লিওনেল মেসি পারল না। তাই বার্সেলোনা জিতল না।
তবে এটা বলতে পারি, বুধবার রাতে দু’দলই যা সুযোগ পেয়েছিল তাতে যে কেউ জিততে পারত। রোবিনহো-ও সুযোগ হাতছাড়া করেছে। মেসি-ও করেছে। আবার ন্যায্য পেনাল্টি থেকেও বঞ্চিত হল বার্সেলোনা। মেসির বাড়ানো বল ধরার সময় আলেক্সি সাঞ্চেজকে মিলানের গোলকিপার আব্বিয়াতি যে ভাবে হাত দিয়ে আটকাল তাতে নিশ্চিত পেনাল্টি হয়।
তবে বুধবার বার্সেলোনা আটকে গেলেও আমার মনে হচ্ছে, পরের পর্বে ঘরের মাঠে মেসিরাই এগিয়ে থাকবে। |
মেসিকে বিশ্রীভাবে আটকাচ্ছেন নেস্তা। ছবি: গেটি ইমেজেস |
দু’দলের প্রধান পার্থক্য ছিল পাসিং-এ। এসি মিলান যেখানে প্রচুর মিস পাস করল। বার্সেলোনার ভুল পাস সেখানে নামমাত্র। পাসিং-এ জাভি ছিল একদম নিখুঁত। মেসিরা গোলে শটও নিয়েছে বেশি। তা-ও কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগ অমীমাংসিতই রইল। এ বারই এক গ্রুপে ছিল এই দু’টি দল। যেখানে ঘরের মাঠে ২-২ ড্র করলেও সান সিরোয় গিয়ে এসি মিলানকে ৩-২ হারিয়েছিল মেসিরা। ভেবেছিলাম এ বারও মেসিরাই হয়তো জিতবে। কিন্তু অবাক হলাম মিলানের কোচ মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রির স্ট্র্যাটেজি দেখে। এক কথায় বুধবার রাতের ম্যাচটা ছিল স্কিল বনাম শক্তির। তবে শক্তির উপর বেশি নির্ভর করতে গিয়ে প্রচুর ফাউলও করেছে নেস্তা-আন্তোনিনিরা। যাতে মেসির মতো বল প্লেয়াররা অসুবিধায় পড়েছে।
বার্সেলোনাকে আটকানোর জন্য দু’টো স্ট্র্যাটেজি ছিল আলেগ্রির
১) মেসির জন্য ত্রিমুখী কভারিং: যখনই মেসির পায়ে বল এসেছে, ওকে ঘিরে ধরেছে তিন জন। ড্রিবল করে এক বা দু’জনকে কাটিয়ে এগোতে যেতেই সামনে পেয়েছে আর এক ডিফেন্ডারকে। যদিও সেই কভারিংকে মেসি কয়েক বার বোকা বানাতে পেরেছে, কিন্তু ততক্ষণে মিলানের বাকিরা রক্ষণ আরও জমাট করে ফেলেছে।
২) বাকিদের জন্য সেই বহুচর্চিত ইতালীয় রক্ষণ: সেই কাতেনাচ্চিও সিস্টেমের সময় থেকেই ইতালীয় ক্লাব বা জাতীয় দলের রক্ষণে নজর থাকে অনেক বেশি। মালদিনি-নেস্তা এত দিন রাজত্ব করেছে এসি মিলানের ডিফেন্সে। এ দিন দেখলাম লুকা আন্তোনিনিকে। এই লেফট ব্যাক বেশ কয়েক বার মেসিকে আটকে দিল। সাঞ্চেজকেও ট্যাকল করল গোলে শট নেওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে। নেস্তার মতো অভিজ্ঞ স্টপারের পাশে ভাল খেলল বোনেরা বা মেক্সেসও। যে কারণে বল পজেশন বেশি থাকা সত্ত্বেও গোল করতে পারল না জাভি-মেসিরা।
রক্ষণ জমাট রেখে প্রতি আক্রমণকেই হাতিয়ার করেছিল মিলান। আলভেস, পিকেরা এগিয়ে এলে তার সুবিধা নিতে অ্যাটাকে উঠছিল ইব্রাহিমোভিচ-রোবিনহোরা। খুব ভাল খেলল সিডর্ফ, ইব্রাহিমোভিচ। কয়েক বার গোলের সামনে পৌঁছেও গিয়েছিল ওরা। রোবিনহো একেবারে সহজ সুযোগ নষ্ট করেছে।
ইতালীয় রক্ষণ বাদ দিলে জাভি-ইনিয়েস্তাদের সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় ফেলেছে মিলানের মাঠ। এত জল মাঠে ঢেলেছিল যে বলপ্লেয়ারদের সমস্যা হওয়ারই কথা। বার্সার মতো টিম যারা বিস্তর পাস খেলে স্বভাবতই অসুবিধায় পড়েছে। কয়েক বার তো বার্সেলোনা ফুটবলাররা পড়েই গেল।
বায়ার্নের সহজ জয়: বায়ার্ন মিউনিখ ২-০ হারাল ফ্রান্সের মার্সেইকে। গোল করেন মারিও গোমেজ এবং রবেন। গোমেজ এখন ১২ গোল করে মেসির সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা। অ্যাওয়ে ম্যাচ জিতে থাকায় বায়ার্ন শেষ চারের জন্য এগিয়ে রইল। |