ভিডিও কনফারেন্স-সহ এক গুচ্ছ উদ্যোগ, কর্পোরেট হচ্ছে বিজেপি
গামী লোকসভা ভোট মাথায় রেখে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থা চালু হচ্ছে বিজেপি-তে। এই ব্যবস্থায় দেশের প্রতিটি রাজ্য বিজেপি দফতর এবং দলের কেন্দ্রীয় দফতর পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হবে। যে কোনও মুহূর্তে যে কোনও বিষয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের জরুরি বৈঠকের দরকার হলে তড়িঘড়ি বিমান বা ট্রেন ধরে দৌড়তে হবে না। দলীয় দফতরে বসেই সেরে নেওয়া যাবে আলোচনা।
এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে বিজেপি-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য দফতর। সেখানে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর জন্য কারিগরি কাজকর্ম শুরু হয়েছে। কেনা হবে নতুন টিভি। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব উত্তরবঙ্গ বিজেপি-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কথা ভাবছেন। তার জন্য শিলিগুড়িতে বাড়িও খোঁজা হচ্ছে। বাড়ি পেলে সেখানেই ভিডিও কনফারেন্সিং-এর কারিগরি ব্যবস্থা চালু হবে। রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের যোগাযোগের ব্যয়ের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বহন করলেও রাজ্যের মধ্যে যোগাযোগের ব্যয়ভার বহন করতে হবে রাজ্য নেতৃত্বকেই।
বিজেপি-র একাংশ এই ব্যবস্থাকে দলের ‘কর্পোরেটায়ন’ হিসাবেই ব্যাখ্যা করছে। তবে তার বিরোধিতা করছে না। তাদের বক্তব্য, আধুনিক সমাজের সঙ্গে তাল রেখে চলতে এই ব্যবস্থা দরকার। এতে সময় বাঁচবে এবং আধুনিক প্রজন্মের কাছেও বিজেপি-র গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হবে।
দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিং চালু হবে দ্বিতীয় ধাপে। প্রথম ধাপে সব রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ওই ব্যবস্থায় যুক্ত হবেন। এতে যে কোনও জরুরি বৈঠকের ক্ষেত্রে বিরাট সুবিধা হবে। হঠাৎ আলোচনার দরকার পড়লে দৌড়ে কোথাও যেতে হবে না। কোনও নথিপত্র হাতে এলে এক রাজ্যের বা কেন্দ্রের নেতৃত্ব অন্য রাজ্যকে তা দেখাতে পারবেন।”
‘কর্পোরেটায়ন’-এর পথে হেঁটে আরও দু’টি কাজ করছে বিজেপি। ‘যত খুশি লোক আনো’ আর ‘যেমন খুশি সাজাও’এই দু’টি ইভেন্টে দলের অন্দরে প্রতিযোগিতা চালু হচ্ছে। যেমন কর্পোরেট সংস্থাগুলিতে সফল কর্মীদের ‘ইনসেন্টিভ’ দেওয়া হয়, তেমনই ওই দুই ইভেন্টে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানাধিকারীকে পুরস্কারও দেওয়া হবে। গত প্রায় আড়াই বছরের বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনের ছবি এবং সেগুলি সম্পর্কে নানা সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে একটি রঙিন বই প্রকাশ করতে চলেছে বিজেপি। কর্পোরেট সংস্থাগুলির মধ্যে যেমন ‘হাউস ম্যাগাজিন’ বা ‘হোম পেজ’ প্রকাশের রীতি আছে। বিজেপি-র সর্বভারতীয় মুখপাত্র তথা সাংসদ প্রকাশ জাভড়েকর আগামি কাল, শনিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ওই বই আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করবেন। দলীয় কর্মীদের সংগঠন বিস্তারে উৎসাহিত করতেই প্রতিযোগিতা এবং বই প্রকাশের উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
গত ৬ জানুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় জনসভা করেছেন রাহুল। তাঁর জেলা সফর এবং জনসভাগুলির আনুষ্ঠানিক নাম ছিল ‘জনচেতনা যাত্রা, ২০১২’। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সব চেয়ে বেশি লোক হয়েছিল বীরভূমে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে ছিল মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া জেলা। শিলিগুড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর দিনাজপুরের সভার আয়োজকরা মঞ্চ এবং তার লাগোয়া এলাকা সুন্দর ভাবে সাজিয়েছিলেন। ফলে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের মধ্যে বিজেপি-র নান্দনিকতার বোধ সম্পর্কে ‘ভাল বার্তা’ গিয়েছে বলে দলের দাবি। বিজেপি নেতৃত্বের বিচারে, নান্দনিকতা বোধে প্রথমে শিলিগুড়ি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় যথাক্রমে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর দিনাজপুর। লোক সমাগমে শীর্ষ তিন এবং নান্দনিকতায় শীর্ষ তিন মোট ছয় জেলার সভাপতিদের পুরস্কৃত করা হবে। দেওয়া হবে মানপত্রও।
ভিডিও কনফারেন্সিং, ইনসেন্টিভ, হাউস-ম্যাগাজিন ঘরে একুশ শতক পেরোচ্ছেন রাহুল। বাইরে তার কতটা ছাপ ফলতে পারেন, দেখার সেটাই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.