মোড়ল জমিদারবাড়ির বাসন্তী পুজোকে উত্তর ২৪ পরগনার বেড়াচাঁপা এখন জমজমাট। পুজোর আড়ম্বরের চেয়ে ইতিহাসই এই পুজোর আকর্ষণ। শোনা যায়, দুর্গাপুজোর ষষ্ঠীর দিনে দেবীর বোধনের আয়োজন করা হচ্ছে। ঢাক-ঢোল বাজছে। বোধন দেখতে ভিড় জমেছে জমিদারের নাট মন্দিরে। সেই সময় হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন জমিদারের এর কর্মচারি। মারা যান তিনি। চারপাশে গুঞ্জন ওঠে অমঙ্গলের। কথিত আছে, দেগঙ্গার বেড়াচাঁপার এই মোড়ল জমিদারের বাড়িতে তার পর থেকে দুর্গাপুজোর সময় কেই না কেই মারা যেতেন। এই অবস্থায় জমিদর শরণাপন্ন হন কুলপুরহিতের। তিনি পুথি ঘেঁটে নিদান দেন, দুর্গাপুজোর বন্ধ না করলে জমিদার বংশের আর কোনও উত্তরাধিকার থাকবে না। মুষড়ে পড়েন জমিদার। এমন নিদানে ভেঙে পড়েন গ্রামের মানুষও। শেষে জমিদারই সিদ্ধান্ত নেন, আর দুর্গাপুজো নয়, এ বার থেকে বসন্তকালে বাসন্তী পুজোর আয়োজন করা হবে। বেড়াচাঁপার জমিদার বাড়িতে সেই শুরু বাসন্তী পুজো। |
ঠিক কত সালে এইপুজো শুরু হয়েছিল তা অবশ্য জানা নেই জমিদার পরিবারের বর্তমান পুরুষদের। জানা নেই গ্রামবাসীরও। তবে বেড়াচাঁপার মানুষের কাছে অন্যতম প্রধান উৎসব এই বাসন্তী পুজো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুজো ছড়িয়েছে। বেড়েছে বারোয়ারি পুজো। এখন বড় বাজেটের সাতটি পুজো হয়। দেবালয় ভ্রাতৃসঙ্ঘ, মিলন সঙ্ঘ, দেবালয় প্রগতি সঙ্ঘ, চন্দ্রকেতু সঙ্ঘ, নবপল্লি যুব শক্তি, মহাকালি সঙ্ঘ, জাগৃতি সঙ্ঘ প্রত্যেক পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যেই মণ্ডপ, প্রতিমা আলোকসজ্জায় একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার লড়াইয়ে জমে উঠেছে পুজো। এ ছাড়াও বসিরহাটের প্যারাডাইস ক্লাব, মন্দিরঘাটা দেশপ্রিয় ব্যায়াম সমিতি, ধলতিতার বেকার সমিতি, পল্লিমঙ্গল সমিতি, নৈহাটি সঙ্ঘের পুজোও নজর কেড়েছে। পুজো দেখতে বুধবার ষষ্ঠীর সন্ধে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে মানুষের ভিড়। |