হোটেল ও লাগোয়া বাড়ির ছাদের দূরত্ব ৩ ফুট। সেই সুযোগে লাগোয়া বাড়ির ছাদে গিয়ে এক মানসিক প্রতিবন্ধী তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে শিলিগুড়ি থানার হিলকার্ট রোডের সেবক মোড়ে। পুলিশ গিয়ে হোটেলটি ‘সিল’ করে দেয়। তার পরে গণধর্ষণে জড়িত সন্দেহে হোটেলের ৫ কর্মীকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম বিকাশ ওঁরাও, রাজু দাস, বিকি ঘোষ, কমল শাহ, কিসান রাউত। এদের মধ্যে রাজু গত দেড় মাস ধরে হোটেলে ওয়েটারের কাজ করছে। বাকিরা এক বছরের পুরনো কর্মী। বিকি হোটেল মালিকের আত্মীয়। ওই তরুণীকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার আনন্দ কুমার বলেন, “পাঁচ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই তরুণীর মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওই এলাকাটি শিলিগুড়ি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে পড়ছে। সেখানকার কংগ্রেস কাউন্সিলর রুমা নাথ বলেন, “ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমরা পুলিশের কাছে সে দাবি জানিয়েছি। ওই ভবন দু’টির নকশা বাম আমলে শিলিগুড়ি পুরসভা থেকে পাশ হয়েছে। বেআইনি ভাবে এটা করা হয়েছে। দুই ভবনের মালিকপক্ষের বাড়ির নকশা খতিয়ে দেখে পুরসভা কঠোর ব্যবস্থা নেবে।” |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেবক রোডের ওই হোটেলটি চারতলা। পাশের বাড়িটি পাঁচতলা। চারতলায় মানসিক প্রতিবন্ধী তরুণীটির পরিবারের বসবাস। পাশের হোটেলের চার তলার ছাদের একটি ঘরে কর্মীরা থাকে। পুর বিধি অনুযায়ী দু’টি ভবনের মধ্যে দূরত্ব ৮ ফুট থাকতে হবে। কিন্তু ওই ভবন দু’টির দূরত্ব মাত্র ৩ ফুট। আবার দুই ভবনের মাঝে চার তলায় একটি টিনের শেড তৈরি করা হয়েছে। যা দিয়ে অনায়াসে হেঁটে দু’টি বহুতলে যাতায়াত করা যায়। তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, রাত ১২টা নাগাদ হোটেলের ওই ৫ কর্মী বাড়ির ভিতরে ঢুকে যায়। তরুণীকে ডেকে তারা পাঁচতলার ছাদে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ৫ জনের মধ্যে ৩ জন ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। বাকি দু’জন পাহারা দেয়। তরুণীর চিৎকারে পরিবারের সদস্যেরা বিষয়টি আঁচ করে বাড়ির ছাদে যায়। সেই সময় অন্য একটি সিঁড়ি দিয়ে নেমে হোটেলের ছাদে চলে যায় অভিযুক্তেরা।
হোটেল মালিক গদাই ঘোষ জানান, হোটেলের ৪ কর্মী ছাদের ঘরে ছিলেন। বিকি-সহ ৩ জন কনফারেন্স রুমে ঘুমিয়েছিল। পুলিশ যাওয়ার পর বিষয়টি হোটেলের সবাই জানতে পারে। তিনি বলেন, “আমি খোঁজখবর নিয়ে যেটুকু জানতে পেরেছি তাতে রাজুর সঙ্গে মেয়েটির সম্পর্ক ছিল। সে রাতে রাজুই বাড়ির ছাদে যেতে পারে। অন্যরা যায়নি।
পুলিশ তদন্ত করলে সব পরিষ্কার হবে।” তাঁর হোটেল পুরবিধি মেনেই তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন। পক্ষান্তরে, পাশের বাড়ির লোকজন জানান, তাঁরা যা জানানোর পুলিশ ও পুরসভাকে জানিয়েছেন। |