|
|
|
|
পুরসভার অনুমতি থাকলেই চলবে |
বাড়ি নির্মাণের নিয়মে বদল, বৈঠকে সিদ্ধান্ত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
জলপাইগুড়ি শহরে বাড়ি তৈরি করতে আগামী এপ্রিল মাস থেকে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) কোনও ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে না। শুধুমাত্র পুরসভার অনুমতি থাকলেই বাড়ি তৈরি করা যাবে। শুক্রবার জলপাইগুড়ি পুরসভার মাসিক বৈঠকে সর্বসন্মতিভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। এতদিন শহর এলাকায় বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে প্রথমে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিকে এসজেডিএর কাছে জমির নথিপত্র জমা দিতে হত। নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে সেই জমিতে বাড়ি তৈরির ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হত। তারপরে সেই ছাড়পত্র এবং বাড়ির নকশা পুরসভায় জমা দিয়ে পুরসভার অনুমতি নিয়ে বাড়ি তৈরি করাই নিয়ম ছিল। পুরসভার এদিনের সিদ্ধান্তের প্রতিলিপি এসজেডিএ এবং রাজ্য সরকারকেও পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেও এই সিদ্ধান্ত জানাবে পুরসভা। যাতে নতুন নিয়মে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে ঋণ পেতে বাসিন্দাদের কোনও সমস্যা না হয়। জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “সাধারণ মানুষের হয়রানি কমাতেই সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএম কাউন্সিলর প্রমোদ মন্ডল বলেন, “নীতিগতভাবে আমরা বিষয়টি সমর্থন করেছি। বাড়ি তৈরি করতে দুই জায়গা থেকে কেন অনুমতি নিতে হবে। পুরসভার নথিতে লেখা ছিল, বাড়ির পরিকল্পনা পাশের জন্য এসজেডিএ ফি নেয়, এটা ঠিক নয়। এসজেডিএ যে ফি নেয় তা জমির ছাড়পত্র দিতে। তবে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে কেন একই ব্যাক্তিকে দুইবার টাকা জমা দিতে হবে?” এই বিষয়ে এসজেডিএ-র জলপাইগুড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক দীপেশ বণিক বলেন, “পুরোটাই তো পুরসভার নিজস্ব বিষয়। ওঁরা আমাদের এখনও কিছু জানাননি।” সিদ্ধান্তের কারণ হিসাবে তিনটি যুক্তি পুরসভার মাসিক বৈঠকের কার্যবিবরণীতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। প্রথমত বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে দুই জায়গা থেকে অনুমতি সংগ্রহ করার ঘটনা রাজ্যে নজিরবিহীন। পুরসভার পরিকাঠামো থাকলে নিজেই বাড়ি তৈরির অনুমতি দিতে পারে। সেখানে অন্য কোনও সংস্থা থেকে একই ধরনের অনুমতি সংগ্রহ যুক্তিগ্রাহ্য নয়। দ্বিতীয়ত, ছাড়পত্র নিতে হলে এসজেডিএকে জমির প্রতি বর্গফুট হিসেবে ফি জমা দিতে হয়। জমির চরিত্র পরিবর্তন এবং জমির সাইট ম্যাপ তৈরির জন্য এসজেডিএ ওই ফি নিয়ে থাকে। নিয়ম অনুযায়ী পরে ওই ফি পুরসভার তহবিলে জমা পড়ার কথা। কিন্তু ছাড়পত্র দিয়ে এসজেডিএ ফি নিলেও সেই ফি কোনও দিনই জলপাইগুড়ি পুরসভাকে দেয়নি। তৃতীয়ত, ছাড়পত্র দিতে এসজেডিএ দীর্ঘ সময় লাগিয়ে দেয়। পুর চেয়ারম্যান মোহনবাবু বলেন, “নিয়ম থাকলেও এসজেডিএ জমির ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য সংগ্রহ করা ফি পুরসভাকে জমা দেয়নি। এতদিনে সেই টাকার পরিমাণ কয়েক কোটিতে দাঁড়িয়েছে। সেই টাকা ফেরৎ দেওয়ার দাবিও জানিয়েছি।” পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কথা চলছিল। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার বা রাজ্যের অন্য কোনও শহরে বাড়ি তৈরি করতে এই ধরণের ব্যবস্থা নেই। পুরসভা প্রাপ্য ফি তো এতদিন পাইনি, উল্টে বাসিন্দাদের হয়রান হতে হয়েছে।” |
|
|
|
|
|