কাঁটাতারের বেড়ার ওপারের গ্রামের প্রাথমিক স্কুল ভবনে গিয়ে সরকারি কাজে নিযুক্ত একদল শ্রমিককে মারধর করে রাতভর আটকে রাখার অভিযোগ উঠল বিএসএফের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের ধলপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে। কাঁটাতারের বেড়ার ওপারের গ্রামটিতে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বিদ্যুদায়নের কাজ চলছে। ঠিকাদারের মাধ্যমে গত ১০ দিন ধরে গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি পুঁতছেন শ্রমিকরা। ওই দিন রাতে জওয়ানরা গ্রামের স্কুলে ওই শ্রমিকদের উপরে হামলা চালান বলে অভিযোগ। মারধরের সময়ে ওই শ্রমিকেরা রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। জওয়ানরা শ্রমিকদের ভাতের থালাও উল্টে দেন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি ওই এলাকায় বিএসএফের ৯৬ নম্বর ব্যাটেলিয়ন নজরদারির দায়িত্বে এসেছে। বিএসএফের যুক্তি, জওয়ানদের ওই দলটির এলাকার সম্পর্কে এখনও ধারণা হয়নি। সরকারি প্রকল্প সম্পর্কেও তাঁদের জানা ছিল না বলে এমন ঘটনা ঘটেছে। |
এলাকার ফাঁড়ির কমান্ডার রাজেশ শর্মার বলেন, “ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমন ঘটনা হয়ে থাকতে পারে। তবে সমস্যা মিটে গিয়েছে।” একই দাবি করেছেন জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী। তিনি বলেন, “এক সপ্তাহ হল ওই এলাকায় নতুন বিএসএফ ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা নিযুক্ত হয়েছেন। এলাকা সম্পর্কে তাদের কোনও ধারণা নেই। কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে হলেও ওই গ্রামটি ভারতীয় ভূখন্ডে। সে সম্পর্কেও জওয়ানদের অজ্ঞতার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। বিএসএফ কর্তৃপক্ষকে বলেছি। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে ওই ফাঁড়ির বিএসএফ কমান্ড্যান্টকে সতর্ক করেছেন।” রাতে জওয়ানদের হাতে প্রহৃত শ্রমিক বিপুল প্রামাণিক, মন্টু কিসকু, রাজেশ রবিদাসেরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, জওয়ানেরা লাথি মেরে ভাতের থালা উল্টে দিয়ে পেটাতে থাকেন। রাতভর আটকে রাখার পর গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। স্কুল বাড়ির ভেতর শ্রমিকদের চিৎকার শুনেও গ্রামবাসীরা ভয়ে বার হতে পারেননি। এদিন ভোর হতেই গ্রামের লোকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। খবর যায় তৃণমূল বিধায়ক তথা কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর কাছে। কারামন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিতেই প্রশাসনিক কর্তারা নড়েচড়ে বসেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার সীমান্ত এলাকার গ্রামগুলিতে বিদ্যুত সংযোগের এক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতার কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এদিন এলাকায় গেলে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন, নতুন বিএসএফ আসার পর থেকে যাতায়াতে বাধা দিয়ে তারা হুমকি ও মারধর করছে। এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অনিল রায় অভিযোগ করেন, “ভোটের পরিচয়পত্র দেখানোর পরেও জওয়ানদের একাংশ কথা বুঝতে চান না। নানা অছিলায় গ্রামের লোকজনকে লাঠিপেটা খেতে হচ্ছে বলে লোকজন অভিযোগ করেছেন।” |