উনিশ শতকের কলকাতায় প্রবাসী রাজস্থানীদের ইতিহাস, বাংলার সঙ্গে তাঁদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক না জানলে শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ ভাব-আন্দোলনের একটা বড় অংশ বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাবে। শুক্রবার, রাজস্থান দিবসে ‘রাজস্থান বেঙ্গল মৈত্রী পরিষদ’-এর উদ্যোগে কলকাতার ‘মার্চেন্টস চেম্বার অফ কমার্স’-এ এই কথাই জানিয়ে গেলেন বিভিন্ন বক্তা।
রাজস্থানের খেতড়ি, আলোয়ার, জয়পুরে বিবেকানন্দের থাকা ইতিমধ্যেই ইতিহাস! কিন্তু তার আগে? লেখক শঙ্কর এ দিন খেয়াল করিয়ে দিলেন, বিবেকানন্দের পিতা বিশ্বনাথ দত্তের ‘সুলোচনা’ উপন্যাসে তখনকার রাজস্থানী ব্যবসায়ীদের কুঠির কথা আছে। এমনকী, ‘শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত’তেও লক্ষ্মীনারায়ণ নামে এক রাজস্থানি ভক্তের উল্লেখ পাওয়া যায়। রাজস্থানের খেতড়ি রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী আত্মনিষ্ঠানন্দও এ দিন উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। |
তিনি মনে করিয়ে দিলেন, শ্রীরামকৃষ্ণের প্রথম সন্ন্যাসী শিষ্য রাজস্থানের নারায়ণ শাস্ত্রী। শাস্ত্র অধ্যয়ন করতে বাংলায় এসেছিলেন, তার পর রামকৃষ্ণের বৈরাগ্যে মুগ্ধ হয়ে তাঁর কাছে সন্ন্যাসদীক্ষা নেন। “রামকৃষ্ণ কিন্তু বিবেকানন্দ, ব্রহ্মানন্দদেরও সরাসরি সন্ন্যাসদীক্ষা দেননি,” মনে করিয়ে দিলেন তিনি। এ ভাবেই স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধশতবর্ষে কলকাতা স্মরণ করল রাজস্থানের সঙ্গে তার ঐতিহাসিক সম্পর্ককে। কে না জানে, খেতড়ির রাজাই পরিব্রাজক সন্ন্যাসীকে ‘বিবেকানন্দ’ নামটি পাকাপাকি রেখে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন, জাহাজে প্রথম শ্রেণির টিকিট কিনে দিয়েছিলেন, চিকাগো ধর্ম মহাসভার পরিচিত সেই গৈরিক উষ্ণীষ ও রেশমি আলখাল্লা কিনে দিয়েছিলেন! “বিবেকানন্দ নিশ্চয় বিবেকানন্দ হতেন, কিন্তু খেতড়ি ছাড়া হয়তো তাঁর চিকাগো সফর হত না,” বলছিলেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য, ইতিহাসবিদ ভারতী রায়। বিবেকানন্দের সার্ধশতবর্ষে এ ভাবেই ‘মৈত্রী পরিষদ’-এর
উদ্যোগে রাজস্থানকে কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করল কলকাতা! |