সাহেববাঁধের আয়তন কমে যাওয়ায় বিতর্ক
ংস্কার করতে গিয়ে সাহেববাঁধের মাটি কেটে পাড়ে ফেলা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এর ফলে জাতীয় সরোবরের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এই জলাশয়ের আয়তন কমে যাচ্ছে বলে শহরের একাংশের অভিযোগ। জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহ-ও সম্প্রতি রাজ্য পরিবেশ দফতরের সচিবকে চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে তাঁর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। জেলাশাসক বলেন, “সাহেববাঁধে জলের আয়তন আগের থেকে ৬.৭ একর কমে গিয়েছে। জলাশয়টির আগের অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য পরিবেশ দফতরের সচিবকে অনুরোধ জানিয়েছি।”
পুরুলিয়া শহরের ফুসফুস বলে পরিচিত এই জলাশয় রক্ষা করা নিয়ে আগেও শহরের বিভিন্নমহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই বিশাল সরোবর যে শুধু শহরের সৌন্দর্য তা নয়। সারা বছর এই জলাশয় শহরবাসীর তৃষ্ণাও মেটায়। ২০০৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকার এই সরোবরকে জাতীয় সরোবরের স্বীকৃতি দেয়। এই বিশাল জলাশয় সংস্কারের জন্য ১২ কোটি টাকা বরাদ্দও হয়। মাস খানেক আগে সরোবরের গভীরতা বাড়ানোর জন্য মাটি তোলার কাজ শুরু হয়। সেই মাটি সরোবরের পাড়ে ফেলে রাখায় জল সরে গিয়ে জলাশয়ের আয়তন কমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। জেলাশাসকের চিঠিতেও তা প্রতিফলিত হয়েছে।
ছবি: সুজিত মাহাতো।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাহেববাঁধ সংস্কার করার জন্য কচুরিপানা সরিয়ে গভীরতা বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। এ ছাড়া সরোবরের পাড় পরিষ্কার রাখার জন্য এলাকায় শৌচালয় গড়ে তোলা হচ্ছে। সরোবরের জল দূষণমুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। সরোবরের পাশের ‘কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল ট্যাঙ্ক’ নামের পুকুরটিও ব্যবহারের উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। বর্তমানে এই সংস্কার কাজের দায়িত্বে রয়েছে মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টরেট। মাটি তুলে সাহেববাঁধের পশ্চিম ও উত্তরপাড়ে ফেলে রাখা হচ্ছে। তা নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। জেলাশাসক জানান, মিউনিসিপ্যাল ডাইরেক্টর সূত্রে জানতে পেরেছি পাড়ে ফেলা মাটিতে গাছ বসানো হবে। এর ফলে আশপাশের এলাকা থেকে জল ওই গাছের ফাঁক দিয়ে নেমে আসার সময় অনেকখানি পরিষ্কার হয়ে যাবে। তিনি বলেন, “সরোবরের জলাশয়ের আয়তন কমে যাক, তা চাই না। তাই বিকল্প উপায় জানার জন্য পরিবেশ দফতরের সচিবের পরামর্শ চেয়েছি।”
দূষণের হাত থেকে সাহেববাঁধ রক্ষা করতে গড়ে ওঠে ‘সাহেববাঁধ বাঁচাও কমিটি’। কমিটির মুখপাত্র আবু সুফিয়ান বলেন, “সরোবরটি সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ায় আমরা খুশি। কিন্তু মাটি কেটে পাড়ে ফেলায় জলাশয়ের আয়তন কমে যাচ্ছে। সরোবরের আয়তন কমতে দেওয়া যাবে না।” পুরুলিয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের বিভাসরঞ্জন দাসও প্রশ্ন তুলেছেন, “সরোবরের গভীরতা বাড়ানোর জন্য মাটি তুলে পাড়ের ধারে রাখতে গিয়ে জলাভূমির আয়তন কমানো হবে কেন? আমাদের বক্তব্য জলাভূমির আয়তন আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।” পুরুলিয়া পুরসভার পুরপ্রধান তথা সাহেববাঁধ সংস্কার কমিটির চেয়ারম্যান তারকেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সেই কমিটিই সংস্কার কাজের তত্ত্বাবধান করবে। আমরাও চাই না. সাহেববাঁধের জলাভূমির আয়তন কমে যাক।”
মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টরেটের নিবার্হী বাস্তুকার চন্দন মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “জলাশয়টির আয়তন কমে যাওয়ার সম্পর্কে আমার কাছে কোনও খবর নেই। তবে সংস্কারের কাজেয় বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার প্রস্তাব রয়েছে। সেই কমিটি গড়ার পরে তারাই সিদ্ধান্ত নেবে।” পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, “পুরুলিয়ার সাহেববাঁধ একটা ‘হেরিটেজ’। এটি জাতীয় সরোবর। এর জলাভূমির আয়তন কমে যাওয়ার ঘটনা সত্যি হলে তা খুবই উদ্বেগের। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার”।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.