ক্লাবগুলি থেকে কার্যনির্বাহী সমিতির প্রতিনিধি বাছতে মতানৈক্যের জেরে শেষ পর্যন্ত ভোট হল। ২১ বছর পর এই ঘটনা ঘটল শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদে। বৃহস্পতিবার কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের হল ঘরে কার্যনির্বাহী সমিতির জন্য ৩৩ টি ক্লাবের মধ্য থেকে ২৮ জন ক্লাব প্রতিনিধি বাছতে ওই ভোট হয়। ক্রীড়া পরিষদের সদস্যদের একাংশের অভিযোগ, ক্লাবস্তর থেকে ক্রীড়া পরিষদের সদস্য পাঠানোর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়েছে। যা খেলার মাঠে কাম্য নয়। তার জেরেই মতানৈক্য বেড়েছে। শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের বিদায়ী সচিব তথা নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক নান্টু পাল বলেন, “এ ভাবে ভোট করে ক্লাব থেকে প্রতিনিধি বাছা হোক চাইনি। ক্রীড়া ক্ষেত্রে রাজনীতি কাম্য নয়। খেলাধূলার পরিবেশ তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” নিয়ম মতো অনুমোদিত ক্লাবগুলির মধ্যে থেকে ২৮ টি ক্লাবের প্রতিনিধি কার্যনির্বাহী সমিতিতে থাকবে। শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের অনুমোদিত ক্লাবের সংখ্যা ৩৩টি। সার্বিক কমিটিতে থাকলেও বাকি ৫ টি ক্লাবের প্রতিনিধিরা কার্যনির্বাহী সমিতিতে থাকতে পারবেন না। বরাবর আলোচনার মাধ্যমেই তা ঠিক হয়েছে। কিন্তু এ বার তা নিয়ে মতানৈক্য চরমে পৌঁছয়। একাধিক প্যানেল জমা পড়ে। শেষ পর্যন্ত প্রতিনিধি বাছতে তাই ভোট করতে হয়েছে। মতানৈক্যের জেরে এ দিন কার্যনির্বাহী সমিতির ক্লাব প্রতিনিধি বাছতে একাধিক ব্যক্তি প্যানেল জমা দেন। তাতে দেখা গিয়েছে মূলত ২ টি প্যানেল পড়েছে। দেখা যায় একটি প্যানেলের হয়ে বিদায়ী সচিব নান্টু পাল এবং তাঁর লোকজন সক্রিয় রয়েছেন। ওই প্যানেলটি পেশ করেন বিধান স্পোর্টিং ক্লাবের সন্টু মৈত্র। তাঁকে সমর্থন করেছেন নবীন সঙ্ঘের মনোতোষ তালুকদার। অপর প্যানেলটি পেশ করেছেন ৫ টি জুটি। যাঁর মধ্যে অন্যতম অরূপ রতন ঘোষ-অরূপ মজুমদার। পূর্বতন কমিটির সচিব নির্বাচনে অরূপ রতন ঘোষ নান্টুবাবুর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। তিনি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের শিবিরের লোক বলেই পরিচিত। এ দিন তাঁর প্যানেলকে সমর্থন করেন মহানন্দা ক্লাবের অরূপ মজুমদার। ওই একই প্যানেল এ দিন জমা দেন কৃষ্ণ পাল-সৌমিত্র কুণ্ডু, সজল নন্দী-মৃণাল কান্তি সরকার, রঞ্জন সরকার-রিপন দাস, শম্ভু সাহা-অচিন্ত্য গুহরা। তাঁরা সকলেই অরূপবাবুর শিবিরের বলেই শিলিগুড়ি ক্রীড়া মহলের ধারণা। অরূপ রতনবাবু, সৌমিত্রবাবু, রঞ্জনবাবু-সহ কয়েকজনের নাম সন্টুবাবুদের প্যানেলে থাকায় তাঁরা আপত্তিও জানান। অরূপবাবুর প্যানেলের একজন বাদে বাকিরা জয়ী হন। সন্টুবাবুদের প্যানেলের বেশ কয়েকজন হেরে যান। ২ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ায় পুরনো কমিটি সম্প্রতি ভেঙে দেওয়া হয়। ক্রীড়া পরিষদের কমিটিতে থাকবেন ৯৩ জন। ৩৩টি ক্লাবের প্রতিটি থেকে সচিব এবং একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন। নতুন কমিটি গড়তে ইতিমধ্যেই পদাধিকার বলে থাকা এবং রেফারি অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাকাডেমি, স্কুল ক্রীড়া সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস বোর্ড থেকে ১৪ জন সদস্য ঠিক করা হয়েছে। স্টেডিয়াম কমিটি থেকে এ বার ১ জন্য সদস্য কম এসেছেন। ১৪ জনের মধ্য থেকে ১২ জন কর্মসমিতিতে থাকবেন। কো-অপ্টের মাধ্যমে আরও ১২ জন সদস্য নেওয়া হবে। ক্লাব প্রতিনিধি-সহ সব মিলিয়ে ৫২ জনের কার্যনির্বাহী সমিতি হবে। ইতিমধ্যেই ঠিক করা ১৪ জন্য সদস্য এবং ক্লাবগুলি থেকে আসা ব্যক্তিদের নিয়ে ৮০ জন এ দিন ভোটার ছিলেন ক্লাব প্রতিনিধি বাছতে। ভোটে অংশ নেন ৭৪ জন। কার্যনির্বাহী সমিতির সদস্য ঠিক হলে সচিব-সহ অন্যান্য পদগুলি ঠিক হবে। ১৫ এপ্রিলের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ করার কথা। |