নাইটদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে
অস্ট্রেলীয় ওষুধেই আস্থা রাখছেন বেলিস
গ্রেগ চ্যাপেলের মতো কড়া ‘হেডস্যর’ তিনি নন। হতে চানও না।
জন বুকাননের মতো অদ্ভুতুড়ে চিন্তাভাবনা আমদানি করে টিমে ধোঁয়াশা সৃষ্টির ইচ্ছে নেই মোটেই।
বরং তাঁকে এক ঝলক দেখলে মনে হবে, হার্ভার্ডের অঙ্কের প্রফেসর বুঝি! ভুল করে বাসিন্দা হয়ে গিয়েছেন ক্রিকেটদুনিয়ার। চোখে চশমাসমেত তো তেমনই দেখায়। তিনিও কোচ এবং অস্ট্রেলীয়, কিন্তু হাজার চেষ্টাতেও পরিচিত অস্ট্রেলীয় অহঙ্কারের দেখা মিলবে না। বরং সহজ করে বুঝিয়ে দেবেন, ভারতীয় ক্রিকেটে অস্ট্রেলীয় শিক্ষক দেখলে রে-রে করে তেড়ে ওঠার কেন কোনও যুক্তি নেই। অতীতের রেকর্ড যতই অ-গৌরবজনক হোক। কারও নাম না করে বলে দেবেন, ভারতীয় ক্রিকেটে কোথায় ভুল ছিল তাঁর পূর্বসূরিদের।
কে ইনি? যদি বলা হয় ট্রেভর বেলিস, নাক কুঁচকে যেতে পারে। কিন্তু যদি বলা হয়, গত বছর বিশ্বকাপ ফাইনালে শ্রীলঙ্কা ড্রেসিংরুমে তিনি বসেছিলেন কোচের চেয়ারে এবং এ বছর নাইটদের রান্নাঘরে তিনি প্রধান ‘শেফ’? আইপিএল ফাইভে অধিনায়ক গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে বসে স্ট্র্যাটেজির ময়নাতদন্তের দায়িত্বে তিনিই।
ট্রেভর বেলিস: নাইটদের ‘হেডস্যর’।
“ভারতীয় ক্রিকেটে গ্রেগ, নাইট রাইডার্সে বুকাননের জমানার কথা আমি জানি না। কিন্তু বাইরে থেকে কোচিং করাতে এসে নিষ্ঠুর কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দু’বার ভাবা ভাল। বিশেষ করে স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে,” শুক্রবার টিম হোটেলে বসে আনন্দবাজারকে বলছিলেন নাইট কোচ বেলিস। ‘কোন স্থানীয় ক্রিকেটারের সঙ্গে কী নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত’ বলতে কী বলা হচ্ছে, ক্লাস টু-এর বাচ্চাও বলে দেবে। সৌরভ-গ্রেগ, সৌরভ-বুকানন সম্পর্কের চড়াই-উতরাই তো কারও অজানা নয়। হোয়াটমোর জমানায় লক্ষ্মীকে গতবার মাত্র একটা ম্যাচ খেলানো নিয়ে স্থানীয় ক্রিকেটে ক্ষোভ যথেষ্ট। কিন্তু বেলিস এখনই এ নিয়ে কিছু বলছেন না, কারও নামও করছেন না। বরং বলছেন, “ব্যক্তিগত ভাবে আমি এমন কোনও নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত নিতে চাই না, যা টিমের মননে আঘাত করবে। সেরা এগারোই প্রথম দলে খেলবে। আমার এটাই দর্শন। অস্ট্রেলীয় ওষুধে এখানে কাজ হবে না, কে বলল?”
কিন্তু সেটা কী সহজ হবে এত? ভারতীয় ক্রিকেটের সংস্কৃতির সঙ্গে তো খাপ খায় না অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের কাঠামো। “খুব বেশি ফারাক নেই কিন্তু। উপমহাদেশের ক্রিকেটাররাও অসম্ভব সিরিয়াস। তবে এখানকার ক্রিকেটাররা কড়া প্র্যাক্টিস করতে পছন্দ করে। যা সব সময় লাগে না। আমি তো নাইটদের বলব, মাঝেমাঝে ছুটিছাটা নাও। শরীর, মনকে ফ্রেশ রাখো,” বলছিলেন বেলিস। একটু দম ফেলে ফের যোগ করলেন, “আপনারা বলবেন, ভারতে ক্রিকেটটা ব্যক্তিকেন্দ্রিক। অস্ট্রেলিয়ায় টিম আগে। কিন্তু ব্যাপারটা অন্য ভাবেও দেখা যায়। একটা টিম হয় এগারো জন ক্রিকেটারকে নিয়ে। এ বার সেই এগারো জন আলাদা করে যদি ভাল পারফর্ম করে, লাভটা কার হচ্ছে? টিমেরই তো?”
গম্ভীরের সঙ্গে একপ্রস্থ কথা হয়েছে, কিন্তু দেখা হয়নি। অথচ আইপিএলের বাকি হাতে গোনা পাঁচ দিন। সামলে নেওয়া যাবে? ব্যর্থ হলে তো সুযোগ দেবে না কলকাতা। ‘বেলিস হঠাও’ গর্জন উঠতে কতক্ষণ? “আধুনিক ক্রিকেটবিশ্বের মন্ত্রই হল পারফর্ম অর পেরিস। ও সব নিয়ে ভেবে কী হবে?” আর বুকাননের মতো ‘এক টিম বহু নেতার’ থিওরি? বিশ্বাস করেন তিনি? উত্তর নয়, বলা ভাল প্রশ্নটাকেই সপাটে গ্যালারিতে ফেলে দিলেন নাইট কোচ। “একদম নয়। আমি গৌতমের সঙ্গে কথা বলেছি। ক্রিকেটের প্রতি ওর মনোভাব, দর্শন আমার সঙ্গে মেলে। আমার অধিনায়ক, যোগ্য অধিনায়ক। ও সব জটিলতায় আমি নেই।” উল্টে বুঝিয়ে দিলেন টিমের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিতে নিতে তাঁর অন্তত অসুবিধা হবে না। “আমি নাইট ড্রেসিংরুমে এমন পরিবেশ তৈরি করতে চাই যেখানে হাজার চাপের মধ্যেও ক্রিকেটাররা খোলা মনে খেলতে পারবে। আমার টিম, যথেষ্ট শক্তিশালী টিম। ক্ষমতা অনুযায়ী খেলতে পারলে দেখব কে আটকায়?”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.