নগদে বার্ধক্যভাতা দেওয়ার সময়ে কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সংখ্যা যা ছিল, হাইকোর্টের নির্দেশে চেকে ভাতা দেওয়ার সময়েই সেই সংখ্যা কোথাও কোথাও কমে গিয়েছিল প্রায় ৯০ শতাংশ। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুমন সিংহের বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে একটি জনস্বার্থের মামলায় ২০১০ সালে হাইকোর্ট পুরসভাকে একটি সোসাইটি অডিট করার নির্দেশ দেয়। সুমনের বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের হয়। শুক্রবার ওই মামলার শুনানিতে সেই অডিট রিপোর্টেই বেরিয়ে এসেছে বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সংখ্যা কমে যাওয়ার এই তথ্য। উদ্বিগ্ন হাইকোর্ট পুরসভাকে সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলেছে।
এ দিন প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ পুরসভাকে এক সপ্তাহের মধ্যে তারা কী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে তা জানাতে বলে। যে সব ওয়ার্ডে বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সংখ্যা চোখে পড়ার মতো কমেছে, সেখানে সুমন সিংহের মতো অন্য কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে, এমন ইঙ্গিতও দেয় বেঞ্চ। সুমন সিংহের আইনজীবী অরণাভ ঘোষ এ দিন বলেন, “এক বছরের মধ্যে এক-একটি ওয়ার্ডে বৃদ্ধ বৃদ্ধার সংখ্যা কেন এত কমে গেল, তা খতিয়ে দেখা দরকার।” এক বছরে এত জনের মৃত্যু হলে, তা যথেষ্ট ভাবনার বিষয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
১৯৯৭ থেকে এই ভাতা দেওয়া শুরু হয়। ভাতার পরিমাণ ছিল মাসিক ৪০০ টাকা। বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের সুপারিশ অনুযায়ী বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের এই টাকা দেওয়া হত। পুরসভার করা সোসাইটি অডিট রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ২০১০-এর শেষ থেকে ২০১১-র শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন ওয়ার্ডে বৃদ্ধবৃদ্ধার সংখ্যা কী হারে কমেছে। সর্বশ্রেষ্ঠ উদাহরণ, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড। এখানে সংখ্যা ছিল ১৩৯, বর্তমানে ২। মেয়রের ওয়ার্ড ১৩২ এখানে ছিল১২৯, এখন ৯১। কমেছে ৩৮ জন। ওয়ার্ড ৩৬ ছিল ১৩৯, হয়েছে ৮২। ওয়ার্ড ৩২ ছিল ২৪৩, হয়েছে ১০৫। ৫০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধবৃদ্ধা মারা গিয়েছেন। ওয়ার্ড ৭৯ ছিল ২৫২, হয়েছে ১২৪। মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারের ওয়ার্ড ৮৫ ছিল ১৯০, হয়েছে ৭৪। ওয়ার্ড ১২৯ ছিল ১৬০, হয়েছে,৬৩। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ওয়ার্ডে অবশ্য খুবই সামান্য কমেছে বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সংখ্যা ছিল ২৫৭, হয়েছে ২৩১। |