|
|
|
|
মোহনপুরের স্কুলে চাপানউতোর |
তৃণমূলের বিক্ষোভের জেরে ইস্তফা ৬ অভিভাবক সদস্যের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মোহনপুর |
মিড-ডে মিলে ‘দুর্নীতি’ হয়েছে বলে তৃণমূল অভিযোগ তুলেছিল। শেষ পর্যন্ত স্কুলের পরিচালন সমিতি থেকে পদত্যাগই করলেন বাম-সমর্থিত ৬ অভিভাবক প্রতিনিধি। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহনপুর থানা এলাকার নীলদা হাইস্কুলের। প্রধান শিক্ষক এবং বিডিও-র তদন্তে দুর্নীতির কোনও প্রমাণ না মেলা সত্ত্বেও এই অভিভাবক প্রতিনিধিদের সরাতে কিছু দিন ধরেই বিক্ষোভ চালাচ্ছিল তৃণমূল। পদত্যাগী অভিভাবক প্রতিনিধিদেরও বক্তব্য, ইস্তফা দিতে তাঁদের বাধ্য করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অভিভাবকসভার পরেই পদত্যাগ করেন ওই ৬ বাম-সদস্য। প্রধান শিক্ষক দুর্গাপ্রসাদ ভৌমিকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তাঁরা। দুর্গাবাবু বলেন, “বিষয়টি জেলা স্কুল পরিদর্শককে (মাধ্যমিক) জানানো হয়েছে।” জেলা স্কুল পরিদর্শক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে নিয়ম মাফিক ডিডিও (ড্রয়িং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসার) নিয়োগ হবে।
বিধানসভা ভোটের আগে পর্যন্ত নীলদা ছিল সিপিএমের শক্ত-ঘাঁটি। বিধানসভা ভোটের পর থেকে ওই এলাকায় সিপিএমের পায়ের নীচের মাটি আলগা হতে থাকে। বছর দেড়েক আগে স্কু্লের অভিভাবক-প্রতিনিধি নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন বাম-সমর্থিত ছ’জন। গত ডিসেম্বরে সিপিএমের শাখা কমিটির সম্মেলনে স্কুলের মিড-ডে মিলের কয়েক কুইন্টাল চাল ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে আসরে নামে তৃণমূল। এই অভিযোগে, স্কুলে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা চলাকালীনও নিয়মিত বিক্ষোভ ও ঘেরাও হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে বুধবার ব্লকের দুই কর্মীকে তদন্তে পাঠান বিডিও। প্রধান শিক্ষকও স্কুলের তরফে পৃথক তদন্ত করেছেন। বিডিও সুনীতিকুমার মুখোপাধ্যায় ও প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, “চালের হিসেবে কোনও গরমিল পাওয়া যায়নি।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রদীপ পাত্রের তবু দাবি, “এলাকাবাসী নিশ্চিত, ওই সম্মেলনের জন্যই চাল পাচার হয়েছিল। পরে, মাঝে কয়েক দিন নানা কারণ দেখিয়ে মিড-ডে মিল বন্ধ করে চালের হিসেব মেলানো হয়েছে!” বৃহস্পতিবার ডাকা অভিভাবক-সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিচালন সমিতির সম্পাদক সুধীর মাইতি-সহ ৬ অভিভাবক সদস্য। সভায় তুমুল বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সমর্থকেরা। সুধীরবাবু-সহ বাকিদের অভিযোগ, “গত কয়েক দিন ধরে পদত্যাগ করার জন্য চাপ দিয়ে গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সভাতেও একই ঘটনা ঘটেছে। দুর্নীতি যে হয়নি তা সরকারি তদন্তে প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও এ ভাবে হুমকি দেওয়ায় আমরা আতঙ্কিত। এর জেরেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছি।” সিপিএমের মোহনপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক রমণীমোহন জানা বলেন, “পদত্যাগকারীদের মধ্যে মাত্র এক জন দলীয় সদস্য। আতঙ্কিত হয়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত তাঁরা নিজেরাই নিয়েছেন। দুর্নীতি না হওয়া সত্ত্বেও তৃণমূলের চাপেই যে এই পদত্যাগ তা এলাকাবাসী জানেন। প্রশাসনে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়ে যে কোনও লাভ হবে না, তা-ও সকলেরই জানা।” |
|
|
|
|
|