ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের মুখের ভূগোল বারবার বদলাচ্ছিল কথা বলার সময়। কখনও হতাশা গ্রাস করছিল, কখনও মুখাবয়ব জুড়ে চিকচিক করছিল আশার ঝিলিক।
আপনারা তা হলে কাল রানার্স হওয়ার লড়াইতেই নামছেন? প্রশ্ন শুনে হতাশ লাল-হলুদ কোচের মুখ থেকে বেরিয়ে এল, “ডেম্পো পয়েন্ট নষ্ট না করলে আমাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কোনও আশা নেই। পয়েন্টের ফারাক অনেক। আমরা শুধু জিতে থাকতে চাই। পেশাদাররা যা করে।”
তা হলে হাল একেবারেই ছেড়ে দিলেন? এ বারও আই লিগটা আর জিততে পারলেন না ? ব্রিটিশ কোচ ভাঙলেও মচকালেন না। “ডেম্পোর কাজটা কিন্তু সহজ নয়। ওদের অনেকগুলো কঠিন ম্যাচ খেলতে হবে। তবে চাইব রবিবারের ডেম্পো-মোহনবাগান ম্যাচটা ড্র হোক।”
আজ শুক্রবার অবনমনের আওতায় থাকা মুম্বই এফ সি-র সঙ্গে খেলা। অথচ ম্যাচের তিরিশ ঘণ্টা আগে মর্গ্যানের সাংবাদিক সম্মেলনে বেশি প্রশ্ন হল র্যান্টি মার্টিন্সের ডেম্পোকে নিয়েই। হওয়ারই কথা। এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি যা তাতে বড় কোনও অঘটন না ঘটলে আর্মান্দো কোলাসোর দলই পেতে চলেছে ভারতীয় ফুটবলের মহার্ঘ খেতাব। |
জ্যামিতিক রেখায় ফুটবলাররা। বৃহস্পতিবার ইস্টবেঙ্গল অনুশীলনে। ছবি: উৎপল সরকার |
দুটো মরসুম হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গলে কোচিং করাচ্ছেন। মহর্ঘ আই লিগ হাতের মুঠোয় আনতে পারেননি এখনও। কাঁটা তো খচখচ করবেই। সেটা সম্ভবত আরও রক্ত ঝরাবে যদি মোহনবাগান রানার্স হয়ে যায়। ড্রেসিংরুমের ভিতর তাই লং প্লেইং রেকর্ড বাজিয়ে দিয়েছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। “কে কী করছে দেখার দরকার নেই। আমরা আমাদের ম্যাচগুলো জিতব। সেটাই চেষ্টা করতে হবে।”
খালিদ জামিলের মুম্বই এফ সি পরের বার আই লিগে খেলবে কি না তা নিয়েই চূড়ান্ত প্রশ্নচিহ্ন ঝুলছে। গত সাত দিন সুকের-লালম পুইয়ারা কলকাতায় ঘাটি গেড়ে বসে আছেন প্রয়াগ ম্যাচের পর থেকেই। এ দিন সকালে অবশ্য ইস্টবেঙ্গল মাঠে তাদের অনুশীলন নিয়ে সামান্য হলেও নাটক হল। ইস্টবেঙ্গল জুনিয়র টিম অনুশীলন করছিল অর্ধেক মাঠ নিয়ে। খালিদ টিম নিয়ে মাঠে ঢুকে ওই দৃশ্য দেখে চটে যান। পরিকল্পনা মাফিক অনুশীলন না করাতে পেরে যাওয়ার সময় ক্ষোভও জানিয়ে যান, পুরো মাঠ না পেয়ে। রাগে মুম্বই কোচ কথাও বলেননি সাংবাদিকদের সঙ্গে। ইস্টবেঙ্গল জুনিয়র টিমের অন্যতম কোচ মনোজিৎ দাস অবশ্য খালিদদের অভিযোগ মানেননি। বললেন, “ওরা মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা সাইড লাইনের পাশে চলে যাই। তাতেও দেখলাম অর্ধেক মাঠ নিয়ে খেলল।”
অবনমনের আওতায় থাকলেও মুম্বই দলটি যথেষ্ট শক্তিশালী। তিন বিদেশি সুকোর, ফ্রাইডে, হারুণ তো রয়েছেনই। কুট্টিমণি, অভিষেক যাদব, লালম পুইয়ার মতো অভিজ্ঞ ফুটবলারও আছেন টিমে। দলের ম্যানেজার হেনরি পিকার্ডো বললেন, “ইস্টবেঙ্গলের উপর চাপ আছে। আমাদের নেই। আমরা তিন পয়েন্টের জন্যই ঝাঁপাব।” মুম্বই এফ সি গত বছর হারিয়েছিল টোলগেদের। এ বছর অবশ্য তারা আই লিগের প্রথম ম্যাচে জিততে পারেনি। তাতে অবশ্য কোনও হেলদোল নেই লাল-হলুদ কোচের। বললেন, “অবনমনে থাকা টিম সব সময়ই ভয়ঙ্কর। তারা সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপায়। আর পুরনো কথা আমি মনে রাখি না। আমার লক্ষ্য সব সময়ই সামনের ম্যাচ।”
রাজু গায়কোয়াড় ছাড়া সব ফুটবলারই সুস্থ। সালগাওকরের বিরুদ্ধে যে টিম নামিয়েছিলেন মর্গ্যান তা অবিকৃত রাখছেন আজকের ম্যাচেও। বুঝিয়ে দিলেন সে দিনের মতোই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে চান। “শুরুতে গোল তুলে নিতে পারলে চাপ কমে যায়।”
বৃহস্পতিবার সকালে ঘণ্টা দেড়েকের অনুশীলনে দু’রকম বলে খেলালেন মর্গ্যান। আই লিগের সঙ্গে এ এফ সি কাপের জন্য নির্ধারিত বল ব্যবহার করলেন। বলে দিলেন, “অস্ট্রেলীয় দূতাবাস যেতে বারণ করেছে বলেই আমি আর টোলগে ইরাক যাচ্ছি না। তবে খেলার মাঠে সমস্যা থাকা ঠিক নয়।” |
শুক্রবারে
আই লিগ ফুটবলইস্টবেঙ্গল: মুম্বই এফ সি (যুবভারতী ৩-৩০) |