স্কুল বাড়ি বলতে সাকুল্যে একটা ইটের ঘর। চেয়ার-টেবিল-বেঞ্চ সবই বাহুল্য! পড়ুয়াদের বসার জন্য বরাদ্দ এক টুকরো ছেড়া বস্তা। নাম মাত্র সেই ঘরেই চলছে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস।
ঠারেঠোরে এটাই ডোমকলের ইসলামটুলি গ্রামের শিশুশিক্ষাকেন্দ্র। ছাত্রছাত্রী সংখ্য ৭৩। একটা ঘরে পালা করে বস্তায় হাঁটু মুড়ে বসে তাদের পঠন পাঠন।
ইসলামটুলির ওই শিশু শিক্ষাকেন্দ্রর বয়স দশ বছর। ২০১০ সালে ওই কেন্দ্রের জন্য একটি পাকা বাড়িও তৈরি করা হয়। কেন্দ্রের সহায়িকা তাহেরা খাতুন বললেন, “এক সময় গাছতলাই ছিল ভরসা। ঘরটা তৈরি হয়েই যত বিপত্তি। সকলকে এক ঘরে বসাতে হয়। একেবারে হট্টমোলার দেশ। পড়াশোনা শিকেয় ওঠে।” কেন্দ্রের প্রধান সহায়িকা মাসুমা খাতুন বলেন, “আমাদের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম। আমাদের জন্য তাই সরকারি বরাদ্দ একটাই ঘর। বাড়তি ঘর করব কী করে। টাকা নেই তো।” তবে তা নামেই ঘর। জানালা, দরজার বালাই নেই। ঝড়-বৃষ্টি-ঠাঠা রোদ্দুর নিয়ে পড়ুয়াদের কলরবে সেই শিশু শিক্ষা কেন্দ্র নামেই স্কুল! |
কেবলমাত্র ইসলামটুলি নয়, ডোমকলের বেশিরভাগ শিশুশিক্ষাকেন্দ্রে ছবি প্রায় একই রকম। বাড়ি নেই। কোথাও আবার চালা বেঁধে গাছের তলায় পড়তে বসতে হয় ছাত্র-ছাত্রীদের। ইসলামটুলি শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের এক ছাত্র আমিনুল ইসলাম বলে, “সবাই এক সঙ্গে পড়তে বসলে কিছুতেই পড়ায় মন বসে না। কিন্তু আর তো ঘর নেই, তাই এক ঘরে বসেই পড়ি আমরা সবাই।” শিক্ষাকেন্দ্রের ছাত্রী পম্পা খাতুনের কথায়, “এক সঙ্গে পড়া শুরু হলে কেউ কারও কথা শুনতে পাই না। দিদিমণি কী বলছে তাও শোনা যায় না। কোনও মতে পড়া শেষ করতে হয়।” ডোমকলের বিডিও প্রভাসচন্দ্র দাস বলেন, “এ বছরেও আমরা ২৭টা শিশুশিক্ষাকেন্দ্রের বাড়ি তৈরির জন্য অনুদান পেয়েছি। ওই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে আবেদন করা হলে দেখব যদি বাড়তি ঘর তৈরির টাকা অনুমোদন দেওয়া যায় কিনা।” |