এনসিটিসি-র পর এ বার নিজের নিজের রাজ্যের স্বর্ণশিল্পীদের স্বার্থরক্ষায় ফের একযোগে কেন্দ্রের উপরে চাপ দিতে চাইছেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দুই রাজ্যেই স্বর্ণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত কারিগরদের সংখ্যা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বেশি। এ বারের কেন্দ্রীয় বাজেটে স্বনির্ভর সোনার কারিগরদের উপরে যে উৎপাদন শুল্কের বোঝা চাপানো হয়েছে, তা অবিলম্বে তুলে নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছেন দুই মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রকে যে চিঠি মোদী পাঠিয়েছেন, তার একটি প্রতিলিপি তিনি মমতাকেও পাঠিয়েছেন বলে মহাকরণ-সূত্রে জানা গিয়েছে।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ বিষয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছেন। সম্প্রতি রাজ্যের ‘স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটি’র সদস্যরা এসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। মোদীর চিঠিও পান মমতা। তার পরেই মনমোহন ও প্রণববাবুকে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
চিঠিতে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, নতুন করে চাপিয়ে দেওয়া এই উৎপাদন শুল্কের জন্য অনেকের রুটি-রুজি বন্ধ হতে পারে। বড়সড় আঘাত আসতে পারে রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই শিল্পের উপরে। রাজ্যের প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ যে এই শিল্পের উপরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে নির্ভরশীল, চিঠিতে তা-ও জানিয়েছেন মমতা।
যাঁরা সোনার গয়নার ব্যবসা করেন, তাঁদের হয়ে গয়না তৈরি করেন এই স্বনির্ভর স্বর্ণশিল্পীরা। তাঁরা এই ব্যবসায়ীদের কর্মী হিসেবে কাজ করেন না, চুক্তির ভিত্তিতে গয়না তৈরি করে দেন। কেন্দ্রীয় বাজেটে সেই স্বনির্ভর স্বর্ণশিল্পীদের উপরে এই প্রথম উৎপাদন শুল্ক চাপানো হয়েছে। মমতা জানিয়েছেন, এমনিতেই বড় ব্যবসায়ীদের বড়সড় পরিকাঠামোর সঙ্গে এই ছোট ব্যবসায়ীদের লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়। তার উপরে শুল্ক চাপানো হলে ছোট ব্যবসায়ী ও শিল্পীরা পথে বসবেন। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর তিনি ছোট ব্যবসায়ীদের, ক্ষুদ্রশিল্পকে অগ্রাধিকার দিতে চান। আঘাত আসবে সেই পরিকল্পনার উপরেও। কেন্দ্রকে এই আশঙ্কার কথাই লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। |