পূর্ব কলকাতা
পুর উদ্যোগ
সংস্কারের আশায়
ই গরমে জল সরবরাহের পরিকাঠামো সংস্কারে উদ্যোগী হল বিধাননগর পুরসভা। পাশাপাশি সংস্কার হবে নিকাশিরও। একই সঙ্গে বিভিন্ন রিজার্ভারে জলের মিটারও বসবে। এতে রিজার্ভারে ঢোকা এবং সরবরাহ করা জলের পরিমাণ বোঝা যাবে। সম্প্রতি চেয়ারম্যান পারিষদের বৈঠকে এই পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “এই গরমে জল নিয়ে যাতে বাসিন্দাদের কোনও সমস্যা না হয় তাই পরিকাঠামো সংস্কারের কাজ করা হবে।”
অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই গরমে বিধাননগরের বাসিন্দারা জলের সমস্যায় ভোগেন। মূল বিধাননগরের পাশাপাশি প্রান্তিক এলাকাতেও সমস্যা হয়। সেখানে জলের চাপ কমে যায় বলে অভিযোগ। এ বার তাই জলের ট্যাঙ্ক ও পাইপলাইন সংস্কারের কাজে হাত দিল বিধাননগর পুরসভা। পাশাপাশি নিকাশি সংস্কারের কাজও শুরু হল। এই প্রকল্পে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা খরচ হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। পুরকর্তৃপক্ষের দাবি, এই সংস্কারের ফলে জল সরবরাহের সমস্যা অনেকটাই মিটবে।
পুরসভা সূত্রে খবর, বিধাননগরে দৈনিক গড়ে ৯০ লক্ষ গ্যালন জলের প্রয়োজন। এর মধ্যে টালা-পলতা থেকে দৈনিক গড়ে ৪০-৫০ লক্ষ গ্যালন জল পায় পুরসভা। বাকি ভূগর্ভের জল। তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড দায়িত্ব গ্রহণের পরেই পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। পাশাপাশি, ভূগর্ভস্থ জলের বদলে ভূপৃষ্ঠের জল ব্যবহারে জোর দেওয়া হবে।
অভিযোগ, সে প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। বদলে জল নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা হচ্ছে। অনেক সময়ে জল কম মিলছে। আবার অনেক সময় জলের চাপ অনেক কম। যদিও পুরকর্তৃপক্ষের দাবি, পুরনো পরিকাঠামো সংস্কার করতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন। ফলে এক বারে সংস্কার সম্ভব নয়। অর্থের যোগান অনুযায়ী কাজ করা হবে।
পুরসভা সূত্রে খবর, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ওভারহেড ট্যাঙ্কগুলির আশু সংস্কারের প্রয়োজন। কোথাও ফাটল ধরেছে, কোথাও আবার কার্যকারিতা কমে গিয়েছে। পাশাপাশি পাম্পরুম, কম্প্রেসার রুম-সহ বিভিন্ন ঘরেরও অবস্থা বেহাল। ফলে অনেক সময় জল সরবরাহ করতে গিয়ে জল ‘ব্যাক ফ্লো’ করছে। দেখা যায়, অনেক জায়গাতেই স্লুইস ভাল্ভ খারাপ হয়ে গিয়েছে। কয়েকটি জায়গায় লাইনও রুদ্ধ হয়ে গিয়েছে।
রিজার্ভারগুলিতে কত পরিমাণ জল মজুত থাকে এবং তা থেকে কত জল সরবরাহ করা হচ্ছে তা নিয়ে এর আগে বাম পুরবোর্ডের সময়েও বিতর্ক হয়েছিল। সে সময়ে মিটার বসানোর পরিকল্পনা হলেও তা কার্যকরী হয়নি। তৃণমূল পুরবোর্ড সে কাজে হাত দিতে চলেছেন। পুর আধিকারিকদের একাংশের মতে, এর ফলে টালা-পলতা থেকে কত জল আসছে তা বোঝা যাবে।
পুরসভা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই কাজের অনুমোদন হয়েছে। সব মিলিয়ে ব্যয় হতে পারে প্রায় ১ কোটি ৮৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। পাশাপাশি, নিকাশির কাজেও পরিকল্পনা করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই গালিপিটগুলির অবস্থা বেহাল। তাই দেড় হাজার গালিপিট, দেড়শো ম্যানহোল কভার কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাশাপাশি স্যুয়ারেজ পাম্পিং স্টেশনের সংস্কারেরও কাজ করা হবে। নিকাশির সংস্কারে সব মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকার কাজ হবে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এই কাজ শুরু হতে দেরি হল কেন?
চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “পরিকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন। কিন্তু আর্থিক অভাবে ইচ্ছা থাকলেও কাজ করা যায়নি। তবে একেবারে হয়নি এমন নয়। যেমন যেমন অর্থ এসেছে সে অনুযায়ী কাজ হয়েছে।”

ছবি: প্রদীপ আদক




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.