ঝিমিয়ে পড়া শেয়ার বাজারে প্রাণ ফেরাল অর্থমন্ত্রীর আশ্বাস। পার্টিসিপেটরি নোট-এর উপর কর বসানোর পরিকল্পনা নেই বলে স্পষ্ট জানালেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। আর মূলত তার দৌলতেই শুক্রবার প্রায় ৩৪৬ পয়েন্ট উঠল সেনসেক্স। থিতু হল ১৭,৪০৪.২০ অঙ্কে। অবশ্য এর পরেও বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির উপর কর বসানো নিয়ে ধোঁয়াশা থাকল বলে মনে করছেন অনেকে।
পার্টিসিপেটরি নোট (পি-নোট) হল সেই ডেরিভেটিভ, যার মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি-র কাছে নথিভুক্ত না হয়েও ভারতের শেয়ার বাজারে লগ্নি করতে পারে বিদেশের কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা। এই ব্যবস্থায় পি-নোটের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। এবং সেই টাকা একত্রিত করে ভারতের বাজারে বিনিয়োগ করে তারা।
এই লেনদেনের কর জমা দিতে মরিশাসের মতো দেশ (যাদের সঙ্গে ভারতের দু’বার কর এড়ানোর বিষয়ে চুক্তি রয়েছে)-এর প্রশাসনের কাছে নাম নথিভুক্ত করে পি-নোটের লগ্নিকারীরা। ফলে ভারত সরকারের কাছে কর দেওয়ার দায় থেকে মুক্তি পায় তারা। সম্প্রতি বাজারে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে, পি-নোটের উপর স্বল্পমেয়াদি মূলধনী লাভ কর বসাতে পারে কেন্দ্র। আর এই উদ্বেগেই মুসড়ে পড়েছিল বাজার। ফলে, অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায় স্বাভাবিক ভাবেই তা চাঙ্গা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ অজিত দে-র মতে, “এই ঘোষণায় ভারতের বাজারে টাকা ঢালতে আরও উৎসাহ পাবে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি।” পি-নোটে কর বসলে যার অনেকটাই অন্য দেশে সরে যেত বলে অনেকের অভিমত। শুধু তাই নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে বিদেশি লগ্নি এলে ডলারের জোগান বাড়বে। ফলে দাম বাড়বে টাকারও। এ দিনই যেমন অর্থমন্ত্রীর ঘোষণার পর ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম এক লাফে ৫৩ পয়সা বেড়ে পৌঁছেছে ৫০.৮৭/৮৮ টাকায়।
তবে পি-নোটে কর না-বসালেও, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার উপর করের কথা এ দিনও বলেন প্রণববাবু। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সে ক্ষেত্রে ওই করের বোঝা অন্তত আংশিক ভাবে বইতে হতে পারে পি-নোটে লগ্নিকারীদের। তাই সেই ধোঁয়াশাও কাটলে বাজার আরও চাঙ্গা হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। |