|
|
|
|
আবার স্কুলছাত্র নিখোঁজ হাওড়ায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আবার এক স্কুলছাত্র নিখোঁজ হয়ে গেল হাওড়ায়।
বৃহস্পতিবার সকালে সালকিয়ায় স্কুল থেকে অপহৃত হয়েছিল তিন বছরের শিবম। সে দিন বিকেলেই বাড়ির সামনে থেকে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে শিবপুর কলেজ ঘাট রোডের বাসিন্দা দীপককুমার বর্মা (১২)। শিবমকে বৃহস্পতিবারই অপহরণকারীদের খপ্পর থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত দীপকের কোনও সন্ধান মেলেনি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপকের বাবার নাম শম্ভুনাথ বর্মা। বাড়ি থেকে কিছু দূরেই তাঁর একটি মুদির দোকান রয়েছে। শম্ভুনাথবাবুর দুই ছেলে। বড় ছেলে পঙ্কজ স্থানীয় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। ছোট ছেলে দীপক ওই স্কুলেই পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটি থাকায় বাড়িতেই ছিল দীপক। বিকেলে বাড়ির মধ্যেই একটা ঘেরা জায়গায় অন্য দিনের মতো একাই খেলছিল সে। সে সময়ে তার মা ঘুমোচ্ছিলেন।
শুক্রবার শম্ভুনাথবাবু জানান, বিকেল সওয়া পাঁচটা নাগাদ তিনতলার ঘরের চাবি দীপকের হাতে দিয়ে দোকানে চলে যান তিনি। বড় ছেলে পঙ্কজ তখন পড়তে গিয়েছিল। এর পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ শম্ভুনাথবাবুর কাছে খবর যায়, দীপককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তখনই পাড়ার লোকজন নিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তিনি। এলাকায় ভ্যান নিয়ে ঘুরে ঘুরে মাইকে ঘোষণাও করা হয়। তবু ছেলের খোঁজ না-পেয়ে শেষে শিবপুর থানায় একটি নিখোঁজ-ডায়েরি করেন শম্ভুনাথবাবু।
এ দিন তিনি বলেন, “আমার ছেলে একা বাড়ির বাইরে খুব একটা বেরোত না। খুব ভিতু প্রকৃতির ছিল। বাড়ির ঘেরা জায়গার মধ্যেই খেলাধুলো করত। আমার ধারণা, কেউ ওকে নিয়ে চলে গিয়েছে।” ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে সমানে কেঁদে চলেছেন শম্ভুনাথবাবুর স্ত্রী বিদ্যাবতীদেবী। তিনি বলেন, “কাল বিকেলে যখন ঘুমোচ্ছিলাম, এক বার মনে হল, দীপক আমায় ডাকছে। কিন্তু ঘুমের ঘোরে উঠতে পারিনি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ নম্বর কলেজ ঘাট রোডের যে বাড়িতে শম্ভুবাবু এবং তাঁর এক দাদা ও ভাই থাকেন, আগে তার মালিক ছিলেন মধ্য কলকাতার এক বাসিন্দা। গত ৫০ বছর ধরে বংশপরম্পরায় ওই বাড়িতে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি বসবাসও করতেন শম্ভুবাবুরা। বর্তমানে ১৫ কাঠা জমি-সহ বাড়িটি স্থানীয় এক প্রোমোটারকে বিক্রি করে দিয়েছেন আগের মালিক। ওই বাড়ির অন্য সব ভাড়াটেকে টাকা দিয়ে তুলে দেওয়া হয়েছে। শুধু বর্মা পরিবারই রয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে, প্রোমোটারের কাছ থেকে চাহিদামতো টাকা না পাওয়ায় বর্মা পরিবার অন্য কোথাও যায়নি। যদিও ছ’মাস আগেই তাদের উঠে যেতে বলা হয়েছিল। কাজেই দীপকের নিখোঁজ হওয়ার পিছনে বর্মা পরিবারের বাড়ির দখলদারি না ছাড়ার ঘটনা জড়িয়ে আছে কি না, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। হাওড়ার ডিসি (সদর) সুকেশকুমার জৈন বলেন, “সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই পরিবারের সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা গড়ে উঠেছিল কি না বা ছাত্রটি নিজেই চলে গিয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|