সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারে সংবাদপত্র রাখা নিয়ে রাজ্য সরকার যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, তা ‘অগণতান্ত্রিক’ বলে অভিযোগ করলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। বৃহস্পতিবার কালিম্পঙের গরুবাথানে এক দলীয় অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “সরকারি অনুদানে গ্রন্থাগার চলছে বলে কোন সংবাদপত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিধি-নিষেধ জারি করা অগণতান্ত্রিক। শীঘ্রই ওই বিধি প্রত্যাহারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দাবি জানাব।”
জিটিএ-তে তরাই-ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তির দাবি নিয়ে মোর্চার বিপরীত অবস্থানে থাকলে কী হবে, অন্তত এ ব্যাপারে গুরুঙ্গের সঙ্গে একমত আদিবাসী বিকাশ পরিষদও। ওই সংগঠনের তরাই ও ডুয়ার্সের নেতাদের তরফে সন্দীপ এক্কা ও ত্রিয়োফিল সোরেন অভিযোগ করেন, “সংবাদপত্র কেনা নিয়ে ফতোয়া দিয়ে রাজ্য সরকার গণতন্ত্রেই আঘাত হেনেছে! এটা মেনে নেওয়া যায় না। কারণ, চা বাগান, গ্রামের গরিব ছেলেমেয়েরা গ্রন্থাগারে গিয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্র পড়ে। সরকারি নিষেধাজ্ঞায় সেই পাঠকেরা বিপাকে পড়বে।” রাজ্য সরকার প্রথমে ৮টি সংবাদপত্র কেনা যাবে বলে নির্দেশ জারি করেছে। পরে আরও ৫টি সংবাদপত্রের নাম ওই তালিকায় জুড়েছে রাজ্য সরকার। তাতে একটি নেপালি সংবাদপত্র আছে। |
এর পরেও তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ওই নির্দেশিকা প্রত্যাহারের দাবি জানাবেন কি না, সে প্রশ্নে গুরুঙ্গ বলেন, “ব্যাপারটা নেপালি-হিন্দি কাগজ বলে নয়। গণতন্ত্রে সংবাদমাধ্যম একটি স্তম্ভ। আমার বিরুদ্ধেও তো কত সংবাদপত্র লেখে! সে জন্য কি অপছন্দের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেব? সংবাদপত্র না-থাকলে রাজনীতিকরা কতদিন থাকবেন? তাঁদের কথা জনতার কাছে কে পৌঁছে দেবে? সরকারি গ্রন্থাগারের পাঠকদের সব রকম সংবাদপত্র পড়ার স্বাধীনতা থাকাটা নিশ্চিত করতে হবে।”
মোর্চা সূত্রের খবর, ওই বিজ্ঞপ্তি জারির পরে পাহাড়েও হইচই হয়। পাহাড়ের ৩ মহকুমায় ৯৬টি গ্রন্থাগার রয়েছে। সেখানে নেপালি তো বটেই, প্রথম সারির হিন্দি, বাংলা, ইংরেজি সংবাদপত্র রাখা হয়। সরকারি নির্দেশিকা জানার পরে মোর্চার বিধায়কদের তরফে মহাকরণে যোগাযোগ করা হয়। তার পরেই বুধবার একটি নেপালি সংবাদপত্র রাখা যাবে বলে নয়া নির্দেশিকা জারি হয়েছে। কিন্তু গুরুঙ্গ দলের নেতাদের জানান, গ্রন্থাগারে কী সংবাদপত্র কেনা হবে, তা পাঠকদের উপরে চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী তাঁরা নন।
|
(সহ প্রতিবেদন: নারায়ণ দে) |