা চেয়ার, দরজা-জানালাও। নজর কাড়বে সামনের দিকের সীমানা পাঁচিল ও রেলিঙের মাধ্যমে সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা। কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেছেন, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ গত আর্থিক বছরে এজন্য ১৪ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। সেটা দিয়েই কাজ হচ্ছে। আর কিছুদিনের মধ্যে তা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সামনের দিকের সৌন্দর্যায়নের ভাবনা মাথায় রেখে সীমানার পাঁচিল ও রেলিঙে থাকছে কোচবিহারের রাজাদের আমলে তৈরি বিভিন্ন বাড়ির অনুকরণ। আগের পুরো দেওয়ালের ঘেরাটোপ ভেঙে তা করা হচ্ছে। |