|
|
|
|
উদ্বোধনের বছর পার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গত বছরের গোড়ায় ঘটা করে উদ্বোধন হয়েছিল। উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন। কেশিয়াড়ির মতো এলাকায় সভাগৃহ তৈরির চেয়ে হিমঘর তৈরি জরুরি ছিল কি না, এ নিয়ে সে সময়ে বিতর্কও হয়েছিল। যদিও বাম-পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি সেই বিতর্কে গুরুত্ব দেয়নি। দেখতে দেখতে বছর ঘুরেছে। সভাগৃহের রঙ চটতে শুরু করল, কিন্তু এখনও চালু হল না! কেন? জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “শুরুতে বিদ্যুৎ-সংযোগ নিয়ে একটা সমস্যা ছিল। এখন অবশ্য সেই সমস্যা নেই। শীঘ্রই ওই সভাগৃহ চালু হবে।” তবে জেলা পরিষদ সূত্রেই খবর, পঞ্চায়েত সমিতি এখনও ওই সভাগৃহের ভাড়া ঠিক করে উঠতে পারেনি। ফলে, কবে ‘হল’ চালু হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি।
গত বছর ১৯ মার্চ, বিধানসভা ভোটের মুখে ধুমধাম করে কেশিয়াড়িতে এই সভাগৃহের উদ্বোধন হয়। নাম দেওয়া হয় ‘রবীন্দ্রভবন।’ সভাগৃহটি তৈরি করতে খরচ হয়েছিল প্রায় ১ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা। আসন রয়েছে প্রায় ৭০০টি। পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে খবর, ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সভাগৃহের শিলান্যাস হয়েছিল। শিল্যান্যাস করেছিলেন তৎকালীন বন-প্রতিমন্ত্রী মহেশ্বর মুর্মু। সেই সময়ে কেশিয়াড়ি ছিল তাঁরই নির্বাচনী এলাকা। শুধু কেশিয়াড়ি নয়, এক সময়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা-সহ বেশ কয়েকটি ব্লকেই সভাগৃহ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। গ্রামে-গ্রামে সংস্কৃতির প্রসার ঘটাতেই এই পরিকল্পনা। শহর ও শহরতলিতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য সভাগৃহ রয়েছে। কিন্তু, গ্রামে সে-রকম সভাগৃহ নেই। |
|
ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কোথাও সভাগৃহ তৈরি হলে এক দিকে যেমন সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতে পারে, তেমনই স্থানীয় মানুষ অন্য কোনও সমাজসেবামূলক কাজও করতে পারেন। এই ভাবনা থেকেই একাধিক ব্লকে সভাগৃহ তৈরির পরিকল্পনা। সেই সময়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, পঞ্চায়েত সমিতিগুলিই সভাগৃহ তৈরির কাজ করবে। কিন্তু, তাদের হাতে তো বেশি অর্থ নেই। তাই সাংসদ-বিধায়কদের কাছ থেকেও অর্থ সাহায্য চেয়ে আবেদন করা হয়।
গত বছরের গোড়ায় উদ্বোধন হলেও এখনও কেন কেশিয়াড়ির ‘রবীন্দ্রভবন’ চালু হল না, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় মানুষ। পাশাপাশি তাঁদেরই একাংশের বক্তব্য, এখানে সভাগৃহ তৈরির চেয়ে হিমঘর তৈরি জরুরি ছিল। কেশিয়াড়ির মতো এলাকায় হিমঘর নেই। ফলে কৃষকেরা সমস্যায় পড়েন। কেশিয়াড়ির বাসিন্দা তথা জেলা কংগ্রেস নেতা মৃত্যুঞ্জয় সাহু বলেন, “সভাগৃহটি উদ্বোধন করে ফেলে রাখা হয়েছে। স্থানীয় মানুষের কাজেই লাগছে না।” রাতে সভাগৃহের আশপাশে মদের ঠেক বসে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। অন্য দিকে, কেশিয়াড়ি ব্লক তৃণমূল সভাপতি জগদীশ দাস বলেন, “গত বছর ভোট ছিল। তাই প্রচুর টাকা খরচ করে তড়িঘড়ি সভাগৃহের উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনের পর সভাগৃহ চালু হতে এক বছর লাগে বলে আমার জানা ছিল না!” তাঁর বক্তব্য, “পঞ্চায়েত সমিতির গড়িমসির জন্যই এটি চালু হচ্ছে না।” সভাগৃহ চালু করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, থাকলে ঠিক কোথায়---খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদত্ত চৌধুরী। তাঁর কথায়, “এ ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” |
|
|
|
|
|